একজনন নাগরিকের মোট আয়ের ২০% বিনিয়োগ করা যাবে এবং বিনিয়োগের ১৫% পর্যন্ত রেয়াত ভোগ করা যাবে – বিনিয়োগ জনিত কর রেয়াত ২০২৪
চলতি বছর কত শতাংশ আয়কর রেয়াত পাওয়া যাবে? – আয়কর নির্দেশিকা ২০২৪-২৫ অনুসারে নির্ধারিত সময় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করলেই ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কর রেয়াত মিলবে। আর এই শর্ত শুধু পুরনো করদাতা, যিনি এর আগে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন তাঁর জন্য প্রযোজ্য হবে। তবে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ বা দান করে কর রেয়াতের সুযোগ নেওয়া যাবে।
কত টাকা আয় হলে আয়কর দিতে হবে? প্রথম ৩ লক্ষ টাকার উপর শুন্য, পরবর্তী ১ লক্ষ টাকার উপর ৫% এবং পরবর্তী ৩ লক্ষ টাকার উপর ১০% এবং পরবর্তী ৪ লক্ষ টাকার উপর ১৫% কর প্রযোজ্য। পরবর্তী ৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ২০% অবশিষ্ট মোট আয়ের উপর ২৫% আয়কর দিতে হবে। তবে, উল্লিখিত করহার করদাতার মর্যাদা নির্বিশেষে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল প্রকার তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারক করদাতার উক্ত ব্যবসা হতে অর্জিত আয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। তাছাড়া, তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা, মহিলা করদাতা, ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি (person with disability) করদাতা এবং গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত সীমা নিম্নরূপ : ১. মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতার ক্ষেত্রে ৪,০০,০০০ টাকা; ২. তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে ৪,৭৫,০০০ টাকা; ৩. গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার ক্ষেত্রে ৫,০০,০০০ টাকা।
মোট আয়ের কত % পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায়? / নভেম্বর/ ২০২৪ এর মধ্যে রিটার্ণ দাখিল না করলে বিনিয়োগ রেয়াত ৭.৫% পাওয়া যাবে
করমুক্ত সীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে, কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক প্রতিবন্ধী সন্তান/পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০,০০০ টাকা বেশি হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা ও মাতা উভয়েই করদাতা হলে যেকোনো একজন এ সুবিধা পাবেন।
আয়কর আইন, ২০২৪ । আয়কর নির্দেশিকা অনুসারে একজন করদাতার বিনিয়োগ ও দানের খাতগুলো
- জীবন বীমার প্রিমিয়াম
- সরকারি কর্মকর্তার প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাঁদা
- স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তার চাঁদা
- কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠী বীমা তহবিলে চাঁদা,
- সুপার এনুয়েশন ফান্ডে প্রদত্ত চাঁদা
- যেকোনো তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিপোজিট পেনশন স্কিমে বার্ষিক সর্বোচ্চ এক লাখ ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ
- যেকোনো সিকিউরিটিজ ক্রয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ
- বাংলাদেশের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কম্পানির শেয়ার
- স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড বা ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ
- বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ
- জাতির জনকের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে অনুদান
- জাকাত তহবিলে দান
- জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোনো দাতব্য হাসপাতালে দান।
ডিপিএসও কি বিনিয়োগের হিসাবে আসবে?
হ্যাঁ। অনেকে ডিপোজিট পেনশন স্কিম বা ডিপিএস করেন। প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ডিপিএস করলে, অর্থাৎ বছরে ৬০ হাজার পর্যন্ত টাকা রাখলেও তা কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে। এর মানে, ডিপিএস করাকেও একধরনের বিনিয়োগ হিসেবে ধরা হচ্ছে। সঞ্চয়পত্র, শেয়ারবাজার, ডিপিএসসহ মোট নয়টি খাতে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত মিলবে।
বিধানগুলো পরবর্তী করবর্ষ হতে প্রযোজ্য হবে। একইভাবে উৎসে করের পরিপালন সংক্রান্ত কোন বিধানের লঙ্ঘনে অংশ-৭ অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ বা জরিমানা আরোপের বিধান ১ জুলাই তারিখ হতেই কার্যকর হবে।আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২(২৩) অনুযায়ী “করদিবস” অর্থ- কোম্পানি ব্যতীত কোনো করদাতার ক্ষেত্রে, আয়বর্ষ সমাপ্তির পরবর্তী নভেম্বর মাসের ৩০ (ত্রিশ) তম দিন; (অর্থাৎ স্বাভাবিক ব্যক্তি, ফার্ম, ব্যক্তিসংঘ, হিন্দু অবিভক্ত পরিবার, ট্রাস্ট ও তহবিলের জন্য কর দিবস হচ্ছে ৩০ নভেম্বর)।