সরকারি চাকরি হওয়ার যেমন কঠিন, চাকরি যাওয়াও ঠিক তেমনটি কঠিন- কর্তৃপক্ষ চাইলেই চাকরি খেয়ে দিতে পারে না- বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস অনুসারে ব্যবস্থা নিতে পারে–Govt Service Rules about Absence
কোন বিধিবলে ৫ বছর অনুপস্থি থাকলেও চাকরি যায় না? বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস পার্ট ১ এর বিধি ৩৪ মোতাবেক ঘটনার বিশেষ অবস্থা বিবেচনাপূর্বক সরকার অন্যরূপ কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করিলে, বাংলাদেশে বৈদেশিক চাকরিতে কর্মরত থাকার ক্ষেত্রে ব্যতীত, অন্যত্র, ছুটিসহ অথবা ব্যতীত একাধিক্রমে পাঁচ বৎসর কর্ম হইতে অনুপস্থিত থাকার পর একজন সরকারী কর্মচারীর চাকরির অবসান হইবে। কোন কর্মচারী একাধিক্রমে পাঁচ বৎসর কর্ম হইতে অনুপস্থিত থাকার পর সে চাকরি হারাইবে। এই পাঁচ বৎসর সময়ের মধ্যে অনুমোদিত ছুটি থাকিলেও সে চাকরি হারাইবে। প্রথম অনুপস্থিতির তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর পূর্বে অথবা পূর্ণ হওয়ার দিনেও যদি কর্মে যোগদান করে, তাহা হইলেও এই বিধি প্রযোজ্য হইবে না। অর্থাৎ তাহার চাকরি বহাল থাকিবে।
কর্মে অনুপস্থিত থাকলে বিভাগীয় মামলা হয় কখন? যদি আপনি কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে কর্মে অনুপস্থিত থাকেন তবে দু এক মাসের মধ্যে চাকরি চলে যাবে ব্যাপারটি এমন নয়। অবিরতভাবে ০৫(পাঁচ) বছরের বেশি সময় বিনা অনুমতিতে কিংবা অনুমতিক্রমে কর্মে অনুপস্থিত থাকলে চাকরি বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। তবে ৬০দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকলে পলাতক ঘোষনা করে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়ে থাকে। বিভাগীয় মামলা চলতে থাকবে এবং আপনার পরিবার যদি অফিসে গিয়ে ক্লেম না করে যে আপনাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না ততক্ষণ পর্যন্ত পলাতক বা হারিয়ে গিয়েছেন ঘোষনা করে পেনশন প্রদান করা হবে না। আপনি ৫ বছরের আগে যদি ফেরত আসতে পারেন এবং যথাপযুক্ত কারণ দেখাতে পারেন তবে চাকরি পুর্নবহাল হবে।
ডিজারশনের দায়ে বরখাস্ত হলে কি পেনশন পাওয়া যাবে? না। বিনা অনুমতিতে টানা ৬০ দিন বা তার বেশি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তিনি ডিজারশনের দায়ে অভিযুক্ত হবেন, এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে চাকুরি হতে বরখাস্ত সহ যে কোন দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। বরখাস্ত হলে যতদিন চাকরি করছি এর টাকা (জিপিএফ, গ্র্যাচুইিটি) পাওয়া যাবে না বরং শুধু জিপিএফ/ পিএফ এর জমাকৃত টাকা পাবেন আর কিছুই পাবেন না। বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি হলে বা শাস্তি যথাযোগ্য নয় প্রমানিত হলে আপনি চাকরিতে বহাল হবে এবং পেনশনজনিত সমস্ত সুযোগ সুবিধা চাকরিকালের জন্য প্রাপ্য হইবেন।
সরকারি চাকরিতে অনুপস্থিত থাকলে কি হয়?/ চাইলেই যদি অফিসে অনুস্থিত থাকা যায় না বরং যথাপযুক্ত কারণ থাকতে হয় । মন চাইলে অফিসে না গেলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে
বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকলে কি বেতন পাওয়া যায়? না। সরকারি উপস্থিতি বিধিমালা ২০১৯ মোতাবেক ছুটি জমা থাকলেও বিনানুমতিতে অনুপস্থিত থাকলে মূল বেতন কর্তন করা যায়। এজন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে জবাব ও শুনানি নেয়ার বিধান রয়েছে।
Caption: Notice for Proper Reason
সরকারি চাকরিতে অনুপস্থিত ২০২৪ । কর্মস্থলে না গেলেও কি বেতন পাওয়া যায়?
- সরকারী কর্মচারী (নিয়মিত উপস্থিতি) বিধিমালা ২০১৯ এর অনুচ্ছেদ ৩। বিনা অনুমতিতে কর্মে অনুপস্থিতি।- (১) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বনুমতি ব্যতিরেকে কোনো সরকারি কর্মচারী নিজ কর্মে অনুপস্থিত থাকিতে পারিবেন না।
- (২) উপবিধি (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করিয়া অনুপস্থিত কর্মচারীর প্রতিদিনের অনুপস্থিতির জন্য ১ (এক) দিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কর্তন করিতে পারিবে।
- অনুচ্ছেদ ৪। বিনা অনুমতিতে অফিস ত্যাগ।- (১) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কোনো সরকারি কর্মচারী অফিস চলাকালীন অফিস ত্যাগ করিতে পারিবেন না; তবে শর্ত থাকে যে, জরুরি প্রয়োজনে কেনো সহকর্মীকে অবগতকরণপূর্বক অফিস ত্যাগ করা যাইবে এবং এই বিধিমালার তফসিল অনুযায়ী সংরক্ষিত রেজিস্টারে এইরূপ অফিস ত্যাগের কারণ, সময়, তারিখ, ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।
- (২) উপবিধি (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করিয়া এইরূপ প্রতি ক্ষেত্রের জন্য উক্ত কর্মচারীর ১ (এক) দিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কর্তন করিতে পারিবে।
সরকারি অফিসে দেরিতে গেলে তো কোন ঝামেলা হয় না তাই না?
হয়। আপনি দেরিতে গেলেও সরকারি অফিসে ব্যবস্থা নেয়া হয়। সরকারি কর্মচারী নিয়মিত উপস্থিতি বিধিমালা ২০১৯ এর অনুচ্ছেদ ৫। বিলম্বে উপস্থিতি। – (১) কোনো সরকারি কর্মচারী যুক্তি সংগত কারণ ব্যতীত বিলম্বে অফিসে উপস্থিত হইতে পারিবেন না। (২) উপবিধি (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসংগত সুযোগ প্রদান করিয়া প্রতি ২ (দুই) দিনের বিলম্বে উপস্থিতির জন্য উক্ত কর্মচারীর ১ (এক) দিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কর্তন করিতে পারিবে। ৬। অপরাধের পুনরাবৃত্তির জন্য দন্ড। –কোনো সরকারি কর্মচারী ৩০ (ত্রিশ) দিরেন মধ্যে বিধি ৩, ৪ ও ৫ এ বর্ণিত অপরাধ একাধিকবার করিলে, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ উক্ত কর্মচারীর সর্বোচ্চ ০৭ (সাত) দিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কর্তন করিতে পারিবে।
কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত কর্মস্থলে গরহাজির অসদাচরণের সামিল। অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে চাকরি থেকে বরখাস্ত/অপসারণ করার সুযোগ রয়েছে। বিএসআর অনুযায়ী কোন সরকারী কর্মচারী একটানা ০৫ বছর বা তার অধিক সময়কাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত কর্মস্থলে গরহাজির থাকেন তাহলে সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাকরি বরখাস্ত বলে গণ্য হবে। ৬০ দিন গরহাজির থাকলে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।