ম্যাজিস্ট্রেট নামে বিসিএসে কোন ক্যাডার নেই। বিসিএস (প্রশাসন)-এ যারা নিয়োগ পান, তারা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার হিসেবে জয়েন করেন। প্রশাসনিক কাজই তাদের মূল কাজ এবং তাদের পদবী হল সহকারী কমিশনার (প্রশাসন), ম্যাজিস্ট্রেট নয়। তবে CRPC এর ধারা ১০(৫) অনুযায়ী সরকার চাইলে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদেরকে সীমিত আকারে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা অর্পণ করতে পারেন। তাদেরকে তখন বলা হয় “নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট” (NOT Magistrate)।
প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদেরকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে সরকার বাধ্য নয়। Executive Magistrate সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড যোগ্য অপরাধের বিচার করতে পারেন।প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ইতিমধ্যে হাইকোর্ট বিভাগ অবৈধ ঘোষণা করেছে।
নির্বাহী অফিসার কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে না এবং এ স্থলে জুডিশিয়াল অফিসার কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে। কোন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিজেকে শুধুমাত্র “ম্যাজিস্ট্রেট” হিসেবে পরিচয় দিতে পারেন না। বিসিএসের মাধ্যমে যেসব মেধাবী ও সৌভাগ্যবান ব্যক্তিরা প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে জয়েন করেন, তাদের পদবি হল- সহকারী কমিশনার (প্রশাসন)। ম্যাজিস্ট্রেট নয়। পুলিশের ASP পদমর্যাদার ব্যক্তিদেরকে কিংবা Board Examination ও বিভিন্ন পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনের সময় সরকারি কলেজের শিক্ষকদেরকেও (বিসিএস- শিক্ষা ক্যাডার) সরকার ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা অর্পণ করতে পারেন। যাকে স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বলে। তবে তারা কিন্তু নিজেদেরকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন না। যখন বলা হচ্ছে, “অমুক ভাই একজন ম্যাজিস্ট্রেট”। তার অর্থ – অমুক ভাই হলেন বিচার বিভাগে নিযুক্ত একজন বিচারক।
যার বেতন স্কেল শুরুতে ৬ষ্ঠ গ্রেড ব্যাসিক ৩৫,৫০০ টাকা (জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এর ৬ষ্ঠ গ্রেড: ৩৫৫০০-৬৭০১০)। আর যিনি বিসিএসের মাধ্যমে সহকারী কমিশনার (প্রশাসন) হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন, তার বেতন স্কেল শুরুতে ৯ম গ্রেড (ব্যাসিক ২২,০০০ টাকা)।
কোন সহকারী কমিশনার (প্রশাসন)-কে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পরিচয় দিতে হলে অবশ্যই অবশ্যই এবং অবশ্যই বলতে হবে তিনি “নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা Executive Magistrate”। শুধুমাত্র ” ম্যাজিস্ট্রেট” বলা যাবে না।একটি জেলার সর্বোচ্চ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বলা হয় ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট। জেলা প্রশাসকের উপরে সরকার ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেসির দায়িত্ব অর্পণ করে। কখনো কি শুনেছেন কোন জেলা প্রশাসক নিজেকে জেলা প্রশাসক হিসেবে পরিচয় না দিয়ে শুধু ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়েছেন? অন্যান্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যেসব রায় দেন, তাদের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হয় ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের (জেলা প্রশাসক) কাছে।
জেলা প্রশাসকের রায়ের বিরুদ্ধে এরপর আপিল করতে হয় জেলা ও দায়রা জজের নিকটে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রমোশন পেয়ে এক সময়ে জেলা ও দায়রা জজ হন। একটি জেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা যেমন জেলা প্রশাসক, তেমনি একটি জেলার সর্বোচ্চ জুডিশিয়াল অফিসার হলেন জেলা ও দায়রা জজ। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা ম্যাজিস্ট্রেট হতে হলে অবশ্যই আইন ব্যাকগ্রাউন্ডের হতে হবে। সূত্র: জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার কখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হন!
বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাগণকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৮১ এর বিধি ৫(বি) অনুযায়ী সিনিয়র স্কেল পদে (জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এর ৬ষ্ঠ গ্রেড: ৩৫৫০০-৬৭০১০) পদোন্নতি প্রদান করা হয়। বিসিএস ক্যাডারদেরকে সিনিয়র স্কেল পদে পদোন্নতি।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) এ ম্যাজিস্ট্রেট নামে কোন পদ নেই। বিসিএস (প্রসাশন) ক্যাডার পদে যাঁরা যোগদান করেন, তারা কিন্তু জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন। প্রশাসনিক কাজই তাদের মূল কাজ এবং তাদের পদবী হল সহকারী কমিশনার (প্রশাসন), মোটেই ম্যাজিস্ট্রেট নয়। তবে ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ১০(৫) ধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার প্রয়োজন মনে করলে বিসিএস (প্রসাশন) নিযুক্ত কোন ব্যক্তিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দান এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিতে পারবেন। কাজেই বিসিএস (প্রশাসন) এডমিন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্তরা মোটেই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মূল পদ নয় বরং দায়িত্বপ্রাপ্ত দায়িত্ব।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসেস পুনর্গঠন ও সংশোধন করা হয় ১৯৮০ সালে: ডাউনলোড
Thanks for all