পে-স্কেল I গেজেট । প্রজ্ঞাপন । পরিপত্র

বিষুর/বিজুর/বৈসাবির ও বাংলা নববর্ষ ছুটি ২০২৫ । পার্বত্য জেলায় বৈশাখী ছুটি কি এখন ৩ দিন?

বিজু, বৈসাবি ও চৈত্র সংক্রান্তি এবং বাংলা নববর্ষ উদযাপনের জন্য রাঙ্গামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারে ছুটি সমন্বয়পূর্বক ২ দিনের পরিবর্তে ৩ দিন যথাক্রমে ১৩/০৪/২০২৫ থেকে ১৫/০৪/২০২৫ তারিখ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে-বিষুর/বিজুর/বৈসাবির ও বাংলা নববর্ষ ছুটি ২০২৫

বিষু উৎসব কি? বিষু (Vishu) একটি ঐতিহ্যবাহী হিন্দু উৎসব যা প্রধানত ভারতের কেরালা রাজ্যে এবং বিশ্বজুড়ে মালয়ালী সম্প্রদায়ের মানুষেরা পালন করেন। এটি মালয়ালী পঞ্জিকা অনুসারে ‘মেড়ম’ মাসের প্রথম দিনে পড়ে এবং কেরালা অঞ্চলে এটিকে জ্যোতিষশাস্ত্রীয় নববর্ষের সূচনা হিসাবে গণ্য করা হয়। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, এটি সাধারণত প্রতি বছর এপ্রিল মাসের ১৪ বা ১৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। বিষুক্কানি এটি বিষুর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উৎসবের আগের রাতে, পরিবারের সদস্যরা একটি ‘উরুলি’ (সাধারণত পিতলের তৈরি পাত্র) বা থালায় নানারকম শুভ জিনিস সাজিয়ে রাখেন। এর মধ্যে থাকে চাল, নতুন কাপড়, ফল (বিশেষ করে হলুদ রঙের কনিকন্না বা গোল্ডেন শাওয়ার ফুল), শসা, সবজি, পান পাতা, সুপারি, একটি ধাতব আয়না (ভালকান্নাড়ি), মুদ্রা বা টাকা এবং কোনো ধর্মগ্রন্থ (যেমন রামায়ণ বা ভগবদগীতা)। বিষুর দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে চোখ বন্ধ করে এই ‘কানি’ (দর্শনীয় বস্তু) রাখা স্থানে গিয়ে চোখ খুলে প্রথমেই এটি দর্শন করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, বছরের প্রথম দিনে এই শুভ জিনিসগুলি দেখলে সারা বছর সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধি আসে।

বিষুক্কাইনীট্টম (Vishukkaineetam) এটি একটি প্রথা যেখানে পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যরা ছোটদের আশীর্বাদস্বরূপ কিছু টাকা বা মুদ্রা উপহার দেন। এটি সৌভাগ্য এবং সম্পদ ভাগ করে নেওয়ার প্রতীক। বিষু উপলক্ষে বিশেষ ভোজের আয়োজন করা হয়, যাকে ‘সাদ্যা’ বলা হয়। এটি সাধারণত কলার পাতায় পরিবেশন করা হয় এবং এতে বিভিন্ন ধরণের নিরামিষ পদ থাকে। উৎসবের দিন নতুন পোশাক পরার রীতি রয়েছে এবং শিশুরা ও প্রাপ্তবয়স্করা বাজি (বিষুপটাক্কম) ফাটিয়ে আনন্দ করে।সংক্ষেপে, বিষু হলো নতুন বছরকে আশা, আনন্দ এবং সমৃদ্ধির কামনার সাথে বরণ করে নেওয়ার উৎসব। যদিও এটি কেরালার প্রধান উৎসব, তবে কর্ণাটকের টুলু নাড়ু অঞ্চল এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থানে বসবাসকারী মালয়ালীরাও এটি পালন করেন।

বৈসাবি উৎসব কি? বৈসাবি উৎসব হল একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যা মূলত বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের আদিবাসী (বিশেষত চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, মুরং, বাঙালি, এবং অন্যান্য উপজাতির) মানুষদের মধ্যে পালিত হয়। এটি বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী বৈশাখ মাসের প্রথম দিন (১ বৈশাখ) উদযাপিত হয়, যা নববর্ষের প্রারম্ভিক দিন। বৈসাবি শব্দটি আসলে বৈ (বৈশাখ) এবং সাবি (আদিবাসী ভাষায় উৎসব বা আনন্দ) থেকে এসেছে, যার অর্থ হলো “বৈশাখের উৎসব”।

বিষুর/বিজুর/বৈসাবির ও বাংলা নববর্ষের অগ্রিম শুভেচ্ছা /  রাঙ্গামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারকে শুভেচ্ছা

বৈসাবি উৎসব মূলত আদিবাসী সমাজের নতুন বছরের সূচনা হিসেবে পালিত হয় এবং এটি কৃষিকাজ, সমাজ ও সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত। উৎসবের মাধ্যমে তারা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হয়ে পুরানো বছরের সমস্ত দুঃখ-বেদনা ভুলে নতুন বছরে সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করে। এটি একটি সাংস্কৃতিক উৎসব, যেখানে ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি, খাওয়া-দাওয়া, গান-বাজনা এবং নাচ-গানের মাধ্যমে আনন্দ উদযাপন করা হয়।

Caption: govt. order on Leave

বৈসাবি উৎসব ২০২৫ । বৈসাবি উৎসবের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য কি?

  • নতুন পোশাক পরিধান – উৎসবের দিন নতুন কাপড় পরা একটি সাধারণ রীতি।
  • পাহাড়ি খাবার ও মিষ্টান্ন – বিশেষ করে “পিঠা” (চালের পিঠা, দই, ইত্যাদি) খাওয়া হয়।
  • নাচ ও গান – উৎসবের সময় ঐতিহ্যবাহী আদিবাসী নাচ ও গান পরিবেশন করা হয়, যা আনন্দ এবং সম্প্রতির প্রতীক।
  • গাছের পূজা – কিছু অঞ্চলে গাছের পূজা করা হয়, যা প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা এবং নতুন বছরের উজ্জ্বল শুরু হিসেবে মানা হয়।
  • কমিউনিটি মিলন – এই দিনটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক মিলন মেলা হিসেবে উদযাপিত হয়, যেখানে তারা একত্রিত হয়ে আনন্দ-উৎসবে অংশ নেয়।
  • নতুন পোশাক পরিধান – সবাই নতুন পোশাক পরিধান করে।
  • মিষ্টি খাওয়া – পিঠে, রসগোল্লা, জামাইষষ্ঠী ইত্যাদি মিষ্টি খাওয়া হয়।
  • গান, নাচ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান – বিভিন্ন ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং গান-বাজনা অনুষ্ঠিত হয়।
  • বাণিজ্যিক আয়োজন – ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ে “হালখাতা” নামে একটি অনুষ্ঠান পালিত হয়, যেখানে পুরনো হিসাব শেষ করে নতুন হিসাব শুরু করা হয়।
  • এছাড়া, বাংলা নববর্ষের মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য উদযাপন করা হয়, যা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষকে একত্রিত করে। তাই, বাংলা নববর্ষ শুধু হিন্দুদের উৎসব নয়, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী এবং জাতীয় উৎসব হিসেবে সমগ্র বাংলাভাষী জনগণের মাঝে পালন করা হয়।

বাংলা নববর্ষ কি হিন্দুদের উৎসব?

বাংলা নববর্ষ, বা Pohela Boishakh, শুধুমাত্র হিন্দুদের উৎসব নয়। এটি একটি বাংলা জাতীয় উৎসব যা সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে ব্যাপকভাবে পালিত হয়, বিশেষত বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন অঞ্চলে। বাংলা নববর্ষ বৈশাখ মাসের প্রথম দিন (১ বৈশাখ) শুরু হয়, এবং এটি মূলত বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী নতুন বছরের সূচনা। যদিও এই উৎসবের মূল ঐতিহ্য হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্ভূত, কিন্তু বর্তমান সময়ে এটি সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য এক সাধারণ উৎসব হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ অন্যান্য ধর্মের মানুষও বাংলা নববর্ষ উদযাপন করেন। উৎসবটি আঞ্চলিক, সাংস্কৃতিক এবং জাতীয় জীবনের একটি অংশ হয়ে উঠেছে।

   
   
   

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *