সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮( ২০১৮ সনের ৬১ নং আইন ) জারির তারিখ: ১৪ নভেম্বর, ২০১৮ । জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা মোকাবেলা এবং স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি হ্রাসকরণের লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন। যেহেতু জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা মোকাবেলা এবং স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি হ্রাসকরণের লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

১। (১) এই আইন সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-

(১) ‘‘অধিদপ্তর’’ অর্থ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর;

(২) ‘‘কমিটি’’ অর্থ ধারা ৬ এর অধীন গঠিত উপদেষ্টা কমিটি;

(৩) ‘‘ক্ষমতাপ্রাপ্তকর্মচারী’’ অর্থ ধারা ৩০ এর অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী;

(৪) ‘‘তপশিল’’ অর্থ এই আইনের তপশিল;

(৫) ‘‘বাহক’’ অর্থ এক প্রাণী হইতে অন্য প্রাণীর দেহে জীবাণু বহনকারি আণুবীক্ষণিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী;

(৬) ‘‘বিধি’’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(৭) ‘‘মহাপরিচালক’’ অর্থ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক;

(৮) ‘‘সংক্রামকরোগ’’ অর্থ ধারা ৪ এ উল্লিখিত কোনো সংক্রামক রোগ।
আইনের প্রাধান্য৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে।

সংক্রামক রোগ

৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সংক্রামক রোগ অর্থে নিম্নবর্ণিত রোগসমূহ অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা:-

(ক) ম্যালেরিয়া;

(খ) কালাজ্বর;

(গ) ফাইলেরিয়াসিস;

(ঘ) ডেঙ্গু;

(ঙ) ইনফ্লুয়েঞ্জা;

(চ) এভিয়ান ফ্লু;

(ছ) নিপাহ;

(জ) অ্যানথ্রাক্স;

(ঝ) মারস-কভ (MERS-CoV);

(ঞ) জলাতংক;

(ট) জাপানিস এনকেফালাইটিস;

(ঠ) ডায়রিয়া;

(ড) যক্ষা;

(ঢ) শ্বাসনালির সংক্রমণ;

(ণ) এইচআইভি;

(ত) ভাইরাল হেপাটাইটিস;

(থ) টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগসমূহ;

(দ) টাইফয়েড;

(ধ) খাদ্যে বিষক্রিয়া;

(ন) মেনিনজাইটিস;

(প) ইবোলা;

(ফ) জিকা;

(ব) চিকুনগুণিয়া; এবং

(ভ) সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ঘোষিত কোনো নবোদ্ভূত বা পুনরুদ্ভূত (Emerging or Reemerging) রোগসমূহ।


অধিদপ্তরের দায়িত্ব ও কার্যাবলি

৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারের সাধারণ বা বিশেষ ক্ষমতার আওতায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে অধিদপ্তরের দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল এবং ইহার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিস্তার হইতে জনগণকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে কর্মকৌশল প্রণয়নসহ সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ;

(খ) দফা (ক) তে উল্লিখিত কর্মকৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি এবং দেশিয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তা গ্রহণ;

(গ) জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা মোকাবেলা এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকি হ্রাসকরণ, সচেতনতা বৃদ্ধি, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ;

(ঘ) সংক্রমিত এলাকাকে সংক্রমণমুক্ত এলাকা হইতে পৃথককরণ, সংক্রমণমুক্ত এলাকায় উক্ত রোগের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ এবং আক্রান্ত এলাকায় পুনঃআবির্ভাব প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান;

(ঙ) সংক্রামক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিক ঔষধের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার এবং অপব্যবহার রোধকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;

(চ) বাসগৃহ, অন্যান্য গৃহ, ক্লিনিক, হাসপাতাল এবং রোগ নির্ণয় কেন্দ্র বা কোনো স্থাপনায় সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সেবা প্রদান করিলে বা অনুরূপ রোগের সংক্রমণের আধার হিসাবে বিবেচিত হইলে উক্ত স্থান বা স্থাপনা পরিদর্শন ও তদনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;

(ছ) সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষা এবং, প্রয়োজনে, এন্টিবায়োটিক, প্রতিষেধক টিকা বা ঔষধ প্রয়োগ;

(জ) সংক্রামক রোগের তথ্য রহিয়াছে এইরূপ কোনো ব্যক্তিকে উক্ত রোগের বিষয়ে অধিদপ্তরের নিকট তথ্য প্রেরণের নির্দেশনা প্রদান;

(ঝ) ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ দমন এবং ম্যালেরিয়া বা অন্যান্য বাহক বাহিত রোগ (Vector Borne Disease) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে-

(অ) বাসগৃহ, অন্যান্য গৃহ, মশারি, পর্দা, বিছানার চাদর ও অন্যান্য ব্যবহারযোগ্য বস্ত্রাদিতে কীটনাশক প্রয়োগ;

(আ) কীটনাশকের নিরাপদ মাত্রা নির্ধারণ;

(ই) তথ্য সংগ্রহের জন্য কোনো প্রাঙ্গণে প্রবেশ;

(ঈ) প্রজননস্থল ব্যবস্থাপনা;

(উ) সংক্রামক রোগের বাহক নিয়ন্ত্রণে কীটনাশক প্রয়োগ করা হইয়া থাকিলে উহা পরবর্তী ৫ (পাঁচ) মাসের মধ্যে ধৌত, চুনকাম বা প্লাস্টার করা হইতে বিরত থাকা এবং উহার উপরিভাগে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইতে বিরত রাখা;

(ঞ) দূষণ বা ভেজাল শনাক্তকরণের উদ্দেশ্যে খাদ্য, পানীয় বা উহার কাঁচামাল প্রস্তুত, সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বিতরণকালে উহা পরিদর্শন এবং পরীক্ষাকরণ;

(ট) সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হইয়াছেন এইরূপ কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট হাসপাতাল, অস্থায়ী হাসপাতাল, স্থাপনা বা গৃহে অন্তরীণ (Quarantine)রাখা বা পৃথককরণ (Isolation);

(ঠ) জীবাণুঘটিত দূষণ প্রতিরোধ ও রোগ সংক্রমণের উৎস অপসারণ বা ধ্বংসকরণ;

(ড) ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য সংক্রামক রোগের বৃদ্ধি বা বিস্তার ঘটাইতে পারে এইরূপ প্রকৌশল, কৃষি বা শিল্প প্রকল্প নিষিদ্ধকরণ;

(ঢ) কীটনাশকযুক্ত লং লাস্টিং ইনসেকটিসাইডাল নেট (LLIN) এবং ইনসেকটিসাইডাল নেট সিল বা পর্দার কার্যকারিতা ব্যাহত করিতে পারে এইরূপ দ্রব্যাদির বিক্রয় নিষিদ্ধকরণ;

(ণ) সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে কোনো বাজার, গণজমায়েত, স্টেশন, বিমানবন্দর, নৌ ও স্থলবন্দরগুলি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করিতে পারিবে;

(ত) সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে উড়োজাহাজ, জাহাজ, জলযান, বাস, ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহন দেশে আগমন, নির্গমন বা দেশের অভ্যন্তরে এক স্থান হইতে অন্য স্থানে চলাচল নিষিদ্ধকরণ;

(থ) সরকার কর্তৃক, সময় সময়, অর্পিত দায়িত্ব পালনসহ অন্যান্য কার্য-সম্পাদন।

(২) এই আইনের অধীন দায়িত্ব পালন এবং কার্য-সম্পাদনের জন্য মহাপরিচালক দায়ী থাকিবেন।


উপদেষ্টা কমিটি

৬। (১) নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হইবে,-

(ক) দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী বা উপ-মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, যিনি ইহার চেয়ারম্যানও হইবেন;

(খ) সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ;

(গ) সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ;

(ঘ) কৃষি মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(ঙ) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(চ) পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(ছ) লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি;

(জ) পরিচালক, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর;

(ঝ) পরিচালক, রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর;

(ঞ) মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর;

(ট) সরকার কর্তৃক মনোনীত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ২ (দুই) জন ব্যক্তি;

(ঠ) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অন্যূন যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, যিনি ইহার সদস্যসচিবও হইবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, প্রয়োজনে, সংক্রামক রোগ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোনো ব্যক্তিকে উপদেষ্টা কমিটিতে কো-অপ্ট করিতে পারিবে।

(৩) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ কমিটিকে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবে।


কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলি

৭। কমিটির দায়িত্ব ও কার্যাবলি হইবে নিম্নরূপ, যথা:-

(ক) সংক্রামক রোগের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিস্তার হইতে জনগণকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে কর্মকৌশল প্রণয়নে অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান;

(খ) সংক্রামক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ঔষধের ব্যবহার পর্যালোচনা;

(গ) সংক্রামক রোগের বৃদ্ধি বা বিস্তার ঘটাইতে পারে এইরূপ প্রকৌশল, কৃষি বা শিল্প প্রকল্প নিষিদ্ধকরণ বা করণীয় বিষয়ে মহাপরিচালককে নির্দেশনা প্রদান;

(ঘ) আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মহাপরিচালককে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান;

(ঙ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোনো কার্য।
কমিটির সভা৮। (১) এই ধারার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, কমিটি উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) কমিটি প্রত্যেক বৎসর অন্যূন ২ (দুই) টি সভায় মিলিত হইবে এবং সভার তারিখ, সময় ও স্থান চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।

(৩) কমিটির সদস্য-সচিব, চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে, লিখিত নোটিশ দ্বারা, বোর্ডের সভা আহ্বান করিবেন।

(৪) চেয়ারম্যান বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন, তবে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে তদ্কর্তৃক মনোনীত কোনো সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করিতে পারিবেন।

(৫) বোর্ডের সভার কোরামের জন্য উহার মোট সদস্য সংখ্যার অন্যূন অর্ধেক সদস্যের উপস্থিতির প্রয়োজন হইবে, তবে মূলতবি সভার ক্ষেত্রে কোনো কোরামের প্রয়োজন হইবে না।

(৬) বোর্ডের সভায় উপস্থিত প্রত্যেক সদস্যের একটি করিয়া ভোট থাকিবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটের ভিত্তিতে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে, তবে প্রদত্ত ভোটের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতি নির্ণায়ক ভোট প্রদান করিতে পারিবেন।

(৭) কেবল কোনো সদস্য পদে শূন্যতা বা কমিটি গঠনে ত্রুটি থাকিবার কারণে কমিটির কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না এবং তদ্সম্পর্কে কোনো প্রশ্নও উত্থাপন করা যাইবে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি-বিধানের অনুসরণ

৯। সংক্রামক রোগের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিস্তার হইতে জনগণকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে উক্ত রোগসমূহ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল, উক্ত রোগের প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক সতর্কতা জারি ও পারস্পরিক সহায়তার সক্ষমতা বৃদ্ধি, সুনির্দিষ্ট ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং এতদ্সংক্রান্ত শিক্ষা বিস্তার, রোগের উন্নতি পর্যালোচনা, অধিকার সংরক্ষণসহ অন্যান্য পদ্ধতিগত ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization)কর্তৃক, প্রকাশিত এবং তপশিলে উল্লিখিত International Health Regulations, প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ, সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রয়োগযোগ্য হইবে।


সংক্রামক রোগের তথ্য প্রদান

১০। (১) যদি কোনো চিকিৎসক সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির চিকিৎসার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন এবং উক্ত রোগে আক্রান্ত হইয়া মৃত্যুবরণকারি ব্যক্তি, কোনো বাসগৃহ, প্রাঙ্গণ বা এলাকায় সংক্রামক রোগের অস্তিত্ব সম্পর্কে অবহিত হন, তাহা হইলে তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনকে অবহিত করিবেন।

(২) যদি কোনো বোর্ডিং, আবাসিক হোটেল বা অস্থায়ী বাসস্থানের মালিক বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির যুক্তিসঙ্গত কারণে ধারণা হয় যে, উক্ত স্থানে বসবাসকারি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হইয়াছেন, তাহা হইলে তিনি অনতিবিলম্বে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জন এবং জেলা প্রশাসককে অবহিত করিবেন।

(৩) কোনো সিভিল সার্জন সংক্রামক রোগ বা উক্ত রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে অবহিত হইলে তিনি বিষয়টি অনতিবিলম্বে মহাপরিচালককে অবহিত করিবেন।


সংক্রমিত এলাকা ঘোষণা, প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, ইত্যাদি

১১। (১) মহাপরিচালক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, আদেশ দ্বারা, নিম্নবর্ণিত কোনো এলাকাকে সংক্রমিত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবেন, যথা:-

(ক) বাংলাদেশের স্থানীয় কোনো এলাকা বা অঞ্চল যাহা কোনো সংক্রামক ব্যাধি দ্বারা আক্রান্ত হইয়াছে বা আক্রান্ত হইয়া থাকিতে পারে মর্মে যুক্তিসঙ্গতভাবে সন্দেহ হইতেছে;

(খ) সংক্রমনের বিস্তার নির্মূল বা সীমিত করিবার জন্য সংক্রমিত ব্যক্তি কর্তৃক ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, গৃহ, আঙ্গিনা, বাসস্থান বা যানবাহন।

(২) মহাপরিচালক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সংক্রামক রোগ সীমিত বা নির্মূল করা সম্ভব নহে, তাহা হইলে তিনি সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে বা সংক্রমিত স্থানে অন্য কোনো ব্যক্তির প্রবেশ নিষিদ্ধ, সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবেন।

(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা

১২। (১) যদি ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, কোনো ব্যক্তি সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হইয়াছেন বা তাহার দেহে সংক্রামক জীবাণুর উপস্থিতি রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি উক্ত ব্যক্তির নিকট হইতে নমুনা সংগ্রহ এবং উহা পরীক্ষা করিতে পারিবেন।

(২) ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী উপ-ধারা (১) এর অধীন সংগৃহীত নমুনার প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করাইবেন।

(৩) প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষায় উক্ত নমুনাতে সংক্রামক রোগ বা জীবাণুর উপস্থিতি নিশ্চিত হইলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী করণীয় বিষয়ে পরামর্শসহ বিষয়টি নিজ অধিক্ষেত্রভুক্ত সিভিল সার্জনকে অবহিত করিবেন এবং উক্ত বিষয়ে তিনি সিভিল সার্জনের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করিবেন।


রোগাক্রান্ত ব্যক্তি কর্তৃক ব্যবহৃত দ্রব্যাদি

১৩। যদি কোনো ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ব্যবহৃত দ্রব্যাদিতে উক্তরূপ রোগের জীবাণু রহিয়াছে তাহা হইলে তিনি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উক্তরূপ দ্রব্যাদি বিশুদ্ধ বা ধ্বংস করিতে পারিবেন।


রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে সাময়িক বিচ্ছিন্নকরণ

১৪। যদি ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, কোনো সংক্রমিত ব্যক্তিকে বিচ্ছিন্ন করা না হইলে তাহার মাধ্যমে অন্য কোনো ব্যক্তি সংক্রমিত হইতে পারেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তিকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সাময়িকভাবে অন্য কোনো স্থানে স্থানান্তর বা জনবিচ্ছিন্ন করা যাইবে।


পরিদর্শন

১৫। সংক্রামক রোগের বিস্তার প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে, ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর যদি এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে, কোনো ব্যক্তির বাসগৃহ, অন্য কোনো গৃহ, আঙ্গিনা বা ব্যবহৃত দ্রব্যাদিতে সংক্রামক রোগের উপস্থিতি বা জীবাণু রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উক্ত স্থান পরিদর্শন করিতে পারিবেন।


সংক্রমিত স্থান বা স্থাপনা জীবাণু মুক্তকরণ বা বন্ধকরণ, ইত্যাদি

১৬। (১) কোনো স্থান বা স্থাপনায় সংক্রামক রোগের জীবাণুর উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হইবার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী নিম্নরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন,-

(ক) সন্দেহজনক স্থান, স্থাপনা বা প্রাঙ্গণ পরীক্ষা;

(খ) সন্দেহজনক স্থান, স্থাপনা বা প্রাঙ্গণ জীবাণুমুক্তকরণের নির্দেশ প্রদান;

(গ) সন্দেহজনক স্থান, স্থাপনা বা প্রাঙ্গণ জীবাণুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত স্থানে জনসাধারণের প্রবেশ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ বা সীমিতকরণ;

(ঘ) বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোনো ব্যবস্থা।

(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, যে কোনো সন্দেহজনক স্থান, স্থাপনা বা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করিতে পারিবেন।

স্থাপনা ধ্বংসকরণ

১৭। (১) যদি ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নিকট প্রতীয়মান হয় যে, জীবাণুযুক্ত কোনো স্থাপনা ধারা ১৬ এর অধীন জীবাণুমুক্তকরণ সম্ভব নহে, তাহা হইলে তিনি উহা সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনকে অবহিত করিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন অবহিত হইবার পর, সিভিল সার্জন, প্রয়োজনে, উক্ত স্থাপনা ধ্বংস করিবার জন্য উহার মালিককে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন কোনো নির্দেশ প্রদান করা হইলে সিভিল সার্জন অনতিবিলম্বে উহা মহাপরিচালককে অবহিত করিবেন।


যানবাহন জীবাণুমুক্ত করণের আদেশ প্রদানের ক্ষমতা

১৮। ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নিকট যদি এইরূপ বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকে যে, কোনো যানবাহন সংক্রামক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হইয়াছে বা উহাতে সংক্রামক জীবাণুর উপস্থিতি রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি উক্ত যানবাহন, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, জীবাণুমুক্তকরণের জন্য উক্ত গাড়ীর মালিক বা স্বত্বাধিকারি বা তত্ত্বাবধায়ককে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।


জীবাণুযুক্ত যানবাহন, দ্রব্যাদি জব্দ, ইত্যাদি

১৯। (১) কোনো যানবাহন, ব্যবহার্য দ্রব্যাদি বা পশুপাখি সংক্রামক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হইলে বা আক্রান্ত হইয়াছে বলিয়া যুক্তিসঙ্গতভাবে ধারণা হইলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী উহা জব্দ করিতে পারিবেন।

(২) ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী উপ-ধারা (১) এর অধীন জব্দকৃত যানবাহন, ব্যবহার্য দ্রব্যাদি বা পশুপাখি জীবাণুমুক্তকরণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন জব্দকৃত যানবাহন, ব্যবহার্য দ্রব্যাদি বা পশুপাখি জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব না হইলে উহা সিভিল সার্জনকে অবহিত করিতে হইবে এবং উক্তরূপে অবহিত হইবার পর সিভিল সার্জন বিষয়টি নিয়ে মহাপরিচালকের সহিত পরামর্শক্রমে তদনুযায়ী উহা ধ্বংস করিবার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন।


মৃতদেহের সৎকার

২০। (১) যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক রোগে মৃত্যুবরণ করেন বা করিয়াছেন বলিয়া সন্দেহ হয় তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির মৃতদেহ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নির্দেশনা মোতাবেক দাফন বা সৎকার করিতে হইবে।

(২) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়

২১। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সংক্রামক রোগের জীবাণু বহন করিতে পারে এইরূপ খাদ্য, পণ্য, পশুপাখি বা অন্য কোনো পদার্থ আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থার সহিত সমন্বয় সাধন করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, প্রয়োজনে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় কমিটি গঠন করিতে পারিবে।
আমদানি ও রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা

২২। (১) Imports and Exports (Control) Act, 1950 (Act No. XXXIX of 1950)বা তদধীন, সময় সময়, সরকার কর্তৃক জারিকৃত আমদানি ও রপ্তানি নীতি বা আদেশে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি খাদ্য, ভোগ্যপণ্য বা নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি আমদানি বা রপ্তানি করিতে পারিবেন না, যদি-

(ক) উক্ত পণ্যে কোনো মানুষের অবশেষ, মানুষের টিস্যু বা অংশবিশেষ, সংক্রামক রোগের জীবাণু ,বা

(খ) এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি অনুযায়ী কোনো ক্ষতিকর জীব বা পদার্থ বা অংশ বা উপাদান, বিদ্যমান থাকে।

(২) Imports and Exports (Control) Act, 1950, বাংলাদেশ পশু ও পশুজাত পণ্য সঙ্গনিরোধ আইন, ২০০৫ (২০০৫ সনের ৬ নং আইন) এবং উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ আইন, ২০১১ (২০১১ সনের ৫ নং আইন)-এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি ফুল, উদ্ভিদ এবং পশুপাখি আমদানি বা রপ্তানি করিতে পারিবেন না, যদি-

(ক) উক্ত পণ্যে কোনো সংক্রামক রোগের জীবাণু ,বা

(খ) এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি অনুযায়ী কোনো ক্ষতিকর জীব, পদার্থ, অংশ বা উপাদান, বিদ্যমান থাকে।


সরকারি ব্যয়ের অর্থফেরত গ্রহণ

২৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, কোনো যানবাহন, স্থান বা স্থাপনা জীবাণুমুক্তকরণের জন্য ব্যয়িত সরকারি অর্থ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ফেরত গ্রহণ করিতে পারিবে।


সংক্রামক রোগের বিস্তার এবং তথ্যগোপনের অপরাধ ও দণ্ড

২৪। (১) যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক জীবাণুর বিস্তার ঘটান বা বিস্তার ঘটিতে সহায়তা করেন, বা জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও অপর কোনো ব্যক্তি সংক্রমিত ব্যক্তি বা স্থাপনার সংস্পর্শে আসিবার সময় সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি তাহার নিকট গোপন করেন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।


দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও নির্দেশপালনে অসম্মতি জ্ঞাপনের অপরাধ ও দণ্ড

২৫। (১) যদি কোনো ব্যক্তি-

(ক) মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তাহার উপর অর্পিত কোনো দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন, এবং

(খ) সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কোনো নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।


মিথ্যা বা ভুলতথ্য প্রদানের অপরাধ ও দণ্ড

২৬। (১) যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রদান করেন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ২ (দুই) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।


ফৌজদারী কার্যবিধির প্রয়োগ

২৭। এই আইনের অধীন সংঘটিত কোনো অপরাধের অভিযোগ দায়ের, তদন্ত, বিচার ও আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।


অপরাধের অ-আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা ও আপোষযোগ্যতা

২৮। এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য (Non-cognizable), জামিনযোগ্য (Bailable)এবং আপোষযোগ্য (Compoundable)হইবে।


আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গ্রহণ

২৯। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, প্রয়োজনে, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গ্রহণ করিতে পারিবে।


ক্ষমতা অর্পণ

৩০। মহাপরিচালক, প্রয়োজনে, লিখিত সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, উক্ত আদেশে বর্ণিত শর্ত সাপেক্ষে, যদি থাকে, এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি দ্বারা, তাহার উপর অর্পিত কোনো ক্ষমতা অধিদপ্তরের যে কোনো কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবেন।


অসুবিধা দূরীকরণ

৩১। এই আইনের কোনো বিধানের অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা দেখা দিলে, সরকার, এই আইনের অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে, সরকারি গেজেটে প্রকাশিত আদেশ দ্বারা, উক্ত বিধানের স্পষ্টীকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক উক্ত বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।


বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৩২। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।


তপশিল সংশোধনের ক্ষমতা

৩৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তপসিলসংশোধন করিতে পারিবে।


রহিতকরণ ও হেফাজত

৩৪। (১) The Epidemic Diseases Act, 1897 (২) The Public Health (Emergency Provisions) Ordinance, 1944 (৩) The Bangladesh Malaria Eradication Board (Repeal) Ordinance, 1977 এবং (৪) The Prevention of Malaria (Special Provisions) Ordinance, 1978 অতঃপর রহিতকৃত অধ্যাদেশসমূহ বলিয়া উল্লিখিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রহিতকরণ সত্ত্বেও-

(ক) রহিতকৃত অধ্যাদেশসমূহের অধীন কৃত কোনো কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;

(খ) রহিতকৃত অধ্যাদেশসমূহের অধীন জারিকৃত বিজ্ঞপ্তি বা আদেশ বা সিদ্ধান্ত বা নির্ধারিত কার্যপদ্ধতি, এই আইনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে এবং এই আইন দ্বারা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত, এমনভাবে বলবৎ থাকিবে যেন উহা এই আইনের অধীন জারিকৃত ও নির্ধারিত হইয়াছে; এবং

(গ) এই আইন প্রবর্তনের তারিখে রহিতকৃত অধ্যাদেশসমূহর অধীন কোনো কার্য বা ব্যবস্থা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে উহা এমনভাবে নিষ্পন্ন করিতে হইবে যেন উক্ত অ অধ্যাদেশসমূহ রহিত হয় নাই।


ইংরেজিতে অনূদিত পাঠপ্রকাশ

৩৫। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের মূল বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text)প্রকাশ করিতে পারিবে।

(২) বাংলা পাঠে ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

 

সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ : ডাউনলোড

admin

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

admin has 2985 posts and counting. See all posts by admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *