সার্ভিস রুলস । নীতি । পদ্ধতি । বিধি

সরকারি চাকরি আইন সংশোধন ২০২৫ । বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিতির জন্য ১৪ দিনে চাকরি নাই করা যাবে?

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৫৭ নং আইন) এর অধিকতর সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজনীয় অংশ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি  অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করিলেন- সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫

কর্মে অনুপস্থিত থেকে সভা সমাবেশ করা যাবে না? না। ২০১৮ সনের ৫৭ নং আইনে ধারা ৩৭ক এর সন্নিবেশ। —সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৫৭ নং আইন) এর ধারা ৩৭ এর পর নিম্নরূপ নূতন ধারা ৩৭ক সন্নিবেশিত হইবে, যথা:- “৩৭ক। সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও দত্ত সংক্রান্ত বিশেষ বিধান।—(১) এই আইন বা এই আইনের অধীন প্রণীত বিধিমালায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোনো সরকারি কর্মচারী— (ক) এমন কোনো কার্যে লিপ্ত হন, যাহা অনানুগত্যের (insubordination) শামিল বা যাহা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে, অথবা (খ) অন্যান্য কর্মচারীদের সহিত সমবেতভাবে বা এককভাবে, ছুটি ব্যতীত বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত, নিজ কর্ম হইতে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন, অথবা (গ) অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তাহার কর্ম হইতে অনুপস্থিত থাকিতে বা বিরত থাকিতে বা তাহার কর্তব্য পালন না করিবার নিমিত্ত উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন, অথবা (ঘ) যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তাহার কর্মে উপস্থিত হইতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অসদাচরণ এবং তজ্জন্য তিনি উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত যেকোনো দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

অনুপস্থিতির জন্য কৈফিয়ত তলবে ৭ দিনের নোটিশ দিবে? হ্যাঁ। (২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো কর্মের জন্য কোনো সরকারি কর্মচারীকে নিম্নবর্ণিত যেকোনো দণ্ড প্রদান করা যাইবে, যথা: (ক) নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ; (খ) চাকরি হইতে অপসারণ; এবং (গ) চাকরি হইতে বরখাস্ত। (৩) যেক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো অপরাধের জন্য কার্যধারা গ্রহণ করা হয়, সেইক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অথবা এতদুদ্দেশ্যে তৎকর্তৃক, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, অভিযোগ গঠন করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীকে, অতঃপর অভিযুক্ত বলিয়া অভিহিত, কেন এই ধারার অধীন দণ্ড আরোপ করা হইবে না এই মর্মে নোটিশ জারির ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাইবার নোটিশ প্রদান করিবেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হইয়া শুনানি করিতে ইচ্ছুক কি না ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি তাহাও উক্ত নোটিশে উল্লেখ করিবেন।

৭ দিনের মধ্যে জবাব না দিলে শাস্তি দিতে পারবে? হ্যাঁ। (৪) অভিযুক্ত কারণ দর্শাইলে উহা বিবেচনার পর এবং, ক্ষেত্রমত, তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে উপস্থিত হইলে শুনানি গ্রহণের পর, যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা অভিযোগ গঠনকারী ব্যক্তি অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন, অথবা যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত কারণ না দর্শাইয়া থাকেন, তাহা হইলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা অভিযোগ গঠনকারী ব্যক্তি নোটিশের মাধ্যমে নোটিশে বর্ণিত প্রস্তাবিত দণ্ড কেন আরোপ করা হইবে না, নোটিশ জারির ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে উহার কারণ দর্শাইবার নোটিশ প্রদান করিবেন।(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত কারণ দর্শাইলে উহা বিবেচনার পর অথবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারণ না দর্শাইলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (৪) এর অধীন নোটিশে বর্ণিত যেকোনো দণ্ড অভিযুক্তের উপর আরোপ করিতে পারিবেন।

সভা সমাবেশ বা ইচ্ছাকৃত অনুপস্থিতি রোধে সরকারি নতুন আইন জারি ২০২৫ / রাষ্ট্রপতি কতৃক চূড়ান্ত শাস্তির আদেশ জারির পর আর আপীল করা যাবে না

নিয়মিত উপস্থিতির ব্যত্যয়ে বেতন কর্তন আগেও ছিল? হ্যাঁ। ২৯। (১) কোনো কর্মচারী অফিস বা কর্মস্থলে উপস্থিতি সংক্রান্ত বিধির কোনো বিধান বা সরকারি আদেশ লঙ্ঘন করিলে তজ্জন্য, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিয়া, এতৎসংক্রান্ত বিধিতে উল্লিখিত বিধান অনুসারে উক্ত কর্মচারীর বেতন কর্তন করিতে পারিবে। (২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ কর্মচারী, অনুরূপ আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট পুনর্বিবেচনার আবেদন করিতে পারিবেন। (৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন পুনর্বিবেচনার কোনো আবেদন করা হইলে, আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে শুনানির যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিয়া, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ সংশোধন বা বাতিল করিতে অথবা বহাল রাখিতে পারিবে।

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ পিডিএফ ডাউনলোড

সরকারি চাকরি আইন ২০১৫ । সরকারি কর্মচারীর অনুসরণীয় নীতি, আচরণ, শৃঙ্খলা, ইত্যাদি

  • ২৮। সরকারি কর্মচারীগণের অনুসরণীয় নীতি ও মানদণ্ড প্রণয়ন
  • ২৯। নিয়মিত উপস্থিতির ব্যত্যয়ে বেতন কর্তন
  • ৩০। আচরণ ও শৃঙ্খলা
  • ৩১। বিভাগীয় কার্যধারা
  • ৩২। দণ্ড
  • ৩৩। ক্ষতিপূরণ আদায়ের পদ্ধতি
  • ৩৪। আপিল
  • ৩৫। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ আপিলযোগ্য নয়
  • ৩৬। পুনর্বিবেচনা (review)
  • ৩৭। পুনঃরীক্ষণ (revision)
  • ৩৮। বরখাস্তকৃত কর্মচারীর পুনরায় নিয়োগের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা
  • ৩৯। সাময়িক বরখাস্ত
  • ৪০। বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করিবার কারণে চাকরির অবসান। বিস্তারিত এখানে দেখুন।

৩০ দিরেন মধ্যে শাস্তির বিরুদ্ধে আপীল করতে পারবে?

যদি অভিযুক্তের নিকট নোটিশ জারি করা হয় কিংবা তাহার সর্বশেষ জ্ঞাত বাসস্থানের কোনো দৃষ্টিগোচর স্থানে লটকাইয়া জারি করা হয়, অথবা অন্যূন ২ (দুই) টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়, অথবা তাহার ই-মেইলে নোটিশ প্রেরণ করা হয়, তাহা হইলে এই ধারার অধীন নোটিশ যথাযথভাবে জারি হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে। (৭) এই ধারার অধীন কোনো সরকারি কর্মচারীকে দণ্ড প্রদান করা হইলে, তিনি দণ্ড আরোপের আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে ধারা ৩৪ এর অধীন আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত আদেশ বহাল রাখিতে, বাতিল করিতে বা পরিবর্তন করিতে পারিবে। (৮) উপ-ধারা (৭) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারার অধীন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাইবে না, তবে এইক্ষেত্রে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী দণ্ড আরোপের আদেশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে ধারা ৩৬ এর অধীন উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার (Review) জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট আবেদন করিতে পারিবেন এবং রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন, সেইরূপ আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন। (৯) উপ-ধারা (৭) এর অধীন আপিল বা, ক্ষেত্রমত, উপ-ধারা (৮) এর অধীন পুনর্বিবেচনায় (Review) প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।”।

৩২। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, বিভাগীয় কার্যধারায় দোষী সাব্যস্ত কোনো কর্মচারীকে এতৎসংক্রান্ত বিধির বিধান সাপেক্ষে, নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক লঘু বা গুরুদণ্ড আরোপ করিতে পারিবে, যথা :-
(ক) লঘু দণ্ডসমূহ – (অ) তিরস্কার;(আ) নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিতকরণ; (ই) বেতন স্কেলের নিম্নধাপে অবনমিতকরণ;(ঈ) কোনো আইন বা সরকারি আদেশ অমান্যকরণ অথবা কর্তব্যে ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণে সরকারি অর্থ বা সম্পত্তির ক্ষতি সংঘটিত হইলে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়।
(খ) গুরু দণ্ডসমূহ-(অ) নিম্ন পদ বা নিম্নতর বেতন স্কেলে অবনমিতকরণ;(আ) বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান;
(ই) চাকরি হইতে অপসারণ;(ঈ) চাকরি হইতে বরখাস্ত। 

কোন ৪টি অপরাধ করলে চাকরি যাবে?

১। সরকারি কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন, যার কারণে অন্য যে কোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে;

২। অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে, ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্মে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন;

৩। অন্য যে কোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন;

৪। যে কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন- তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।’

দোষী কর্মচারীকে

– নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ বা

– চাকরি থেকে অপসারণ বা

– চাকরি থেকে বরখাস্ত দণ্ড দেওয়া যেতে পারে।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে পোস্টের নিচে কমেন্টে করুন অথবা alaminmia.tangail@gmail.com ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *