বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

২০-১৬ তম গ্রেডে বেতন কত ২০২৪ । মূল্যস্ফীতি বাজারে কেমন আছেন নিম্ন গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীরা?

সরকারি কর্মচারীদের উচ্চগ্রেড ও নিম্নগ্রেডের অসৎ কর্মচারীগণ ভাল থাকলেও ভাল নেই, ঘুম নেই সৎ সরকারী চাকরিজীবীদের চোখে – ১৬ তম গ্রেডে বেতন কত ২০২৪

সরকারি কর্মচারীদের ২০টি গ্রেড? হ্যাঁ। জাতীয় পে স্কেল ২০১৫ অনুসারে ২০টি গ্রেডে বিভক্ত করে বেতন ভাতাদি প্রদান করা হয়। ১৭-২০ গ্রেড ৪র্থ শ্রেণী (পূর্বতন) এদের মধ্যে বিশতম গ্রেডের বেতন এখনও ৮২৫০ টাকায় শুরু হয়। ২০১৫ সালেও ৮২৫০ টাকা স্টার্টিং বেতন ছিল এখনও তাই আছে। মূল্যস্ফিতি বাড়লেও জয়েনিং এ বেতন বাড়েনি। বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ও মূল বেতনসহ সব ভাতা মিলিয়ে উপজেলা লেভেল এ একজন ২০ গ্রেডের কর্মচারী ১৪-১৫ হাজার টাকা বেতন পান যা দিয়ে তার সংসার চলে। বাজারে গেলে সবচেয়ে নিম্নমানের বাজার সদাই করে বাসায় ফিরতে হয় তাদের।

পুরাতনদের বেতন তো ভাল তাই না? না। যাদের চাকরির বয়স ১০ বছর হয়েছে তারা যে খুব ভাল আছে ব্যাপারটি এমন নয়। ১০ বছরে মূল বেতন বেড়েছে ৫০০০ টাকা। ফলে ১৩-১৪ হাজার টাকা মূল বেতন পাচ্ছে ১৭-২০ গ্রেডের কর্মচারীগণ। মূল বেতনের সাথে ৪০-৪৫% বাড়ি ভাড়া এবং চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ আর যদি ধরে টিফিন ২০০ এবং ধোলাই ভাতা ১০০ টাকা সব মিলিয়ে ২০-২৩ হাজার টাকা মধ্যেই তাদের বেতন ভাতাদি আটকে আছে। বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা বাদ দিলে তাদেরও যে টাকা থাকে তা দিয়ে সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। মাসের ১৫-২০ দিন যেতে না যেতেই হাত টানে পড়ে যান তারা। তবে কোন কোন দপ্তরে ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী নিরাপত্তা প্রহরী, অফিস সহায়ক ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের অধিকাল বা ওভার টাইম ভাতা থাকার ফলে তারা হয়তো চলতি ঋণ পরিশোধ করে খেয়ে পড়ে বেচেঁ আছে কিন্তু যাদের অধিকার ভাতা নেই বা উৎকোচও নেন না তারা কিভাবে জীবন অতিবাহিত করছে? তা আপনিও বাজারে গিয়ে একবার চিন্তা করে দেখুন।

১৬-১৩ গ্রেড এদের কি খবর? হ্যাঁ। এদের অবস্থা আরও খারাপ কারণ তারা বিষেই আড়াই পাতা প্রতিদিন খাচ্ছেন। মূল্যস্ফিতি তাদের গোদের উপর বিষফোঁড়া অর্থাৎ ১৬-১৭ হাজার টাকায় ৬ সদস্যের পরিবার টেনে নিতে গিয়ে কার শার্ট আবার কারও প্যান্ট ছিড়ে যাচ্ছে। নতুন করে পোষাক কেনার কথাও তারা ভাবতে পারছে না দৈনিক বাজার শেষে। অন্যদিকে যারা পুরাতন কর্মচারী তাদের বেতন ২২-২৫ হাজার হলেও সেই টাকা আহামরি তাদের খুব একটা ভাল ব্যাকআপ দিচ্ছে না। মাসের খরচ কোনমতে পার করা গেলেও যদি পরিবারের কেউ একটু অসুস্থ্য হয়ে পড়ে ঋণের বোঝা মাথায় চাপে। সেই ঋণ পরিশোধ করা বেতন ভাতা হতে সম্ভব হয় না- হয়তো তাকে অনৈতিক কোন পথ বেছে নিতে হয় নয়তো পৈতৃক কোন সম্পদ হারাতে হয়। ১৭-২০ গ্রেড বা চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের বছর শেষে কিছু অধিকার ভাতার অর্থ পেলেও এই তৃতীয় শ্রেণী বা ১৬-১৩ গ্রেডের কর্মচারীদের কিছু পাওয়ার নেই। এরা অফিসিয়াল ডিউটি করে তাই কোন অতিরিক্ত অর্থ কোন জায়গা হতেই পান না। হ্যাঁ। আপনি হয়তো ঘুষখোর বা ভীনগ্রহের মানুষের কথা ভাবছেন তারা দিব্যি আছেন। ১৭ গ্রেডের সৎ আর্মফোর্স বা পুলিশও কিন্তু সুখে নেই।

সরকারি কর্মচারীদের ভাল আছেন কারা? / ১:১০ বেতন রেসিওতে কে ভাল থাকতে পারেন সেটি মনে হয় অনুমান করতে পেরেছেন। ১-৯ গ্রেডের কর্মকর্তাদের বাজার সদাই নিয়ে ভাবতে হয় না তারা ভাবেন ডিপোজিট ও প্রাচুর্য নিয়ে তা সে সৎ হোক বা অসৎ ই হোক না কেন।

সেদিন না বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে? হ্যাঁ। বেড়েছে ১০০০ টাকা কর্মচারীদের বেড়েছে। এখানেও শুভংকরের ফাকিঁ ১-৯ গ্রেডের কর্মচারীদের প্রতি বছর ৫% হারে স্পেশাল সুবিধা বৃদ্ধি পেতে থাকবে কিন্তু কর্মচারীদের সেই ১০০০ টাকাই থাকবে। এটি যদি মূল বেতনের সাথে যোগ হত তবে কর্মচারীদেরও প্রতিবছর ৫% হারে বাড়তে থাকতো।

উপসচিবের গ্রেড । মন্ত্রণালয়ের পিয়ন হতে সচিব পর্যন্ত কত টাকা বেতন পান?

সূত্র দেখুন: উপসচিবের গ্রেড । মন্ত্রণালয়ের পিয়ন হতে সচিব পর্যন্ত কত টাকা বেতন পান?

কর্মকর্তা বনাম কর্মচারী বেতন পার্থক্য । ১:১০ বেতন ভাতাদির পার্থক্য রয়েছে -বেতন গ্রেড পার্থক্য কর্মচারীদের গড়ে ২.৫% যেখানে কর্মকর্তাদের গড়ে ২০%

  1. উপসচিব মূল বেতন ৬৩,৯৬০/- মোট বেতন প্রায় লাখ টাকা।
  2. হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মূল বেতন ৩৫,৮৮০/- মোট বেতন প্রায় ৫৫ হাজার টাকা।
  3. প্রশাসনিক কর্মকর্তা মূল বেতন ১৯,৪৬০/- মোট বেতন প্রায় ৩২ হাজার টাকা।
  4. সার্ট মুদ্রাক্ষরিক মূল বেতন ২০,৭৪০/- মোট বেতন প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
  5. অফিস সহকারী মূল বেতন ১৫,৮৮০/- মোট বেতন প্রায় ২৩ হাজার টাকা।
  6. ক্যাশ সরকার মূল বেতন ১৩,৯০০/- মোট বেতন প্রায় ১৯ হাজার টাকা।
  7. অফিস সহায়ক মূল বেতন ১২,৮৫০/- মোট বেতন প্রায় ১৮ হাজার টাকা।
  8. অফিস সহায়ক মূল বেতন ১৭,৯২০/- মোট বেতন প্রায় ২৭ হাজার টাকা।

বেতন কি আবারও বৃদ্ধি করা উচিৎ?

ইতোপুর্বে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়নি বরং একটি ভাতা যুক্ত করা হয়েছে। বার্ষিক ভিত্তিতে যে হারে মূলস্ফিতি হয়েছে সেই হারে বেতন বাড়েনি তাই সরকারি কর্মচারীদের টানাটানিতে পড়তে হয়েছে। ২০১৫ সালেই ৮২৫০ টাকার মূল্য এখনও নিশ্চয়ই ৮২৫০ টাকা থাকে নি। আমরা জানি ৮-১০ বছরে ডাবলস্কিমে টাকা রাখলে তা দ্বিগুন হয়। তেমনি নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয়ে টাকার মান কমে অর্ধেক হয়। ২০১৫ সালের ৮২৫০ টাকা এখন ৪১২৫ টাকায় রূপান্তর হয়ে গেছে তাই জয়েনিং বেতনটি সমন্বয় করা উচিৎ এবং কর্মচারীদের জন্য নতুন পে স্কেল ২০২৩ ঘোষণা করা জরুরি। পূর্বের পে স্কেলের সময়ের ২০ হাজার টাকা এখন সেটি ১০ হাজার টাকায় মূল্যায়িত হচ্ছে। এটি হওয়ার জন্য অসংগতিপূর্ণ জাতীয় বেতন স্কেল এবং মাত্র ৫% বেতন বৃদ্ধিকে দায়ী করা যেতে পারে।

৫% বিশেষ ভাতা কতটুকু ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে?

সরকারি কর্মচারীদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) হয় অর্থবছরের শুরু, অর্থাৎ ১ জুলাই ২০২৩ থেকে। গত বছরের জুলাই মাসে তাঁদের জন্য যোগ হয়েছে বিশেষ প্রনোদন। ২০১৫ সালে ঘোষিত বেতনকাঠামো অনুযায়ী প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে যে বেতন বাড়ে, এবার তার সঙ্গে আরও মূল বেতনের ৫ শতাংশ প্রণোদনা যোগ হয়েছে। বর্তমানে বাজার মূল্য এবং দ্রব্যমূল্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বার্ষিক ৫% বেতন বৃদ্ধি এবং ৫% বা ১০০০ টাকা প্রনোদনা কোনোভাবে পেরে উঠছে না। কর্মচারীদের জন্য বাজার যেন একটি হাহাকারের নাম।

১৬ তম গ্রেডের একজন কর্মচারী বেতন ভাতাদি ২০২২বিশেষ সুবিধায় বৈষম্য বৃদ্ধি । কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বিশেষ সুবিধায় কিভাবে বৈষম্য সৃষ্টি হল?সরকারি কর্মচারীদের ৫% প্রনোদনা । মহার্ঘ ভাতা ও প্রনোদনার মধ্যে পার্থক্য কি?
পেনশন ১০০% সমর্পণ । শুধুমাত্র চিকিৎসা ও উৎসব ভাতাভোগীদের পারিবারিক পেনশন হয়েছে কি?বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ও প্রনোদনা । সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন কি ১০ শতাংশই বৃদ্ধি পাবে?মহার্ঘ ভাতা ২০২৩ । পে স্কেল তো নয়ই, বরং মহার্ঘ ভাতারও ঘোষণা করেনি সরকার

বিশেষ সুবিধায় বৈষম্য বৃদ্ধি । কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বিশেষ সুবিধায় কিভাবে বৈষম্য সৃষ্টি হল?

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *