আসছে নতুন কর্মসূচি- মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা ঘরে বসে থাকবো না-গত ১১ বছর সরকারি চাকুরিজীবীদের বেতন না বাড়ানো সংবিধান পরিপন্থী- মৌলিক অধিকার হরণ করার শামিল-দেশের উন্নয়নের গল্প শুনে আমরা ক্লান্ত- অধিকার আদায়ে নতুন কর্মসূচির শিরোনাম হবে – ভাত দিন, নয় বিষ দিন-সরকারি কর্মচারীদের দাবী ২০২৫
সরকারি কর্মচারীদের বেতন কি বৃদ্ধি করা উচিৎ? অবশ্যই। সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করা উচিত কিনা, এটি একটি জটিল প্রশ্ন কিন্তু উত্তর খুবই সহজ। বর্তমান বেতন কর্মচারীদের জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে না। বেসরকারি খাত এবং অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বেতনের সাথে তুলনা করলেই বুঝা যায়। বেতন বৃদ্ধির দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে, যেমন মূল্যস্ফীতি এবং সরকারের ঋণের পড়বে কিন্তু কর্মচারীগণ কোনভাবেই আর চলতে পারছে না।
বেতন বৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি কি? বর্তমান বেতন অনেক কর্মচারীর জন্য জীবিকা নির্বাহে অপর্যাপ্ত। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে বেতন বৃদ্ধি করা উচিত। বেতন বৃদ্ধি করলে কর্মচারীদের মনোবল ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এটি অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি করে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়মিত আলোচিত হয়। বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি এই বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করে। সরকার সকল মতামত বিবেচনা করে একটি ন্যায্য সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা করা যায়।
মৌলিক অধিকার কি? মৌলিক অধিকার বলতে বোঝায় মানুষের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত বিশেষ কিছু অধিকার। এই অধিকারগুলো ব্যক্তির সার্বিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য। মৌলিক অধিকারের কিছু বৈশিষ্ট্য:
- এগুলো মানুষের জন্মগত অধিকার।
- এগুলো সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত।
- এগুলো মানুষের ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য অপরিহার্য।
- এই অধিকারগুলো রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত ও সংরক্ষিত।
- এই অধিকারগুলো অন্য যেকোনো অধিকারের তুলনায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
- বাংলাদেশের সংবিধানে নাগরিকদের জন্য কিছু মৌলিক অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য অধিকারগুলো হলো:
- আইনের দৃষ্টিতে সমতা।
- ধর্ম, জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ বা জন্মস্থানের কারণে বৈষম্য না করা।
- সরকারি নিয়োগে সুযোগের সমতা।
- আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার।
- জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার।
- গ্রেফতার ও আটকের ক্ষেত্রে সুরক্ষা।
- জবরদস্তিমূলক শ্রম নিষিদ্ধকরণ।
মৌলিক অধিকারগুলো মানুষের জীবন ও মর্যাদার সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এটি একটি সুস্থ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
১৫-১৬ হাজারে কিভাবে সংসার চালানো সম্ভব/ জাতীয় বেতন স্কেলে এত বৈষম্য ও অসংগতি নিরসন কি হবে না?
বিভিন্ন গ্রেডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বেতনের পার্থক্য। একই গ্রেডের বিভিন্ন পদে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বেতনের পার্থক্য। বর্তমান সরকার বৈষম্য বিরোধী অন্দোলন হতে প্রতিষ্ঠিত এবং তারা বিষয়টি গভীরভাবে ভাববেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরকারি কর্মচারীগণ ১৪-১৫ হাজার টাকা দিয়ে চলতে পারছে না। বড় ফ্যামিলির জন্য ঋণের বোঝা বাড়ছে।
Caption: info source
সরকারি কর্মচারীদের ৭ দফা দাবী ২০২৫ । দাবীগুলোর যৌক্তিকতা ও দাবী গুলো কি কি?
- দাবীনামা ০১: বৈষম্যমুক্ত ৯ম পে-স্কেল প্রদানের লক্ষে পে-কমিশন গঠন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত অন্তবর্তী সময়ে ৫০% মহার্ঘ ভাতা (১১-২০ গ্রেডের কর্মচারিদের জন্য) জানুয়ারী ২০২৫ থেকে কার্যকর করতে হবে।
- দাবীনামা ০২: যে সকল-কর্মচারিদের মূল বেতন শেষ ধাপে উন্নীত হয়েছে, তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে। বৈষম্য নিরসনের জন্য ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারি প্রতিনিধি রাখতে হবে।
- দাবীনামা ০৩: সচিবালয়ের ন্যায় সকল সরকারি-আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরের কর্মচারিদের পদ ও পদবী পরিবর্তনসহ এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করে বৈষম্য দূর করতে হবে।
- দাবীনামা ০৪: ২০১৫ সালে পে-স্কেলে হরণকৃত ৩টি টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড, দক্ষতাজনিত ২টি ইনক্রিমেন্ট ও বেতন জ্যৈষ্ঠতা পূণর্বহাল এবং সকল স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে গ্রাচুইটির পাশাপাশি পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
- দাবীনামা ০৫: ব্লক পদে কর্মরত কর্মচারিসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে এবং টেকনিক্যাল কাজে নিয়োজিত কর্মচারিদের টেকনিক্যাল পদ মর্যাদা দিতে হবে। আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে কর্মচারি নিয়োগ প্রথা বাতিল করতে হবে।
- দাবীনামা ০৬: বাজারমূল্যের ক্রমাগত উর্দ্ধগতি, জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফতির বিষয়টি বিবেচনা করে সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ। ১১-২০ গ্রেড কর্মচারিদের রেশন ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে হবে।
- দাবীনামা-০৭: উন্নয়নখাত হতে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত কর্মচারিদের প্রকল্পের চাকুরীকাল গণনা করে টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেড প্রদান করা যাবে না মর্মে নং: অম/আবি(বাস্ত-৪)/বিবিধ-২০ (উঃস্কেলঃ/০৭/৪৭ তারিখঃ ২৪-০৩-২০০৮ খ্রিঃ যোগে অর্থ মন্ত্রণালয় হতে জারীকৃত বৈষম্যমূলক আদেশ বাতিল করতে হবে।
বাংলাদেশে মূল্যস্ফিতির হার কেমন?
বাংলাদেশে মূল্যস্ফিতির হার বর্তমানে বেশ উচ্চ হারে দৌড়াচ্ছে। ২০২৫ সালেও মূল্যস্ফিতির হার ১০ শতাংশের উপরে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও অন্যান্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করছে প্রতিমাসেই। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব এখনও আছে এবং টাকা পাচারের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। টাকার পূর্বের অবমূল্যায়ন এবং ব্যাংকগুলোর নাজুক অবস্থায় ভোক্তা ও নাগরিক খারাপ অবস্থায় আছে। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে মূল্যস্ফিতি বাড়ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। মূল্যস্ফীতির হার কমাতে সরকারের পদক্ষেপের সাফল্যের উপর নির্ভর করবে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও অন্যান্য পণ্যের দামের ওঠানামা মূল্যস্ফীতির হারকে প্রভাবিত করবে।