আয়কর । ভ্যাট । আবগারি শুল্ক

আয়কর বাতিল প্রজ্ঞাপন ২০২৫ । বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ফান্ড/ তহবিলের উপর কি আয়কর দিতে হবে না?

বেসরকারি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মচারী কল্যাণ তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড) থেকে অর্জিত আয়ের ওপর কর প্রথমে ২৭.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে ১৫% নির্ধারিত করা হয়-বর্তমানে সেটি বাতিল করে বেসরকারি চাকরিজীবীদের করমুক্ত করা হয়েছে– আয়কর বাতিল প্রজ্ঞাপন ২০২৫

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ফান্ড/ তহবিলের উপর কি আয়কর দিতে হয়? চলতি অর্থবছর থেকে বেসরকারি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মচারী কল্যাণ তহবিল থেকে অর্জিত আয়ের ওপর কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। শুধু তাই নয়, এই আয়ের ওপর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। ২০২৩ সালের আইনে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ওপর কর আরোপের এই বিধানটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বেসরকারি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মচারী কল্যাণ তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড) থেকে অর্জিত আয়ের ওপর কর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।

অর্জিত আয়ের উপর কর দিতে হয় কেন? আয়করের মূল ধারণা হলো, সরকার জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য অর্থ সংগ্রহ করে। এই অর্থ দিয়ে রাস্তাঘাট নির্মাণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, প্রতিরক্ষা এবং আরও অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হয়। অর্জিত আয়ের উপর কর আরোপের মাধ্যমে সরকার এই ব্যয়ভার বহন করার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করে।

বেসরকারি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মচারী কল্যাণ তহবিল বা প্রভিডেন্ট ফান্ড (Provident Fund – PF) হলো একটি দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় প্রকল্প, যা কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তৈরি করা হয়। বিশেষত বেসরকারি খাতের কর্মীরা, যারা সরকারি কর্মীদের মতো পেনশন সুবিধা পান না, তাদের জন্য এটি অবসরের পর বা চাকরি ছাড়ার পর আর্থিক সহায়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

বেসরকারি পেনশন ও স্থানীয় তহবিলের উপর কর অব্যাহতি ২০২৫ । কর মওকুফ মানে হল কোনো একটি নির্দিষ্ট কর থেকে অব্যাহতি বা ছাড় পাওয়া। সহজ কথায়, সরকারের পাওনা কর থেকে মুক্তি পাওয়া। এটি সাধারণত কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে বা বিশেষ শ্রেণির মানুষের জন্য প্রযোজ্য হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) মওকুফের ক্ষেত্রে, কিছু নির্দিষ্ট এলাকার বা জমির মালিকদের এই কর দিতে হয় না।

প্রজ্ঞাপন বাতিল ও আয়কর আইনে পরিবর্তনের মাধ্যমে ট্যাক্সের ঝামেলা থেকে মুক্তি পেল বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিন্মোক্ত ফান্ড/ তহবিল সমুহঃ ১) “অনুমোদিত প্রভিডেন্ড ফান্ড” ২) “অনুমোদিত গ্রাচুইটি ফান্ড” ৩) “অনুমোদিত সুপার এনুয়েশন ফান্ড” ৪) “অনুমোদিত পেনশন ফান্ড”।

Caption: Non Govt. Staff and officer pf Tax

প্রভিডেন্ট ফান্ড কিভাবে কাজ করে? প্রভিডেন্ট ফান্ড সাধারণত একটি “অংশগ্রহণমূলক” (Contributory) স্কিম হিসেবে কাজ করে, যার অর্থ হলো কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তা উভয়ই এতে অর্থ জমা দেন। এর মূল প্রক্রিয়াটি নিচে দেওয়া হলো:

  1. কর্মচারীর অবদান: একজন কর্মচারী প্রতি মাসে তার মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ (সাধারণত ৫% থেকে ১০% বা তার বেশি, প্রতিষ্ঠানের নীতি অনুযায়ী) এই তহবিলে জমা দেন। এই অর্থ তার মাসিক বেতন থেকে কেটে নেওয়া হয়।

     

  2. নিয়োগকর্তার অবদান: নিয়োগকর্তা বা কোম্পানিও কর্মচারীর বেতনের সমপরিমাণ বা একটি নির্দিষ্ট হারে (যেমন, কর্মচারীর অবদানের সমপরিমাণ) অর্থ এই তহবিলে জমা দেয়। এটি কর্মীদের প্রতি প্রতিষ্ঠানের একটি দায়িত্বশীল পদক্ষেপ।

     

  3. বিনিয়োগ: তহবিলে জমা হওয়া মোট অর্থ (কর্মচারী ও নিয়োগকর্তার অবদান) ফেলে রাখা হয় না। বরং, এটি বিভিন্ন লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করা হয়, যেমন- সরকারি বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড, ফিক্সড ডিপোজিট ইত্যাদি। এই বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফা ফান্ডের মূল অর্থের সাথে যোগ হয়, যা সময়ের সাথে সাথে ফান্ডের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।

বেসরকারি চাকরিজীবী কি পিএফ পায়?

হ্যাঁ, বেসরকারি চাকরিজীবীরা প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) পান। সাধারণত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা তাদের মাসিক বেতন থেকে একটি নির্দিষ্ট অংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা রাখেন এবং নিয়োগকারী সংস্থাও সমপরিমাণ অর্থ জমা করে। এটি তাদের অবসর গ্রহণের পর বা চাকরি ছাড়ার পর একটি আর্থিক সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড সুবিধা থাকে, তবে এটি বাধ্যতামূলক নাও হতে পারে। কিছু প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের জন্য এই সুবিধা ঐচ্ছিকভাবে রাখা হয়, যেখানে কর্মীরা চাইলে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। কর্মীরা তাদের মাসিক বেতন থেকে একটি নির্দিষ্ট অংশ প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা করেন এবং নিয়োগকারী সংস্থাও একই পরিমাণ অর্থ জমা করে। এটি কর্মীদের জন্য একটি সঞ্চয় এবং অবসরকালীন আর্থিক সুরক্ষার ব্যবস্থা।সরকারি চাকরিজীবীরা সাধারণত পেনশন পান, যা বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য প্রযোজ্য নয়। তবে, বেসরকারি কর্মীরা প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং গ্র্যাচুইটির মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে পারেন। প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সুরক্ষা। এটি কর্মীদের চাকরি ছাড়ার পর বা অবসরের পর একটি বড় অংকের অর্থ প্রদান করে যা তাদের জীবনযাত্রায় সহায়তা করে। বর্তমানে, সরকার বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সার্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি তহবিল গঠনের পরিকল্পনা করছে, যা তাদের জন্য আরও একটি সুরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে বাংলাদেশ জার্নাল থেকে জানা যায়।

   
   
   

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *