সরকারি চাকুরিতে প্রবেশ বা আবেদন করার সময় আমরা প্রায়ই দ্বিধাদ্বন্ধে ভূগি কোনটি সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও রাষ্ট্রয়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠান। নিচের রাষ্ট্রয়াত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো উল্লেখ করা হলো। এ প্রতিষ্ঠানগুলো পেনশন সুবিধার আওতায় নেই। এককালিন গ্র্যাচুইটি ও সিপিএফ এ জমাকৃত অর্থ পেয়ে থাকেন। তবে কিছু রাষ্ট্রয়াত্ত প্রতিষ্ঠান পেনশনের সুবিধার আওতায় রয়েছে।
রাষ্ট্রয়াত্ত বলতে কি বুঝায়? সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও নীতিমালায় পরিচালিত হয়। আলাদা নিয়োগবিধি থাকে। সরকার প্রতিষ্ঠিত এবং সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে সরকার নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, যা নিজের উৎপাদিত পণ্য বা সেবামূলক ব্যবসায় থেকে অর্জিত আয় এবং সরকারি বরাদ্দের অর্থে পরিচালিত। ইংরেজিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে public sector enterprise নামে চিহ্নিত করে সরকারি অন্য দুই ধরনের সংস্থা public institution এবং government institution থেকে পৃথক করা গেলেও এই তিন শ্রেণির প্রতিষ্ঠানকে আলাদাভাবে বোঝানোর জন্যে বাংলায় যুৎসই কোন নাম নেই। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের শেয়ার মূলধনের অধিকাংশ প্রত্যক্ষভাবে সরকারের বা সরকার পরিচালিত কোন সংস্থার মালিকানায় থাকে এবং সরকার তার নিয়োগকৃত বা মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। সাংগঠনিক কাঠামোর দিক থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সাধারণত তিন ধরনের: (ক) বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান (departmental undertaking), (খ) বিধিবদ্ধ কর্পোরেশন এবং (গ) যৌথ মূলধনি (রাষ্ট্রায়ত্ত) কোম্পানি।
বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান কি রাষ্ট্রয়াত্ত প্রতিষ্ঠান? সরকারের আইন প্রণয়নকারী সংস্থার বিধান অনুসারে না হয়ে, কোন একটি সরকারি সংস্থার প্রয়োজনে তার নির্বাহী নির্দেশে সৃষ্টি হয়। এ জাতীয় সংস্থার সুনির্দিষ্ট কোন মূলধন কাঠামো বা বাজেট থাকে না। যে সরকারি সংস্থার অধীনে এদের সৃষ্টি করা হয় সেই সংস্থা থেকেই এগুলিকে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়ে তাদেরকে নির্ধারিত দায়িত্ব ও কার্যাবলি সম্পাদন করতে বলা হয়। তবে এসব প্রতিষ্ঠান সরকারি কর্মকর্তা দ্বারাই পরিচালিত এবং এদের আয়-ব্যয় সরকারের বাজেটীয় নিয়ন্ত্রণ ও নিরীক্ষার অধীন। বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করে তার মাধ্যমে সরকার মূলত রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত কার্যাবলি এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থে ন্যায্য মূল্যে পৌর সুবিধাদির ও সেবামূলক উপযোগের সরবরাহ সম্পাদন করে। বিভাগীয় প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি উদাহরণ হচ্ছে: বাংলাদেশ রেলওয়ে, ডাক বিভাগ, টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন বোর্ড, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সমরাস্ত্র কারখানা, বহুমুখী নদীশাসন প্রকল্প, শুল্ক বিভাগ, রাজস্ব বোর্ড ইত্যাদি। এসব বিভাগীয় প্রতিষ্ঠানের প্রায় সকলেই এক ধরনের একচেটিয়া অধিকার ভোগ করে।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান গঠনের ইতিহাস । ব্রিটিশ আমল হতেই কি এসব প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি?
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান গঠনের ইতিহাস Full PDF Download
List of government-owned companies of Bangladesh । নিচে কিছু রাষ্টয়াত্ত প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করা হলো ধীরে ধীরে আরও নাম যুক্ত করা হবে।
- Adamjee Jute Mills
- Ashuganj Fertilizer and Chemical Company Limited
- Ashuganj Power Station Company Limited
- Bakhrabad Gas Distribution Company Limited
- Bangladesh Agricultural Development Corporation
- Bangladesh Blade Factory Limited
- Bangladesh Chemical Industries Corporation
- Bangladesh Communication Satellite Company Limited
- Bangladesh Diesel Plant Limited
- Bangladesh Film Development Corporation
- Bangladesh Fisheries Development Corporation
- Bangladesh Forest Industries Development Corporation
- Bangladesh Gas Fields Company Limited
- Bangladesh House Building Finance Corporation
- Bangladesh Infrastructure Finance Fund Limited
- Bangladesh Inland Water Transport Corporation
- Bangladesh Insulator and Sanitaryware Factory Limited
- Bangladesh Jute Mills Corporation
- Bangladesh Machine Tools Factory
- Bangladesh Municipal Development Fund[1]
- Bangladesh Ordnance Factories
- Bangladesh Overseas Employment and Services Limited
- Bangladesh Parjatan Corporation
- Bangladesh Petroleum Exploration and Production Company Limited
- Bangladesh Shipping Corporation
- Bangladesh Small and Cottage Industries Corporation
- Bangladesh Steel and Engineering Corporation
- Bangladesh Submarine Cable Company Limited
- Bangladesh Sugar and Food Industries Corporation
- Bangladesh Telecommunications Company Limited
- Bangladesh Textile Mills Corporation
- Bangladesh Power Development Board
- Carew & Co (Bangladesh) Ltd
- Chittagong Dry Dock Limited
- Chittagong Urea Fertilizer Limited
- Coal Power Generation Company Bangladesh Limited
- Dhaka Electric Supply Company Limited
- Dhaka Power Distribution Company
- Dockyard and Engineering Works Limited
- Eastern Cables Limited
- Eastern Refinery Limited
- Eastern Tubes Limited
- Eastern Lubricants Blenders Limited
- Electricity Generation Company of Bangladesh
- Essential Drugs Company
- Gas Transmission Company Limited
- Gazi Wires Limited
- Infrastructure Development Company Limited
- Infrastructure Investment Facilitation Company
- Investment Corporation of Bangladesh
- Jamuna Fertilizer Company Limited
- Jiban Bima Corporation
- Karnaphuli Fertilizer Company Limited
- Karnaphuli Gas Distribution Company Limited
- Karnaphuli Paper Mills
- Milk Vita
- Miracle Industries Limited
- MJLBL
- National Tubes Limited
- North West Zone Power Distribution Company Limited
- Northern Electricity Supply Company PLC
- Northwest Power Generation Company
- Nuclear Power Plant Company Bangladesh Limited
- Palli Karma Sahayak Foundation
- Petrobangla
- Power Grid Company of Bangladesh Limited
- Pragoti
- Padma Oil Company Limited
- Rupantarita Prakritik Gas Company Limited
- Rural Electrification Board
- Rural Power Company Limited
- Sundarban Gas Distribution Company Limited
- Sadharan Bima Corporation
- Shahjalal Fertiliser Factory
- Shyampur Sugar Mills
- Sylhet Gas Fields Limited
- Telephone Shilpa Sangstha
- Teletalk Bangladesh Limited
- Trading Corporation of Bangladesh
- Triple Super Phosphate Complex Limited
- Titas Gas Transmission and Distribution Company Limited
- Usmania Glass Sheet Factory Limited
- West Zone Power Distribution Company Limited
- বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ
- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিঃ
- বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন
- বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড
- হোটেলস্ ইন্টারন্যাশনাল লিঃ
- বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড
- সোনালি ব্যাংক লিমিটেড
- জনতা ব্যাংক লিমিটেড
- অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড
- রুপালি ব্যাংক লিমিটেড
- এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)
- সাধারণ বীমা কর্পোরেশন
- বাংলাদেশ রেলওয়ে
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
Updating…………………………………………………………………
বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান বলতে কি বুঝায়? বিধিবদ্ধ কর্পোরেশন গঠিত হয় আইনের বিধান (অধ্যাদেশ, সংসদ প্রণীত আইন) অনুসারে এবং এগুলি সাধারণত অর্থনৈতিক বা পণ্য উৎপাদনমূলক কাজে নিয়োজিত থাকে। সরকারিভাবে সৃষ্টি হলেও এগুলি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং এদের অবস্থান সরকারি শাসন কাঠামোর বাইরে। বাংলাদেশ ব্যাংক, রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন ও সাধারণ বীমা কোম্পানি, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ইত্যাদি এ জাতীয় কর্পোরেশন। সরকার এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের শেয়ার মূলধনের মালিক হয়ে এদের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে। এরা যে স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে তার আওতায় এদের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি নির্দিষ্ট আইন এবং বিধিবদ্ধভাবে প্রণীত নিয়মকানুন দ্বারা সুনির্ধারিত করা থাকে। তবে এদের ব্যয় নির্বাহের জন্য অর্থসংস্থানের দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় কোষাগারের নয় বলে এরা নিজেদের মুনাফা দিয়ে সংরক্ষিত তহবিল গড়তে পারে এবং সংবিধি অনুযায়ী তা ব্যয় করতে পারে। আইন দ্বারা গঠিত বিধিবদ্ধ কর্পোরেশনকে পরিস্থিতি পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে ইচ্ছামতো ঢেলে সাজানো যায় না, এর কোন পরিবর্তন আনতে হলে তা শুধু আইন পরিবর্তনের পরই করা সম্ভব।
যৌথ মূলধনি কোম্পানি কোনগুলো?
যৌথ মূলধনি কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয় কোম্পানি আইনের বিধান অনুসারে। কাজের ধরন বাণিজ্যিক হলে সেখানে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা সবচেয়ে সহজ। যৌথ মূলধনি কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কর্মকান্ড মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ না করলেও এদের বাজেট সরকার দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়। এসবের ব্যবস্থাপনায় থাকে একটি পরিচালকমন্ডলীর বোর্ড এবং এগুলির হিসাব কোম্পানি আইনের আওতায় নিরীক্ষিত হয়। সরকারই সম্পূর্ণ মূলধন দিয়ে এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান গঠন করে। তবে কোন কোন সময় মিশ্র মালিকানায়ও এসবের প্রতিষ্ঠা হতে পারে। এগুলি সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত; বিনিয়োগ, অর্থসংস্থান, কর্মচারী ব্যবস্থাপনা ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে এদের নিজেদের সিদ্ধান্তই যথেষ্ট। বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের কয়েকটি যৌথ মূলধনি কোম্পানি হচ্ছে বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক, বাংলাদেশ শিল্পঋণ সংস্থা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ ইত্যাদি।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান মূলত অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্য নিয়েই সৃষ্টি করা হয়েছিল। বর্তমানে এ জাতীয় প্রতিষ্ঠান প্রায় সকল খাতে বিদ্যমান এবং এগুলি বিপুল পরিমাণ পরিসম্পদ ব্যবহার করে থাকে। ১৯৮০-৮১ সালে দেশের শিল্পখাতে বিনিয়োগকৃত মোট ৪৩৮.৫ কোটি টাকার তিন-চতুর্থাংশই ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে।
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান মাসিক পেনশনের আওতায় নেই।