মাসিক বাড়ি ভাড়ার ২০২৫ । সরকারি কর্মচারীদের বাসা ভাড়া এত কম কেন?
বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা সংক্রান্ত নীতিমালা “চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৫” দ্বারা নির্ধারিত হয়। এই নীতিমালা অনুযায়ী, কর্মচারীদের মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা হিসেবে প্রদান করা হয়, যা কর্মস্থলের স্থানভেদে ভিন্ন হয়– মাসিক বাড়ি ভাড়ার ২০২৫
এলাকাভিত্তিক পার্থক্য থাকে? হ্যাঁ। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা: মূল বেতনের ৫০% থেকে ৬৫%। বিভাগীয় শহর (গাজীপুর, কক্সবাজার, সাভার সহ): মূল বেতনের ৪৫% থেকে ৬৫%। জেলা শহর: মূল বেতনের ৪০% থেকে ৬০%। অন্যান্য এলাকা: মূল বেতনের ৩৫% থেকে ৫৫%। যে সকল কর্মচারী সরকারি বাসস্থানে বসবাস করেন, তারা বাড়ি ভাড়া ভাতা পান না। উল্টো, তাদের মূল বেতনের একটি অংশ (পূর্বে ৭.৫%) সার্ভিস চার্জ হিসেবে কাটা হতো, তবে ২০১৫ সালের বেতন স্কেল অনুযায়ী এই চার্জ রহিত করা হয়েছে। তবে, এক্ষেত্রে কর্মচারীকে নিজেই বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বহন করতে হবে।
স্বামী-স্ত্রী উভয় সরকারি কর্মচারী হলে দুজনেই বাসা ভাড়া পান? হ্যাঁ। যদি স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, ব্যাংক, বীমা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী হন এবং তারা একত্রে সরকারি বাসস্থানে বসবাস করেন, তাহলে যার নামে বাসস্থান বরাদ্দ রয়েছে, তার বেতন বিল থেকে বাড়ি ভাড়া নির্ধারিত হারে কাটা হবে এবং তিনি কোন বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন না। অপরজন প্রচলিত বিধান মোতাবেক বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রাপ্য হবেন। যদি কোন কর্মচারীর নিজ নামে অথবা তার উপর নির্ভরশীল কারো নামে এক বা একাধিক বাড়ি থাকে, সেক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক সময় সময় বাসস্থান বরাদ্দ সম্পর্কে জারি করা আদেশ প্রযোজ্য হবে।
কর্মস্থলে মেস/হোস্টেলে অবস্থান থাকতে হবে কি? হ্যাঁ। জনস্বার্থে সংশ্লিষ্ট অফিস কর্তৃক কোন কর্মচারীকে কর্মস্থলে অথবা তৎনিকটস্থ মেস, হোস্টেল, রেস্ট হাউজ, ডরমেটরী বা ডাকবাংলোয় একক সীট কিংবা একক কক্ষের বরাদ্দ থাকলে, এটি সরকারি বাসস্থান বরাদ্দ হিসেবে গণ্য হবে না এবং এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বাড়ি ভাড়া ভাতা পাওয়ার অধিকারী হবেন। তবে, উক্ত একক সীট বা একক কক্ষের জন্য নির্ধারিত ভাড়া ও অন্যান্য আর্থিক দায় তাকে প্রদান করতে হবে।সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যদি তাদের জন্য নির্ধারিত সরকারি বাসস্থানে না থাকেন, তাহলে তাদের বাড়ি ভাড়া ভাতা কেটে নেওয়া হবে। এই নির্দেশনার উদ্দেশ্য হলো সরকারি কোয়ার্টারগুলো খালি পড়ে থাকা রোধ করা এবং সেগুলোর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে এমন নির্দেশনা দেওয়া হলেও পরবর্তীতে তা আর কার্যকর হয়নি।
সরকারি কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া তাদের মূল বেতনের একটি অংশ হিসাবে দেওয়া হয়। সাধারণত, এটি মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ হারে নির্ধারিত হয়।
সরকারি কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া এত কম কেন? সরকারি কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া কম হওয়ার প্রধান কারণ হলো, তাদের বাড়ি ভাড়া একটি নির্দিষ্ট নিয়ম ও কাঠামো অনুযায়ী প্রদান করা হয়। এই নিয়ম সাধারণত সরকারি বেতন কাঠামো এবং বিদ্যমান বিধি-বিধানের সাথে সম্পর্কিত। এছাড়াও, সরকারি কর্মচারীদের জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সরকার কিছু ক্ষেত্রে ভর্তুকি বা বিশেষ ছাড় দিয়ে থাকে। সরকার অনেক সময় সরকারি কর্মচারীদের জন্য আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে ভর্তুকি বা ছাড় দিয়ে থাকে। এটি তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে সাহায্য করে। অনেক সরকারি কর্মচারী সরকারি আবাসনে বসবাস করার সুযোগ পান, যেখানে ভাড়া সাধারণত বাজারের চেয়ে কম হয়ে থাকে। বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত নিয়ম ও বিধি-বিধান সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারিত হয়, যা বাজারের প্রচলিত ভাড়ার চেয়ে কম হতে পারে। সরকারি কর্মচারীদের জীবনযাত্রার ব্যয় অন্যান্য পেশার মানুষের তুলনায় কম রাখার জন্য এই সুবিধা দেওয়া হয়।
সরকারি বাড়ি ভাড়ার তালিকা ২০২৫ । যে হারে সরকারি কর্মচারীদের বাসা ভাড়া নির্ধারণ করা হয় (Chart সহ)
সরকারি বাড়ি ভাড়া ২০২৫ । হ্যাঁ, সরকারি বাড়ি ভাড়ায় (অর্থাৎ সরকারি বাড়ি ভাড়া ভাতা নিয়ে) বাইরে বাসা পাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারীদের জন্য এটাই সাধারণ নিয়ম। বাসা বরাদ্দ নীতিমালা অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মচারী যদি সরকারি বাসস্থানে বসবাস না করেন, তাহলে তিনি তার মূল বেতনের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা হিসেবে পান। এই ভাতা নিয়েই কর্মচারীরা নিজেদের পছন্দমতো বেসরকারি বাসা ভাড়া করে থাকেন।
- বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রাপ্তি: যদি কোনো সরকারি কর্মচারী সরকারি কোয়ার্টার বা আবাসন সুবিধা গ্রহণ না করেন, তবে তিনি ‘চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৫’ অনুযায়ী তার পদমর্যাদা ও কর্মস্থলের স্থানভেদে নির্ধারিত হারে বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রাপ্য হন।
- নিজস্ব বাড়ি থাকলে: যদি কোনো কর্মচারীর নিজ নামে অথবা তার উপর নির্ভরশীল কারো নামে বাড়ি থাকে, সেক্ষেত্রেও কিছু নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে সরকারি বাসস্থান বরাদ্দ সম্পর্কে জারি করা আদেশ প্রযোজ্য হতে পারে। তবে, তিনি যদি সরকারি বাসস্থানে না থাকেন, তবে তিনি বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন।
- সরকারি বাসস্থানে না থাকার নির্দেশনা: যদি কোনো সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নামে সরকারি বাসা বরাদ্দ থাকে এবং তিনি সেই বাসায় না থাকেন, তাহলে তিনি বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন না। এর উদ্দেশ্য হলো সরকারি কোয়ার্টারগুলো খালি পড়ে থাকা রোধ করা এবং সেগুলোর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। অর্থাৎ, যদি আপনার নামে সরকারি বাসা বরাদ্দ হয়ে থাকে, আপনাকে হয় সেই বাসায় থাকতে হবে, অথবা বাসা বরাদ্দ বাতিল করে বাইরে বাসা ভাড়া নিতে হবে (এক্ষেত্রে আপনি বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন)। যদি বরাদ্দ নিয়েও সরকারি বাসায় না থাকেন, তাহলে আপনার বাড়ি ভাড়া ভাতা কেটে নেওয়া হবে। পরবর্তীতে এ নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি।
- সুতরাং, অধিকাংশ সরকারি কর্মচারীই সরকারি আবাসন সুবিধা পান না এবং তারা সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বাড়ি ভাড়া ভাতা ব্যবহার করে বাইরে ব্যক্তিগত বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। তবে, আপনার নামে যদি সরকারি বাসা বরাদ্দ হয়, তাহলে সেই বাসায় বসবাস করা বাধ্যতামূলক হয়ে যাবে, অন্যথায় বাড়ি ভাড়া ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে।
প্রতি বছর মুল বেতনের সাথে বাড়ি ভাড়াও কি বাড়ে?
হ্যাঁ। প্রতি বছর ইনক্রিমেন্ট বা বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির পর বাড়ি ভাড়া পুনঃনির্ধারনের প্রয়োজন পড়ে। বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য “চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৫” এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত অন্যান্য প্রজ্ঞাপনে পাওয়া যাবে। সাধারণ ভাড়াটিয়াদের জন্য “বাড়ী ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১” প্রযোজ্য। এই তথ্যগুলো সরকারি কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতার বর্তমান নীতিমালা সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা দেয়। সরকারি কর্মচারীদের জন্য বাসা বরাদ্দ নীতিমালা হল সরকারি কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা প্রদানের জন্য সরকারের প্রণীত নিয়ম ও পদ্ধতি। এই নীতিমালায় বাসা বরাদ্দের যোগ্যতা, পদ্ধতি, ভাড়া, রক্ষণাবেক্ষণ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় উল্লেখ করা থাকে। কোন কোন গ্রেডের কর্মচারী বাসা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য, তা এই নীতিমালায় উল্লেখ থাকে। বাসা বরাদ্দের জন্য আবেদন করার পদ্ধতি, বাছাই প্রক্রিয়া এবং তালিকাভুক্তি এই অংশে বর্ণনা করা হয়। বাসা বরাদ্দের ক্ষেত্রে মাসিক ভাড়া কত হবে, তা উল্লেখ থাকে। বাসা এবং আবাসনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কার উপর ন্যস্ত থাকবে, তাও এই নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়।বাসা ব্যবহারের নিয়মাবলী, স্থানান্তর এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নিয়মাবলী এই অংশে আলোচনা করা হয়।