সরকারি নিম্নগ্রেডের কর্মচারীদের তাদের বর্তমান বেতন ভাতাদি দিয়ে সংসার চালাতে পারছে না-মাসের ২০ তারিখের মধ্যেই তাদের মাসিক বেতনের টাকা শেষ হয়ে যায়- ধার কর্জ করে সংসার চালিয়ে দেনা হয়ে পড়ছে– অনেকেই বলছে এ সময় মানববন্ধন বা ধর্মঘট ঠিক নয়-এসব নিয়েই আজ আলোচনা করবো- সরকারি কর্মচারীদের ধর্মঘট ২০২৪
মানব বন্ধনে যেতে চাইলে কোথায় যেতে হবে? – সরকারি কর্মচারী হিসেবে আপনারও কিছু দায়িত্ব রয়েছে তাই শুক্রবার ৩০ আগস্ট ২০২৪ আপনিও অবস্থান ধর্মঘটে উপিস্থত থাকার চেষ্ট করুন এমন অনুরোধ ফেসবুক পোষ্টে জানিয়েছেন জনাব মাহমুদুল হাসান। তিনি পোষ্টে বলেন যে, বৈষম্যমুক্ত পে স্কেলের দাবিতে ৩০ তারিখের অবস্থান ধর্মঘটে সকলে উপস্থিত হোন। এ লড়াই সংকটের এ লড়াই অস্তিত্বের, এ লড়াই বেচেঁ থাকার। তাই কেউ ঘরে বসে থাকবেন না দলে দলে শাহবাগ জাতীয় যাদুঘরের সামনে উপস্থিত হোন। সৈরাচার সরকারের আমলেও বহুবার এমন ধর্মঘট ও মানবন্ধন শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে তাতে সরকার বা জনগণের কোন ক্ষতি সাধিত হয়নি। পে-কমিশন গঠন পূর্বক বৈষম্য মুক্ত ৯ম পে স্কেল ঘোষনার মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসনসহ বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারন ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে, পে-কমিশনে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারি প্রতিনিধি রাখতে হবে । অন্য কেউ আসুক না আসুক আপনি এসেছেন তো?
এ সময় কি মানববন্ধন ও ধর্মঘট করা উচিৎ? ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকুরিজীবী ফোরামের সদস্যগণ দুটি ভাগে বিভক্ত হচ্ছেন কেউ বলছেন এ সময় ধর্মঘট করা ঠিক হবে না আবার কেউ বলছেন ধর্মঘট পালন করবেন। গ্রুপের কমেন্ট সেকশনে গেলে দেখা যায় বিজ্ঞদের কেউ ধর্মঘট না করার পরামর্শ দিয়েছেন। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হওয়ার পরই বিভিন্ন মহল রাস্তায় আন্দোলনে নেমে যাচ্ছে এবং অবরোধ ও জানমালের ক্ষতি সৃষ্টি করে একটি বিশৃংখলা তৈরির চেষ্টা করছেন এতে সরকার কিছুটা বিব্রত হচ্ছে। সৈরাচার সরকার হটানোর পর এ সরকারকে সবাই সময় দিয়ে সহযোগিতা করতে চাচ্ছেন। ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সরকারি কর্মচারীদের বৈষম্য নিরসনে আলোচনার আভাস দিয়েছেন উপদেষ্টাগণ। এমন পরিস্থিতিতে ধর্মঘট পালন ঠিক হবেন কিনা অনেকেই দ্বিধাদন্ডে আছেন। ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকুরিজীবী ফোরামটি শুধু নতুন সরকার নয় বরং বৈরাচার সরকারের সময়ও নিয়মিত মানববন্ধন ও ধর্মঘট পালন করেছেন সুতরাং এটি নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ধর্মঘট পালিত হচ্ছে তাই দ্বিধা বা দন্ডে না থেকে আপনিও আগামী ধর্মঘটে অংশ নিন।
সরকারি কর্মচারীদের বেতন কি বৃদ্ধি করা উচিৎ? অবশ্যই। সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করা উচিত কিনা, এটি একটি জটিল প্রশ্ন কিন্তু উত্তর খুবই সহজ। বর্তমান বেতন কর্মচারীদের জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে না। বেসরকারি খাত এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বেতনের সাথে তুলনা করলেই বুঝা যায়। বেতন বৃদ্ধির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে, যেমন মূল্যস্ফীতি এবং সরকারের ঋণের পড়বে কিন্তু কর্মচারীগণ কোনভাবেই আর চলতে পারছে না।
সরকারি কর্মচারীদের বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল ঘোষণাসহ ৭ দফা দাবী / দাবী আদায়ে আন্দোলনে অংশগ্রহন আপনারও দায়িত্ব তাই নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৩০ আগস্ট আপনি হাজির হউন
পে-স্কেল না হওয়ায় ইনক্রিমেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে অনেকেরই। বিনা বর্ধিত বেতনে চাকুরি করতে হচ্ছে তাদের। এখানে এটি ভাবার কিছু নেই যে, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে তারা কোথায় ছিল? শেখ হাসিনা সরকারের আমলেও আমরা আন্দোলন/ মানবন্ধন/ধর্মঘট পালন করে আসছি। তারা এ বিষয়টি উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
Caption: info source
সরকারি কর্মচারীদের ৬ দফা দাবি ২০২৪ । কি কি দাবী করছে নিম্নগ্রেডের কর্মচারীগণ?
- পে-কমিশন গঠন পূর্বক বৈষম্য মুক্ত ৯ম পে স্কেল ঘোষনার মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসনসহ বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারন ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে, পে-কমিশনে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারি প্রতিনিধি রাখতে হবে ।
- যে সকল কর্মচারি মূল বেতনের শেষ ধাপে পৌছে গেছে তাহাদের বাষরিক বেতন বৃদ্ধি নিয়মিত করতে হবে।
- টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড, বেতন জ্যৈষ্ঠতা পূর্ণবহাল, ব্লক পোষ্ট নিয়মিতকরণ সহ সকল পদে পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।
- বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ ও ১১-২০ গ্রেডের চাকুরিজীবীদের রেশন ব্যবস্থা প্রবর্তন অথবা ন্যায্য মূল্যে সরকারি ভাবে পন্য সরবরাহ করতে হবে।
- সকল সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর, অধিদপ্তরে কাজের ধরন অনুযায়ি পদনাম ও গ্রেড পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।
- সকল স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত কর্মচারীদের গ্রাচ্যুয়িটির পরিবর্তে পেনশন প্রবর্তন সহ বিদ্যমান গ্রাচ্যুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচ্যুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে ।
১৯৮৫ সালের পে স্কেলে কি ছিল?
সরকারি কর্মচারীদের গ্রেড-১ এবং গ্রেড-২-এর বেতন যথাক্রমে ৩০০০ টাকা (নির্ধারিত) এবং ২৮৫০ টাকা (নির্ধারিত) থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছিল যথাক্রমে ৬০০০ টাকা (নির্ধারিত) এবং ৫৭০০ টাকা (নির্ধারিত)। বেতন বৃদ্ধির হার ছিল ১০০ ভাগ। গ্রেড-৩-এর পে-স্কেল ২৩৫০-২৭৫০ টাকার পরিবর্তে নির্ধারিত হয়েছিল ৪৭৫০-৫৫০০ টাকা। বেতন বৃদ্ধির হার ছিল ১০২ শতাংশ। নবম গ্রেডের বেতন স্কেল ৭৫০-১৪৭০ টাকার স্থলে নির্ধারিত হয়েছিল ১৬৫০-৩০২০ টাকা। বেতন বৃদ্ধির হার ছিল ১২০ শতাংশ। গ্রেড-১৯-এর কর্মচারীদের পে-স্কেল ২৪০-৩৪৫ টাকার স্থলে নির্ধারিত হয়েছিল ৫৫০-৯৬৫ টাকা। বেতন বৃদ্ধির হার ছিল ১২৯ শতাংশ। সর্বনিম্ন গ্রেডে (গ্রেড-২০) পে-স্কেল ২২৫-৩১৫ টাকার স্থলে নির্ধারিত হয়েছিল ৫০০-৮৬০ টাকা। বেতন বৃদ্ধির হার ছিল ১২২ শতাংশ। অর্থাৎ কোনো গ্রেডেই বেতন ১০০ ভাগের কম বাড়েনি।
দাবী আদায় ফোরামের অফিস কোথায়?
১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকুরিজীবী ফোরাম ঢাকায় অবস্থিত। আপনি শারিরিক ও আর্থিকভাবে অংশ নিতে যোগাযোগ করতে পারেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, অস্থায়ী কার্যালয়- ৩১ নং মসজিদুল ফেরদৌস কমপ্লেক্স, ব্লক-বি, মিরপুর-২, ঢাকা। ফেসবুক বা গুগল সার্চ দিয়ে লিংক খুঁজে দিয়ে গ্রুপে জয়েন করুন : govtservent11to20 ই-মেইল : mhtipu143@gmail.com, মোবাইল নং- ০১৭১৫-৫৮৩৮৮৩, ০১৭১২-১৪৯১৪৩. আপনার পরামর্শ ও কন্ট্রিবিউশন সাদরে গ্রহণ করা হবে। আপনি গ্রুপে জয়েন করতে এখানে ক্লিক করুন।
সরকারি কর্মচারীদের ৬ দফা দাবী ২০২৪ । সরকারি কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি কেন বৃদ্ধি করা জরুরি?
বেতন স্কেল এত বৈষম্য গোটা বিশ্বে বাংলাদেশ ছাড়া আর কোথাও নেই।
ঠিক বলেছেন।