একজন সচিব সরকারের মুখপাত্র এবং সরকারি নীতি নির্ধারকের ধারক ও বাহক, তাঁরা জনগণের আর্থিক সুবিধাসহ অন্যান্য যে কোন অনুদান ও সাহায্য সহযোগিতার হার নির্ধারণ করেন। অন্য দিকে জনগণের নিকট হতে আদায় ও সরকারের আয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আজ আমরা জানবো একজন সচিব বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তা মাসে কত টাকা বেতন ভাতা পান এবং আর কি কি সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন।
১। সচিব, অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্নসচিব বা সমপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা নিম্নরূপ বেতন ভাতাদি পান।
ধরি, জনাব মো: বাতেন আলী, অতিরিক্ত সচিব, তিনি গ্রেড-২ এ বেতন ভাতাদি পান।
- জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেড-০২ (৬৬০০০-৭৬৪৯০) এ মূল বেতন ৭৩,৭২০ টাকা।
- ঢাকায় চাকরিরত কালে বাড়ি ভাড়া বাবদ ৩৬৮৬০ টাকা ৫০% হার ধরে।
- চিকিৎসা ভাতা সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর জন্য ১৫০০ টাকা নির্ধারিত।
- শিক্ষা সহায়ক ভাতা (সন্তান পড়াশুনায় থাকলে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা পান), সাধারণত এ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সন্তানের বয়স ২৩ বছর অতিক্রম করে তাই তারা পান না)
তাহলে সর্বমোট বেতন ভাতাদি: ৭৩৭২০+৩৬৮৬০+১৫০০ = ১,১২,০৮০ টাকা।
২। যুগ্নসচিব বা সমপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা নিম্নরূপ বেতন ভাতাদি পান।
ধরি, জনাব মো: মিন্টু তালুকদার, যুগ্ন সচিব, তিনি গ্রেড-৪ এ বেতন ভাতাদি পান।
- জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেড-০৪ (৫০০০০-৭১২০০) এ মূল বেতন ৭১,২০০ টাকা।
- ঢাকায় চাকরিরত কালে বাড়ি ভাড়া বাবদ ৩৫৬০০ টাকা ৫০% হার ধরে।
- চিকিৎসা ভাতা সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর জন্য ১৫০০ টাকা নির্ধারিত।
- শিক্ষা সহায়ক ভাতা (সন্তান পড়াশুনায় থাকলে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা পান), সাধারণত এ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সন্তানের বয়স ২৩ বছর অতিক্রম করে তাই তারা পান না)
তাহলে সর্বমোট বেতন ভাতাদি: ৭১২০০+৩৫৬০০+১৫০০ = ১,০৮,৩০০ টাকা।
সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক গাড়ি সুবিধা ভোগ করেন। তবে তিনি চাইলে এই সেবার জন্য নগদায়নের গ্রহণ করতে পারেন।। সুদ বিহীন গাড়ি কেনার জন্য সুবিধা রাখা হয়েছে। গাড়ি কিনে ব্যবহার করলেও প্রতিমাসের জ্বালানি সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।
সরকারি টেলিফোন, সেলুলার, ফ্যাক্স ও ইন্টারনেট নীতিমালা, ২০১৮ এর ষষ্ঠ পরিচ্ছেদের অনুচ্ছেদ ২৯-এ উল্লিখিত প্রাধিকারভুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা অনুচ্ছেদ ৩৪ অনুযায়ী নির্দিষ্ট হারে মোবাইল/সেলুলার ফোন ভাতা প্রাপ্য। তারা মাসিক বেতন ভাতার সাথে উক্ত অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন। একজন সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা মাসিক ১৫০০ টাকা মোবাইল বা সেলফোন ভাতা পান।
একজন সচিব তাঁর বাসায় সর্বক্ষণিকের জন্য ৩৮০০ টাকা মূল্যের ইন্টারনেট টেলিফোন সুবিধা ভোগ করেন। তিনি চাইলে টেলিফোন সুবিধা গ্রহণ না করে ২৮০০ টাকা নগদায়ন প্রতিমাসে বেতনের সাথে গ্রহণ করতে পারেন।
ইন্টারনেট মডেম সুবিধা:
মাসিক টেলিফোন ভাতা নগদায়ন করেও তারা ইন্টারনেট সুবিধা ভোগের জন্য আবাসিক ব্যবহারের জন্য মডেম সংযোগ ও স্থাপনের জন্য ৫০০০ টাকা নগদায়ন গ্রহণে করেন।
পে স্কেল ২০১৫ জারির পর এ স্কেলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব/মূখ্য সচিব ২,০০০ (দুই হাজার) টাকা, সিনিয়র সচিব/সচিব ১,০০০ (এক হাজার) টাকা, অতিরিক্ত সচিব ৯০০ টাকা এবং যুগ্ন সচিব/অন্যান্য প্রাধিকারভূক্ত কর্মচারীগণ ৬০০ (ছয়শত) টাকা মাসিক আপ্যায়ন ভাতা প্রাপ্য হইবেন।
সরকারি কাজে দু’চার দিনের বৈদেশিক ভ্রমণে ২-৩ লক্ষ টাকা ভ্রমণ ভাতা টিএ/ডিএ গ্রহণ করেন। এটি মাসিক নয় তবে বছরে দু’একবার হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সরকারের সচিব ও সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তাগণের বিদ্যামান মাসিক ডোমেস্টিক এইড এলাউন্স ১,৩০০ টাকা হতে ৩,০০০ টাকায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু ডোমেস্টিক এলাউন্সের পরিবর্তে এখন তারা কুক ও সিকিউরিটি এলাউন্স নগদায়ণ প্রতিমাসে গ্রহণ করে থাকেন।
সচিবগণ তাদের বাসভবনের জন্য একটি বাবুর্চি পদের সুবিধা প্রদানের জন্য ১৬,০০০ টাকা কুক এলাউন্স মাসিক ভিত্তিতে পেয়ে থাকেন। যে কোড থেকে তারা সিকিউরিটি এলাউন্স ভোগ করেন।
নিরাপত্তা প্রহরী বা সিকিউরিটি এলাউন্স:
সচিবগণ তাদের বাসভবনের নিরাপত্তা সুবিধার পরিবর্তে ১৬,০০০ ১৬,০০০ টাকা সিকিউরিটি এলাউন্স পেয়ে থাকেন। যে কোড থেকে তারা সিকিউরিটি এলাউন্স ভোগ করেন।
good post