স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন ২০২৫ । সরকারি কর্মচারীগণের দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা সংক্রান্ত কমিটি গঠিত হলো?
সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত বা সুপারিশ দিতে সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে-স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন ২০২৫
সরকার হঠাৎ কমিটি করে দিল কেন? সচিবালয়ে নানা দাবি নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য এ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই কমিটি পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত/সুপারিশ দেওয়ার জন্য সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করা হলো। কমিটি সরকারি কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত ও সুপারিশ দেবে। কমিটি প্রতি মাসে একবার সভায় মিলিত হবে এবং প্রয়োজনে কর্মচারীদের উপযুক্ত সংখ্যক প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারবে। কমিটি প্রয়োজনীয় সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
কমিটিতে কর্মচারী প্রতিনিধি আছে কি? না। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে সভাপতি করে কমিটিতে একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা-১ অধিশাখা), যুগ্ম-সচিব (বিধি-১ অধিশাখা), যুগ্ম-সচিব (মাঠ প্রশাসন, অভ্যন্তরীণ নিয়োগ ও নবনিয়োগ অধিশাখা), যুগ্ম-সচিব (প্রশাসন অধিশাখা), মন্ত্রিপরিষদ ও অর্থ বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি (যুগ্ম-সচিবের নিচে নয়), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সচিবালয় ও কল্যাণ অধিশাখা) সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
বাংলাদেশে কোন বিষয়ে কমিটি করলে তার কার্যকারিতা কেমন? না। খুব একটা আলোর মূখ দেখে না। বাংলাদেশে কোনো বিষয়ে কমিটি করলে তার কার্যকারিতা মূলত বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। কমিটির উদ্দেশ্য, গঠন, সদস্য নির্বাচন, কার্যপরিধি, এবং বাস্তবায়নের উপর এর কার্যকারিতা নির্ভর করে। সাধারণভাবে, একটি কমিটি গঠিত হওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তার কাজ সম্পন্ন করে এবং একটি রিপোর্ট পেশ করে। কমিটি তার মূল উদ্দেশ্য কতটা সফলভাবে অর্জন করতে পেরেছে তা পরিমাপ করে কার্যকারিতা বোঝা যায়। কমিটি তার কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে পেরেছে কিনা তা কার্যকারিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। কমিটির কাজগুলি কতটা মানসম্মত ও কার্যকর, তা কার্যকারিতা নির্ধারণে সাহায্য করে।
স্থায়ী কমিটি গঠন ২০২৫ । কর্মচারীদের কোন প্রতিনিধি রাখা হয়নি তবে কর্মচারীদের সাথে আলোচনার প্রয়োজন হলে তা করতে বলা হয়েছে
এ রকম কমিটি ২০১৭ সালেও করা হয়েছিল যা আলোর মুখ দেখেনি। বৈষম্য দূরীকরণে যারা প্রতিবন্ধকতা তাদের নিয়েই কমিটি গঠিত হয়ে তা আলোর মুখ দেখবে না এটিই স্বাভাবিক।
Caption: govt. order
সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবি রয়েছে, যেমন – বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন, পে-কমিশন গঠন, মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি, রেশন ব্যবস্থার প্রবর্তন, এবং অন্যায়ভাবে বরখাস্তকৃত কর্মচারীদের পুনর্বহালের দাবি।
- বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন: সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বেতন কাঠামোতে বৈষম্য দূর করতে নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবি রয়েছে।
- পে-কমিশন গঠন: পে-স্কেল বাস্তবায়নের জন্য একটি পে-কমিশন গঠন করার দাবি জানানো হয়েছে।
- মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি: বাজারের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির দাবি করা হচ্ছে।
- রেশন ব্যবস্থার প্রবর্তন: ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য রেশন ব্যবস্থার প্রবর্তন করা জরুরি, এমন দাবিও রয়েছে।
- অন্যায়ভাবে বরখাস্তকৃত কর্মচারীদের পুনর্বহাল: পতিত সরকারের আমলে অন্যায়ভাবে বরখাস্তকৃত কর্মচারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনর্বহালের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগে পত্র জারির দাবি জানানো হয়েছে।
- বেতন ও অন্যান্য ভাতা: সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি পুনর্নির্ধারণের দাবিও রয়েছে।
- অন্যান্য দাবি: আরও কিছু দাবি রয়েছে, যেমন ২০- ৫০ শতাংশ বার্ষিক বর্ধিত বেতন প্রদান, পেনশনের সুযোগ বৃদ্ধি, চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি ইত্যাদি। এই দাবিগুলো বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠন ও ফোরামের মাধ্যমে উত্থাপিত হয়েছে।
সরকারি কর্মচারীদের দাবীগুলো কি অযৌক্তিক?
না। যে দাবী নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করা হলেও তা পূরণ করা হয়নি। পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তবর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করত হবে। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে। সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদনাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে। টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূণর্বহাল সহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অধঃস্তন আদালতের কর্মচারিদের বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন স্কেলের উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
দস্যদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা: কমিটির সদস্যদের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং তাদের কাজের প্রতি মনোযোগ কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে পারে। | সমস্যার সমাধান: কমিটি যদি কোনো সমস্যা চিহ্নিত করে এবং তা সমাধানে সফল হয়, তবে তা এর কার্যকারিতা প্রমাণ করে। | রিপোর্ট ও সুপারিশ: কমিটি যদি তার কাজ শেষ করে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করে এবং সেই রিপোর্টের সুপারিশগুলো গ্রহণ করা হয়, তাহলে তা কার্যকারিতা প্রমাণ করে। |
উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ: কমিটি যদি সঠিক তথ্য এবং বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, তবে তা তার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। | কার্যক্রমের বাস্তবায়ন: কমিটির সুপারিশগুলো যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে তা এর কার্যকারিতা প্রমাণ করে। | জনসচেতনতা: কমিটি যদি জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারে, তবে তা এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। |
বহিঃসৃষ্টিক প্রভাব: কমিটি যদি অন্য কোনো বিষয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তাহলে তা এর কার্যকারিতা প্রমাণ করে। |