হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের শাহাদতের ঘটনা বর্ণনা ও শোক প্রকাশের জন্য মজলিসের আয়োজন করা হয়-পবিত্র আশুরা ২০২৪
পবিত্র আশুরা ২০২৪ কবে? ইংরেজি ১৭ জুলাই ২০২৪ এবং হিজরি ১০ মহররম ১৪৪৬ তারিখ আশুরা পালিত হবে। ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নাতি হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের করবলায় শাহাদত বরণের স্মরণে পালিত হয়ে থাকে। শোক, শ্রদ্ধা ও আত্মত্যাগের দিন। মুসলমানরা বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই দিনটি পালন করে থাকেন।
আশুরা কেন পালিত হয়? হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের শাহাদতের স্মরণে ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে করুণ ও বেদনাদায়ক ঘটনাগুলির মধ্যে একটি হলো হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের করবলায় শাহাদত। আশুরা এই শোকাবহ ঘটনার স্মরণে পালিত হয়। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর নাতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ছিলেন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রিয় নাতি। আশুরা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম। সত্য ও ন্যায়ের বিজয়ের প্রতীক করবলার যুদ্ধ ছিল সত্য ও ন্যায়ের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও অন্যায়ের লড়াই। আশুরা এই লড়াইয়ের স্মরণে পালিত হয় এবং সত্য ও ন্যায়ের বিজয়ের বার্তা জানায়।
আশুরার সামাজিক ও মানবিক দিক কি? শোক ও সমবেদনা প্রকাশ: আশুরা শুধুমাত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের প্রতি শোক প্রকাশের দিন নয়, বরং এটি সকল নিপীড়িত ও مظلومদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশেরও দিন। ত্যাগ ও আত্মত্যাগের শিক্ষা: হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীরা সত্য ও ন্যায়ের জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আশুরা তাদের ত্যাগ ও আত্মত্যাগের শিক্ষা দেয়। আশুরার মজলিস ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে মুসলমানরা একসাথে জড়ো হয়, যা তাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যবোধ বৃদ্ধি করে। আশুরার সময় দরিদ্র ও অভাবীদের সাহায্য করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলন।
সরকারি ক্যালেন্ডারেও আশুরার ছুটির তারিখ নির্ধারিত রয়েছে যা অফিসগুলো অনুসরণ করে থাকে / হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের করবলায় শাহাদত স্বরণ করিয়ে দেয় আশুরা
হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের সমাধিস্থলের আদলে তাজিয়া তৈরি করা হয়। তাজিয়া বহন করে শোকযাত্রা বের করা হয়। খেয়রাত: দরিদ্র ও অভাবীদের খেয়রাত করা হয়।
Caption: Govt. Calendar
আশুরা দিন রোজা রাখার নিয়ম । আশুরার দিন মসলমানগন কি কি করে থাকে?
- রোজা: ৯ ও ১০ মহররম রোজা রাখা সুন্নত। অনেকে ৮ মহররম থেকেও রোজা রাখেন।
- মজলিস: হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের শাহাদতের ঘটনা বর্ণনা ও শোক প্রকাশের জন্য মজলিসের আয়োজন করা হয়। মজলিসে খুতবা, নোহা, মারসিয়া পাঠ করা হয় এবং শোকাকুল পরিবেশে হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়।
- তাজিয়া: হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের সমাধিস্থলের আদলে তাজিয়া তৈরি করা হয়। তাজিয়া বিভিন্ন আলংকারিক দ্রব্য দিয়ে সাজানো হয় এবং শোকযাত্রায় বহন করা হয়।
- শোকযাত্রা: তাজিয়া বহন করে শোকযাত্রা বের করা হয়। শোকযাত্রায় মুসলমানরা শোকাকুল পরিবেশে হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায়।
- খেয়রাত: দরিদ্র ও অভাবীদের খেয়রাত করা।
- ইবাদত: আশুরার দিন বেশি বেশি ইবাদত করা হয়।
- দুঃখ-কষ্টের স্মরণ: আশুরা শুধু হযরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও তাঁর সঙ্গীদের শাহাদতের স্মরণে পালিত হয় না, বরং এটি সকল নিপীড়িত ও مظلومদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশেরও দিন।
আশুরা কি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন?
না। আশুরা শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি একটি ব্যাপক আধ্যাত্মিক, সামাজিক ও মানবিক আন্দোলন। এই দিনটি মুসলমানদের সত্য, ন্যায়, ত্যাগ ও আত্মত্যাগের মূল্যবোধ মনে করিয়ে দেয় এবং তাদেরকে আরও ভালো মানুষ হতে অনুপ্রাণিত করে।