জনাব মো: আব্দুল কাদের বাংলাদেশ বেতারে কর্মরত একজন সরকারী কর্মচারী এবং তার জন্য চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৫ প্রযোজ্য। ফলে বেতন আয়ের ক্ষেত্রে এস,আর,ও নং ২১১-আইন/আয়কর/২০১৭, তারিখ: ২১ জুন ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ এর বিধান প্রযোজ্য হবে।
ধরা যাক, ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত অর্থ বছরে তিনি নিম্নোক্ত হারে বেতন ভাতাদি পেয়েছে:
- মাসিক মুল বেতন ২৩,৬৮০ টাকা
- মাসিক চিকিৎসা ভাতা ১,৫০০ টাকা
- উৎস ভাতা ৪৭,৩৬০ টাকা
- বাংলা নববর্ষ ভাতা ৪,৭৩৬ টাকা।
তিনি সরকারি বাসায় থাকেন। ভবিষ্য তহবিলে তিনি প্রতিমাসে ৫,০০০ টাকা জমা রাখেন। হিসাব রক্ষণ অফিস হতে প্রাপ্ত প্রত্যয়নপত্র হতে দেখা যায় যে, ৩০ জুন ২০২০ তারিখে ভবিষ্য তহবিলে অর্জিত সুদের পরিমাণ ২০,৬০০ টাকা। কল্যাণ তহবিলে চাঁদা বাবদ কর্তন ১৫০ টাকা। এ ছাড়াও তিনি একটি তফসিলী ব্যাংক ডিপিএস স্কীমে মাসিক জমা করেন ২,০০০ টাকা।
২০২৩-২৪ কর বছরে জনাব আব্দুল কাদেরের মোট আয় এবং করদায় কত হবে তা নিম্নে পরিগণনা করা হল যা কর বর্ষ ২০২৪-২৫ এর জন্য প্রযোজ্য হইবে
বেতন খাতে আয় নিধারণ:
- মুল বেতন (২৩,৬৮০*১২ মাস) = ২,৮৪,১৬০ টাকা।
- উৎসব ভাতা (২৩,৬৮০*২) = ৪৭,৩৬০ টাকা।
- চিকিৎসা ভাতা (১,৫০০*১২ = ১৮,০০০ টাকা। (সমুদয় অংক ব্যয়ের কারণে করমুক্ত)
- বাংলা নববর্ষ ভাতা ৪,৭৩৬ টাকা (করমুক্ত)
- কৃষি আয় ১,০০,০০০ টাকা।
উপরোক্ত তথ্য হতে মোট আয় ৪,৩১,৫২০ টাকা মাত্র।
কর দায় পরিগণনা:
- প্রথম ৩,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত “শুন্য” হার
- অবশিষ্ট ৮১,৫২০ টাকার উপর ১০% হারে মোট করদায় ৮,১৫২ টাকা।
বিনিয়োগজণিত আয়কর রেয়াত পরিগণনা:
- ভবিষ্য তহবিলে চাঁদা (৫,০০০*১২) = ৬০,০০০ টাকা।
- কল্যাণ তহবিলে চাঁদা (৫০*১২) = ৬০০ টাকা।
- ডিপিএস জমার কিস্তি (২,০০০*১২) = ২৪,০০০ টাকা।
তহলে মোট বিনিয়োগ ৮৪,৬০০ টাকা মাত্র।
আয়কর রেয়াতের জন্য অনুমোদন যোগ্য অংক :
(ক) মোট অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগ ৮৪,৬০০ টাকা।
(খ) মোট আয় ৪,৩১,৫২০ টাকার ২৫% হারে ৮২,৮৮০ টাকা।
(গ) অনুমোদন যোগ্য মোট আয় ১,৫০,০০,০০০ টাকা।
উপরোক্ত অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগের মধ্যে যেটি কম অর্থাৎ ৮২,৮৮০ টাকা।
অতএব আয়কর রেয়াতের পরিমাণ হবে: করদাতার মোট আয় ১৫ লক্ষ টাকা অধিক না হওয়ায় কর রেয়াতের পরিমাণ হবে অনুমোদনযোগ্য অংক এর ১৫% অর্থাৎ ৮২,৮৮০ টাকার ১৫% হারে রেয়াতের পরিমাণ হবে ১২,৪৩২ টাকা মাত্র।
ফলে প্রদেয় করের পরিমাণ হবে (৮,১৫২-১২,৪৩২) = (-৪,২৮০) টাকা অর্থাৎ তার প্রদেয় কর দায় ঋণাত্মক।
যদিও তার করদায় ঋণাত্মক তথাপিও তাকে সর্বনিম্ন ৩,০০০ টাকা আয়কর পরিশোধ করতে হবে (অন্যান্য বা উপজেলার ক্ষেত্রে), সিটি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৫০০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
বাংলাদেশ সরকারের উর্ধ্বতন কর নির্ধারণ কর্তৃপক্ষের নিকট দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে, বার্ষিক আয়কর সীমা ৩,৫০,০০০ টাকা বর্তমান সময়ে কোন ভাবেই সাধারণ জনগণ বা স্বল্প বেতন ভোগীরদের জন্য উত্তম আয়করসীমা হতে পারেনা, তাই সাধারণ মানুষ ও নিম্ন বেতনভোগীদের কথা চিন্তা করে আয়করসীমা পুন:নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবি।