জাতীয় পরিচয়পত্র । জন্ম নিবন্ধন

ভোটার লিস্ট বের করার নিয়ম ২০২৫ । প্রার্থীগণ কিভাবে ভোটার তালিকা সংগ্রহ করবেন?

২০২৫ সালের ভোটার তালিকা বা ভোটার লিস্ট সংগ্রহের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও সময়সূচী রয়েছে। প্রার্থী এবং সাধারণ ভোটারদের জন্য এই তালিকা সংগ্রহের প্রক্রিয়া নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

১. প্রার্থীরা যেভাবে ভোটার তালিকা সংগ্রহ করবেন

নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীগণ তাদের নির্বাচনী এলাকার পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা (CD বা মুদ্রিত কপি আকারে) সংগ্রহ করতে পারেন। এর জন্য করণীয় হলো:

  • আবেদন প্রক্রিয়া: প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিস বরাবর নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হয়।

  • নির্ধারিত ফি: ভোটার তালিকা বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত ফি (সাধারণত ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে) জমা দিয়ে তালিকার সিডি (CD) বা মুদ্রিত কপি সংগ্রহ করতে হয়।

  • সংগ্রহের স্থান: প্রার্থীরা তাদের নিজ নিজ সংসদীয় এলাকা বা নির্বাচনী এলাকার জন্য উপজেলা/জেলা নির্বাচন অফিস থেকে এই তালিকা সংগ্রহ করতে পারেন।

২. ভোটার তালিকা ২০২৫-এর হালনাগাদ সময়সূচী

২০২৫ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের জন্য নির্বাচন কমিশন একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশ করেছে:

  • তথ্য সংগ্রহ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫ থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

  • খসড়া তালিকা প্রকাশ: সাধারণত ২ জানুয়ারি বা কমিশনের নির্ধারিত তারিখে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। ২০২৫ সালের সম্পূরক খসড়া তালিকা ১০ আগস্ট ২০২৫ তারিখে জনসমক্ষে প্রকাশের একটি সময়সূচী চূড়ান্ত করা হয়েছিল।

  • চূড়ান্ত তালিকা: সকল সংশোধন ও আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে ৩১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

৩. অনলাইনে ভোটার লিস্ট দেখার নিয়ম

ব্যক্তিগতভাবে আপনি ভোটার তালিকায় আছেন কি না বা আপনার ভোটকেন্দ্র কোথায়, তা অনলাইনে চেক করতে পারেন:

  1. বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd-এ যান।

  2. আপনার এনআইডি (NID) নম্বর বা ভোটার হওয়ার সময় প্রাপ্ত ফর্ম নম্বর এবং জন্ম তারিখ প্রদান করুন।

  3. ক্যাপচা কোডটি পূরণ করে সাবমিট করলে আপনি আপনার বর্তমান ভোটার এলাকার তথ্য দেখতে পাবেন।

৪. গুরুত্বপূর্ণ ফরমসমূহ

ভোটার তালিকায় কোনো ভুল থাকলে বা নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করতে চাইলে নিম্নোক্ত ফরমগুলো ব্যবহৃত হয়:

  • ফরম-২: নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের জন্য।

  • ফরম-১২: মৃত ভোটারের নাম কর্তন করার জন্য।

  • ফরম-১৩: ভোটার এলাকা স্থানান্তরের জন্য।

  • ফরম-১৪: ভোটার তথ্যের কোনো ত্রুটি সংশোধনের জন্য।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ২০২৫ সালের ১৩শ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে “Postal Vote BD” অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনের সুযোগ রাখা হয়েছে, যাতে তারা বিদেশ থেকেও ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।

ভোটার তালিকার সিডি সংগ্রহ করতে কত টাকা ফি গুণতে হয়?

ভোটার তালিকার সিডি সংগ্রহের জন্য নির্ধারিত ফি এলাকার ধরন ও ব্যাপ্তির ওপর নির্ভর করে। ২০২৫ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এবং সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী এই ফি-র কাঠামো নিচে দেওয়া হলো:

১. সিডি (CD) সংগ্রহের নির্ধারিত ফি

নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড ভিত্তিক ভোটার তালিকার সিডি সংগ্রহের জন্য সাধারণত ৫০০ টাকা ফি দিতে হয়। তবে এটি এলাকা ভেদে এবং হালনাগাদ তথ্যের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে কিছুটা কম-বেশি হতে পারে।

  • ইউনিয়ন ভিত্তিক: প্রতি ইউনিয়নের জন্য সাধারণত ৫০০/- টাকা।

  • পৌরসভার ওয়ার্ড ভিত্তিক: প্রতি ওয়ার্ডের জন্য ৫০০/- টাকা।

  • পুরো উপজেলা/নির্বাচনী এলাকা: পুরো উপজেলার জন্য সিডি নিতে চাইলে মোট ওয়ার্ড বা ইউনিয়নের সংখ্যা অনুযায়ী ফি গুণিতক হারে বা কমিশন নির্ধারিত থোক বরাদ্দ অনুযায়ী জমা দিতে হয়।

২. ফি জমা দেওয়ার পদ্ধতি

এই টাকা সরাসরি নগদ গ্রহণ করা হয় না। প্রার্থী বা আবেদনকারীকে নিম্নলিখিত উপায়ে ফি জমা দিতে হয়:

  • ট্রেজারি চালান: বাংলাদেশ ব্যাংকের সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় নির্ধারিত কোড নম্বর (যেমন: ১-০৬০১-০০০১-২৬৩১) ব্যবহার করে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে টাকা জমা দিতে হয়।

  • আবেদন: চালানের মূল কপি সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করতে হয়।

৩. সিডিতে যা থাকে

এই সিডি মূলত একটি পিডিএফ (PDF) ফাইল বা ডাটাবেজ ফরমেটে থাকে, যেখানে ওই এলাকার সকল ভোটারের নাম, পিতা/মাতার নাম, জন্ম তারিখ এবং ভোটকেন্দ্রের তথ্য থাকে। এটি প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্পেইন এবং পোলিং এজেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

পরামর্শ: আপনি যে এলাকার ভোটার তালিকা নিতে চান, সেই এলাকার উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করলে তারা আপনাকে সঠিক কোড নম্বর এবং বর্তমান বছরের সুনির্দিষ্ট ফি-র পরিমাণ জানিয়ে দেবে।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *