সরকারি চাকরিজীবী অবসর উত্তর ছুটিতে থাকা কালীন সময়ে যদি মারা যান তাহলে অনেকগুলো আর্থিক সহায়তা ও সুবিধা পেয়ে থাকে। অনেক চাকরিজীবীও এ বিষয় গুলো অবগত নন। চাকরিজীবী মৃত্যুবরণের পর তার পরিবার বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞাত না থাকায় তারা সকল সুবিধা ভোগ করতে পারে না।
কেন জানা দরকার?
আপনি যদি চাকরিজীবী বা আপনার পরিবার বা আত্মীয় স্বজন যদি কেউ সরকারি চাকরি করে থাকেন তবে বিষয়গুলো সর্ম্পকে আপনার জ্ঞান রাখা বিশেষ জরুরী। একজন কর্মচারীর মৃত্যুর পর তার পরিবার বিপাকে পড়ে যায় আর্থিক সুবিধাগুলো পেতে। তাই প্রত্যেক সরকারী কর্মচারীর উচিৎ, তার পরিবারের সাথে তার মৃত্যু পরবর্তী সরকারি আর্থিক সুযোগ সুবিধার বিষয় আলাপ আলোচনা করা। তাতে তার মৃত্যুতে পরিবার সহজেই ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত সুযোগ সুবিধাগুলো গ্রহন করা পারে।
আজ আমি তুলে ধরবো:
- ১৮ (আঠার) মাসের লাম্প গ্র্যান্ট এমাউন্ট (যদি উত্তোলন করে না থাকেন)। যা চাকরি জীবনে একবারই পাওয়া যায়। অর্থাৎ এটি আপনার চাকরিকালে জমাকৃত ছুটির মূল্য স্বরুপ সরকার আপনাকে দিচ্ছে। সহজ কথায় আপনার অর্জিত ছুটি বিক্রির সুবিধা এটি।
- ছুটি কালীন চলতি মাসের বেতন (পরিবার উত্তোলন করতে পারবেন।) বেতন প্রাপ্য অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে উক্ত মাসে তিনি যে পরিমাণ বেতন উত্তোলন করতেন তার পরিবার সংশ্লিষ্ট মাসের বেতন উত্তোলন করতে পারবেন। অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে যে, মৃত্যুর সাথে সাথে বেতন উত্তোলন ক্ষমতা থাকে না।
- ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড হতে আর্থিক সহায়তা পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে অনলাইন থেকে মৃত্যুজণিত আর্থিক সাহায্যের ফরম পূরণ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষে মাধ্যমে আবেদনসহ অন্যান্য কাগজপত্রাদি প্রেরণ করলেই Account Payee cheeque আসবে মৃত ব্যক্তি পরিবারের মনোনীত ব্যক্তির নামে। এখন অবশ্য ইএফটি এর মাধ্যমে।
- প্রতি মাসে তার পরিবার ২,০০০ (দুই হাজার) টাকা হারে ১৫ বছর পর্যন্ত প্রাপ্য হবেন (সাধারণ স্ত্রী বা প্রতিবন্ধী সন্তান পেয়ে থাকেন)। এটি সাধারণত সোনালি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রতি মাসে উত্তোলন করা যায়। সর্বোচ্চ ৫ মাসের বকেয়া উত্তোলন করতে পারবেন। ৬ মাস বকেয়া হয়ে গেলে পুনরায় কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড হতে অনুমোদন আনতে হয়।
- দাফন কাফনের জন্য কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে ৬০,০০০/- (ষাট হাজার) টাকা পাওয়া যায়। এজন্য দাফন কাফনের আর্থিক সহায়তার আবেদনের জন্য ফরম রয়েছে। ফরমপুরণপূর্বক যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
- ৮,০০,০০০/- (আট লক্ষ) টাকা সরকারি অনুদান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে গ্রহণ করতে হবে। (যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করে)। কর্মচারীর মৃত্যুসনদ ও অন্যান্য কাগজপত্রাদি সংশ্লিষ্ট অফিসের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর প্রেরণ করতে হয়। Account Payee cheeque আসবে মৃত ব্যক্তি পরিবারের মনোনীত ব্যক্তির নামে। ইএফটি’র মাধ্যমে। এক্ষেত্রে অবশ্যই চাকরি রত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতে হবে। পূর্বে এলপিআর ছিল তখন পেত।
- ভবিষ্য তহবিল এ জমাকৃত টাকা চূড়ান্ত উত্তোলন। চাকরি জীবন ২ (দুই) বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই সাধারণত একজন সরকারি চাকরিজীবী GPF এ অর্থ কর্তন শুরু করে। ১৩% সুদের হার হওয়ায় দ্রুত এ অর্থ বাড়তে থাকে। সম্প্রতিকালে দেখা যায় চাকরিকাল শেষে কারও ১০-১৫ লক্ষ টাকা জমা হয়। এ অর্থ পিআরএল এ থাকাকালীন চূড়ান্ত উত্তোলন করা যায়। এটি উত্তোলন করে না থাকলে পরিবার তা উত্তোলন করতে পারবে।
- এককালিন গ্র্যাচুইটি বা আনুতোষিক এমাউন্ট। এটি একটি বড় অঙ্কের টাকা সাধারণত সরকার মূল বেতনের প্রতি এক টাকা পরিবর্তে ২৩০ টাকা বিনিময় করে থাকে। একজন নিম্ন বেতনভূক্ত কর্মচারী সাধারণত ২০-৩০ লক্ষ টাকা এককালিন পেয়ে থাকেন।
- মাসিক পেনশন ভাতা। উপরোক্ত সুযোগ সুবিধা ব্যতিরেখে চূড়ান্ত পর্যায়ে উপজেলা/জেলা পর্যায়ের হিসাব রক্ষণ অফিস হতে মাসিক পেনশন মৃত কর্মচারীর পরিবার উত্তোলন করতে পারে। সাধারণ বর্তমান সময়ের একজন কর্মচারীর পরিবার ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক পেনশন ভোগ করে থাকেন।
- নববর্ষ ভাতা, উৎসব ভাতা ইত্যাদি পরিবার ভোগ করতে পারে। প্রাপ্ত পেনশনের ২০% বৈশাখ এবং মূল বেতন তথা মূল পেনশনের সমপরিমাণ হারে ২টি উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন।
পরিশেষে, পরামর্শ হলো আপনি উক্ত তথ্যগুলো জানুন এবং অপরকে জানান। আরও কোন তথ্য জানার থাকলে ইমেইল করুন: alaminmia.tangail@gmail.com এ।
ধন্যবাদ আপনাকে ধৈর্য করে পোস্টটি পড়ার জন্য।
PRL বা অবসর উত্তর ছুটিতে থাকা কালীন মৃত্যুবরণ করলে যে সকল আর্থিক সুবিধা পাওয়া যাবে।
এ আদেশের কোন সরকারি আদেশ আছে কিনা তা থাকলে পিডিএফ ফাইল আপলোড দিন।
রেফারেন্স ছাড়া এই ধরণের কথা কিভাবে লিখলো?? পিআরএল ভোগ মানেই তো চাকরি শেষ। পিআরএল ভোগরত অবস্থায় মারা গেলে কিভাবে ৮ লাখ টাকা অনুদান পাবে সেটা আমার বুঝে আসে না। নিশ্চিত ভেজাল কিছু খেয়ে এই পোস্ট লিখেছে।
পিআরএল মানে চাকরির ছুটি চলমান অবস্থা। সুতারং পিআরএল অবস্থায় চাকরি থাকে। তাই ভাতা দেয়া ঠিকই আছে ।
পিআরএল মানে চাকরির ছুটি চলমান অবস্থা। সুতরাং পিআরএল অবস্থায় চাকরি থাকে। তাই ভাতা দেয়া ঠিকই আছে ।
আমার বাবা পি আর এল থাকা অবস্থায় মারা গেছে। আমি কি উপরের সব সুবিধা পাব
না। শুধু দাফন কাফনের জন্য এবং মাসিক কল্যাণ ভাতা পাবেন।
আমার মা একজন সরকারি চাকুরিজিবি তিনি পি আর এল থাকাকালীন মৃত্যু বরন করেন, আমার বাবা আগেই মারা গেছে। এখন আমি তার একমাত্র পুত্র সন্তান আমি কি মাসিক পেনশন এবং কল্যান ভাতা পাব? দয়া করে উত্তর দিলে উপকৃত হবো।
অবশ্যই পাবেন।
চাকরিজীবী অবসরে যাওয়ার আগে এক বছর চাকরিতে জয়েন ছুটিতে থাকা অবস্থায় বসে বসে বেতন পায় সেই অবস্থায় মারা গেলে 8 লাখ টাকার অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবে কি?আমার আব্বু মারা গেছে 2017 সালের 10 মে আমরা কে ৮ লক্ষ টাকার অনুদানের জন্য আবেদন পত্র করতে পারব কি আমরা বিষয়টি সম্পর্কে জানতাম না এখন আবাদন করতা পারব কি
আমার আব্বু এক বসর অবসর জাওয়ার আগাইএ অফিস থেখা বেতন পাসসিল আমরা আবাদন করতা পারব কি
পিআরএল কালীন এক বছর বেতন তিনি পূর্ণ হারে পাবেন।
না পারবে না। চাকুরিকালীন হতে হবে।
পি আর এল মানে ত সরকারি ছুটি, তার মানে হল তিনি অবসরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কাগজপত্র ঠিকঠাক করার জন্য সরকার ছুটি দিলেন এক বছর, সেই অবস্থায় তিনি মারা গেলে কেন তাকে ৮০০০০০ টাকা দিবেনা, বিশেষজ্ঞ দের মতামত চাই।
পিআরএল হচ্ছে অবসর প্রস্তুতি মূলক ছুটি। আর পিআরএল হচ্ছে অবসর উত্তর ছুটি। এই সুবিধা দেওয়া লাগে বলেই এটি কে পিআরএল করা হয়েছে। পিআরএল মানেই হচ্ছে অবসর শুরু হয়ে গেল সুতরাং পূর্ববর্তী কোন সুবিধা প্রাপ্য হবে না।
আমার বাবা পি আর এল থাকা অবস্থায় মারা গেছে।এখন প্রায় সাত মাস পর অফিস থেকে বলছে কল্যাণ বোর্ড হতে আর্থিক সহায়তা 200000(2 লক্ষ) টাকা এবং দাফন কাফনের জন্য কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে ৬০,০০০/- (ষাট হাজার) টাকা পাওয়া যাবে না।
এখন আপনার সুপরামর্শ চাচ্ছি কি করা যেতে পারে
পাওয়ার কথা। অনুগ্রহ করে বিকেকেবির হেল্প লাইনে কল করুন। হেল্প ডেস্ক – কল্যাণ তথ্য ও সেবা কেন্দ্র
কক্ষ নং- ১১১৪
ফোন : ৫৮৩১০৩৩৪
মোবাইল: ০১৭২৭৮০৪০০৬
E-mail: info@bkkb.gov.bd
আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক। আমার চাকুরী 25 বছর পূর্ণ হয়েছে।আমি যদি পি আর এল ভোগ না করি তাহলে কি কোন আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হব? আমার বর্তমান মূল বেতন ২৪৮২০৳ পেনশনে কত টাকা পাব যদি বলতেন উপকৃত হব।
পিআরএল ভোগ না করলে ১ বছরের বেতন ভাতাদি পাবেন না। শুধুমাত্র লাম্পগ্র্যান্ট পাবেন এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সব ঠিক মতই পাবেন। এক্ষেত্রে পিআরএল ভোগ না করতে চাইলে আবেদনের উল্লেখ করতে হবে।
আমার বাবা পি আর এল অবস্থায় মারা গেছেন আমরা 800000/- টাকার অনুদান পাব ? একটু জানালে ভালো হতো
সরকারি প্রতিষ্ঠানে হলে পাবেন।