সরকারি কর্মচারীদের দাবী দাওয়া নিয়ে আগামী ০৭/০২/২০২৫ খ্রি: তারিখে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ১১-২০ ফোরাম ও সরকারি কর্মচারী উন্নয়ন-সরকারি কর্মচারীদের মহাসমাবেশ ২০২৫
সরকার কেন মহার্ঘ ভাতা থেকে সরে আসলো? সমকালের শিরোনাম ‘সরকারি চাকুরেরা আপাতত পাচ্ছেন না মহার্ঘ ভাতা’। খবরটিতে বলা হচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আপাতত পাচ্ছেন না মহার্ঘ ভাতা। জানুয়ারি থেকেই এ ভাতা কার্যকরের যে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, অর্থনীতির বর্তমান টালমাটাল পরিস্থিতিতে সেখান থেকে সরে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। মহার্ঘ ভাতা বাস্তবায়ন হলে রাশ টানা যেত না মূল্যস্ফীতির, সমাজে দেখা দিত বৈষম্য– এমন শঙ্কায় সব মহল থেকে সরকারের এ উদ্যোগ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ পটভূমিতে সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে মহার্ঘ ভাতা থেকে কিছুটা পিছিয়েছে সরকার। তবে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এলে নতুন অর্থবছরের বাজেটে বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। আজ ২৮/০১/২০২৫ তারিখ অর্থ উপদেষ্টা বলেছেন, মহার্ঘ ভাতার প্রদানের ঘোষণা তো সরকার দেয়নি। আমরা হ্যাঁ বা না কিছুই বলিনি। কঠোর আন্দোলন ছাড়া নিম্নগ্রেডের কর্মচারীদের জরুরি ভিত্তিতে আবশ্যক দাবীগুলো পূরণ হবে না।
মহার্ঘ ভাতার সিদ্ধান্ত বাতিলে কর্মচারীরা কি বলছে? গত শনিবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সরকারি চাকরিজীবী ফোরাম আয়োজিত এক প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচিতে এ হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার নিশ্চয়তা না পেলে ৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে সরকারি চাকরিজীবী ফোরাম। প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা অবিলম্বে বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে স্কেল দেওয়ার জন্য পে কমিশন গঠনের দাবি জানান। একই সঙ্গে যে সকল কর্মচারী বেতন স্কেলের শেষ ধাপে চলে গেছেন, তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি চলমান রাখার আহ্বান জানানো হয়।
মানববন্ধন কেন করা হয়? কোনো বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করা হয়। কোনো নির্দিষ্ট দাবি জানানো বা কোনো পরিবর্তন আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। একতা প্রদর্শন: কোনো বিষয়ে একমত হওয়া মানুষদের একত্রিত করে তাদের একতা প্রদর্শন করতে হয়। সাধারণত মানববন্ধন শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত হয়। মানববন্ধন সাধারণত সুসংগঠিতভাবে করা হয়। মানববন্ধন একটি শক্তিশালী ভিজুয়াল প্রতীক। সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য মানব বন্ধন করা হয়। মানবাধিকার রক্ষার জন্য এ ধরনের কার্যকর পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারি দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ । ১১-২০ গ্রেড সরকারি চাকুরিজীবী ফোরাম সম্মিলিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ মহা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হইবে
সরকারি কর্মচারীদের দাবিগুলো ২০২৫ । তাদের ৬ দফা দাবিগুলোর মধ্যে কি কি আছে?
- দাবীনামা-১: পে-কমিশন গঠন পূর্বক বৈষম্য মুক্ত ৯ম পে স্কেল ঘোষনার মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসনসহ বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারন ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে, পে-কমিশনে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারি প্রতিনিধি রাখতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য নূন্যতম ৬ হাজার টাকা মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে।
- দাবীনামা-২: যে সকল কর্মচারী নিজ গ্রেডের বেতন বৃদ্ধির শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে তাদের বাৎসরিক বেতন বৃদ্ধি নিয়মিত করতে হবে।
- দাবীনামা-৩: টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড, বেতন জ্যৈষ্ঠতা পূর্ণবহাল, ব্লক পোষ্ট নিয়মিতকরণ সহ সকল পদে পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।
- দাবীনামা-৪ : বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ ও ১১-২০ গ্রেডের চাকুরিজীবীদের রেশন ব্যবস্থা প্রবর্তন অথবা ন্যায্য মূল্যে সরকারি ভাবে পন্য সরবরাহ করতে হবে।
- দাবীনামা-৫: সকল সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর, অধিদপ্তরে কাজের ধরন অনুযায়ি পদনাম ও গ্রেড পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।
- দাবীনামা-৬: সকল স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত কর্মচারীদের গ্রাচ্যুয়িটির পরিবর্তে পেনশন প্রবর্তন সহ বিদ্যমান গ্রাচ্যুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচ্যুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ অতঃপর করতে হবে।
পে স্কেল ঘোষণা কেন জরুরি?
দ্রব্য-মূল্যের চরম উর্দ্ধোগতি ও পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার প্রাপ্ত বেতনের অর্থ দিয়ে মাসের ১৫ দিনও চলা সম্ভব হয় না। ৫ বছর পর পর পে-স্কেল প্রদানের প্রথা চালু থাকলেও ২০১৫ সালের ৮ম পে-স্কেল প্রদানের পর দীর্ঘ ৭ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এ পর্যায়ে কর্মচারিদের ৯ম পে-স্কেলসহ ভাতাদির অসংগতি দূর করা প্রত্যাশিত। অনতিবিলম্বে সকল দপ্তর অধিদপ্তরের কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন করে বেতন ও পদবী বৈষম্য দুর করে পূর্বের ন্যায় টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড পূনর্বহলসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে।
২০১৫ সালে প্রদত্ত ৮ম পে-স্কেলের সংশোধনসহ বেতন বৈষম্য নিরসন করে গ্রেড অনুযায়ী বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারণ ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে। (ILO চুক্তি অনুযায়ী বেতন নির্ধারণ করতে হবে)। এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে। সকল পদে পদোন্নতি বা ০৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। (ব্লক পোস্ট নিয়মিতকরণ করতে হবে) টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড পুর্ন:বহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা বজায় রাখতে হবে। সচিবালয়ের ন্যায় পদবী ও গ্রেড পরিবর্তন করতে হবে। সকল ভাতা বাজার চাহিদা অনুযায়ী সমন্বয় করতে হবে। নিম্ন বেতনভোগীদের জন্য রেশন, শতভাগ পেনশন চালুসহ পেনশন গ্র্যাচুইটি হার এক টাকা সমান পাঁচশত টাকা করা কাজের ধরন অনুযায়ী পদের নাম ও গ্রেট একীভূত করা। যানবাহন চলাচলে কোন রকম বিঘ্ন না ঘটিয়ে যে, এত বড় মানববন্ধব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে পালন করা হবে তা সরকারি কর্মচারীগণ বুঝিয়ে দিয়েছেন।
সূত্র: ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম