সচিব শব্দটি শুনলেই নড়ে চড়ে বসার যোগার হয়। একজন মন্ত্রীর পড়েই সচিবের অবস্থান। অবস্থানের কথাই যখন আসলো চলুন সচিবের অবস্থান বা ক্রম সম্পর্কে একটি ধারণা প্রথমেই নিয়ে নিই। সর্বনিম্ন থেকে উপরের পদগুলো যে রকম হবে-সহকারী সচিব>সিনিয়র সহকারী সচিব>উপসচিব>যুগ্ন সচিব>অতিরিক্ত সচিব>সচিব>সিনিয়র সচিব>মন্ত্রী। 

সহকারী সচিব পদে নিয়োগ পান কারা?

সাধারণত নন-ক্যাডার হতে পদোন্নতির মাধ্যমে এ পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী ৯ম গ্রেডে (২২০০০-৫৩০৬০) সহকারী সচিব (ক্যাডার বর্হিভূত) পদে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সহকারী সচিব-ক্যাডার বর্হিভূত) পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে এমন উদাহরণ দেখুন এখানে। অন্য দিকে বিসিএস ক্যাডার হতে সরাসরি সহকারী সচিব হিসাবে নিয়োগ প্রদান করা হয়ে থাকে। মোট কথা এটিতে বিসিএস এবং নন-বিসিএস বা ক্যাডার নিয়োগ হয়। এজন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক বা স্নাতকোত্তর হলেই হয়।

সিনিয়র সহকারী সচিব পদে কিভাবে নিয়োগ হয়?

সিনিয়র সহকারী সচিব জাতীয় বেতন স্কেল মোতাবেক ৬ষ্ঠ গ্রেডের পদ। যার বেতন স্কেল ৩৫,৫০০-৬৭০১০ টাকা। বিসিএস বা ক্যাডার পদ হতে ৪ বছর পূর্ণ চাকরি করে সিনিয়র স্কেল পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে এ পদে পদোন্নতি বা নিয়োগ লাভ করতে হয়। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পদোন্নতির জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৭ মোতাবেক Bangladesh Civil Service Recruitment Rules, 1981 এর Rules 5(b) তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন কর্মচারী এই বিধিমালার বিধান অনুযায়ী পরীক্ষায় কৃতকার্য হইতে না পারিলে সার্ভিসে তাহার চাকরির ১৫ (পনের) বৎসর পূর্তিতে ৬ষ্ঠ গ্রেড এ ৩৫৫০০-৬৭০১০ টাকার স্কেলে পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হইবেন। মোট কথা সিনিয়র স্কেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সিনিয়র সচিব বা সমমান পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য যে, নন-ক্যাডার বা ক্যাডার বর্হিভূত সহকারী সচিব পদ হতেও সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা হয় উদাহরণ

উপসচিব পদে পদোন্নতি বা নিয়োগ যোগ্যতা, কখন হয়?

যে সকল কর্মকর্তার সিনিয়র স্কেল পদে ন্যূনতম ০৫ (পাঁচ) বছর চাকরিসহ সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের সদস্য হিসেবে অন্যূন ১০(দশ) বহুর চাকরি পূর্ণ হয়েছে তাদের উপসচিব পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। তবে কথা হচ্ছে প্রশাসন ক্যাডার ব্যতীত অন্যান্য ক্যাডার হতেও এ পদে পদোন্নতি বা নিয়োগ প্রদান করা হয়।

উপসচিব পদে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ তফসিল-১

ক্যাডার বর্হিভূত পদ হতে উপসচিব

বাংলাদেশ সচিবালয় (ক্যাডার বর্হিভূত গেজেটেড কর্মকর্তা এবং নন-গেজেটেড কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা ২০১৪ এর ০৫ নভেম্বর ২০২০ এর সংশোধনীতে উপ-সচিব পদে নন-ক্যাডার পর্যন্ত পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে-১৩-১৬ গ্রেডের কোন পদ হইতে ১০-১২ গ্রেডে কোনো পদে এবং ১০-১২ গ্রেডের কোন পদ হইতে ৯ম বা তদুর্ধ্ব গ্রেডের কোন পদে কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা যাইবে (তফসিল-১)

যুগ্ম সচিব পদে নিয়োগ পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা

উপসচিব হতে শুধুমাত্র ক্যাডার পদ হতে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। যুগ্ম সচিব নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩৩ নং অনুচ্ছেদের শর্তাংশে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি, উক্ত সংবিধানের ১৪০ (২) অনুচ্ছেদের বিধান মোতাবেক বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং কর্মকর্তা (আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়) নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৯৮ মোতাবেক যুগ্নসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা ২০০২ অনুসারে পদোন্নতি প্রদান করেন।

তফসিল বিধি ২(খ) দ্রষ্টব্য

সচিব পদে পদোন্নতির বিধান ২০০২

উপসচিব (ড্রাফটিং) গণের মধ্য হইতে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা হয়। পদোন্নতিযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সরকারের যুগ্ম সচিবগণের মধ্য হইতে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়। উপসচিব (ড্রাফটিং পদে অন্যূন ৫ (পাঁচ) বৎসরের চাকরি অভিজ্ঞতা প্রয়োজন পড়ে।

অতিরিক্ত সচিব পদে নিয়োগ পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা

যুগ্ম সচিব (ড্রাফটিং) গণের মধ্য হইতে পদোন্নতির মাধ্যমে এ পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। তবে যুগ্ম সচিব পদে অন্যূন ৩ (তিন) বৎসরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা প্রয়োজন পড়বে। অতিরিক্ত সচিব নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩৩ নং অনুচ্ছেদের শর্তাংশে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি, উক্ত সংবিধানের ১৪০ (২) অনুচ্ছেদের বিধান মোতাবেক বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং কর্মকর্তা (আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়) নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৯৮ মোতাবেক যুগ্নসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা ২০০২ অনুসারে পদোন্নতি প্রদান করেন।

সচিব পদে নিয়োগ পদ্ধতি ও প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা

অতিরিক্ত সচিব (ড্রাফটিং) গণের মধ্য হইতে পদোন্নতির মাধ্যমে এ পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। তবে অতিরিক্ত সচিব (ড্রাফটিং) পদে অন্যূন ২ (দুই) বৎসরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা প্রয়োজন পড়বে। সচিব নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৩৩ নং অনুচ্ছেদের শর্তাংশে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি, উক্ত সংবিধানের ১৪০ (২) অনুচ্ছেদের বিধান মোতাবেক বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে, লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং কর্মকর্তা (আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়) নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৯৮ মোতাবেক যুগ্নসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা ২০০২ অনুসারে পদোন্নতি প্রদান করেন।

বি:দ্র: একজন সচিব কোন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে সচিবালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

প্রতিটি বিষয়ের রেফারেন্স যুক্ত করা হয়েছে। তারপরও যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে আপনি পোস্টের নিচে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করতে পারেন। উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। ধন্যবাদ

পদ ও গ্রেড ভিত্তিক বেতন ও শিক্ষাগত যোগ্যতা।

admin

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

admin has 2993 posts and counting. See all posts by admin

4 thoughts on “সচিব হওয়ার যোগ্যতা ২০২২

  • অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর পোস্টের জন্য। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, সহকারী সচিব ( ড্রাফটিং) থেকে কি সচিব ( ড্রাফটিং) হওয়া যাবে? তাদের সুযোগসুবিধা কি অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সচিবদের মতই?

  • ক্যাডার হলে অবশ্যই যাবে।

  • সচিবের পর সিনিয়র সচিব। এটা কী আলাদা কোন গ্রেড ইঙ্গিত করে???

  • জি। সিনিয়র সচিব,লে জেনারেল -৮২০০০ গ্রেড-১ (সচিব) – ৭৮০০০ গ্রেড-২ অতি: সচিব -৬৬০০০

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *