সর্বজনীন পেনশন স্কিম ২০২৪

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ আইন ২০২৩ । জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তির পর একজন চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বৎসর চাঁদা প্রদান সাপেক্ষে মাসিক পেনশন পাওয়ার যােগ্যতা অর্জন করিবে এবং চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জিভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন প্রদান করা হইবে। কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মাসিক সর্বনিম্ন চাঁদার হার নির্ধারিত হইবে। মাসিক এবং ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা প্রদান করিতে পারিবে এবং অগ্রীম ও কিস্তিতে জমা প্রদানের সুযােগ থাকিবে।মাসিক চাঁদা প্রদানে বিলম্ব হইলে, বিলম্ব ফি সহ বকেয়া চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে পেনশন হিসাব সচল রাখা যাইবে এবং উক্ত বিলম্ব ফি চাঁদাদাতার নিজ হিসাবে জমা হইবে। পেনশনারগণ আজীবন অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পেনশন সুবিধা ভােগ করিবেন। পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে পেনশনারের নমিনি অবশিষ্ট সময় কালের (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্য হইবেন। কমপক্ষে ১০ বৎসর চাঁদা প্রদান করিবার পূর্বে চাঁদাদাতা মৃত্যুবরণ করিলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তাঁহার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হইবে। পেনশন তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোন পর্যায়ে এককালীন উত্তোলনের সুযােগ থাকিবে না। তবে চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমাকৃত অর্থের সৰ্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাইবে যাহা ধার্যকৃত ফি সহ পরিশােধ করিতে হইবে। ফি সহ পরিশােধিত অর্থ চাঁদাদাতার নিজ হিসাবেই জমা হইবে।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২২ (খসড়া)

যেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিংবা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত আয়ত্তাতীত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে নাগরিকগণের সরকারি সাহায্যলাভের অধিকার রহিয়াছে; এবং

যেহেতু দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিজনিত কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগােষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনয়ন করা প্রয়ােজন; এবং

যেহেতু ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনসংখ্যার হ্রাস জনিত কারণে নির্ভরশীলতার হার বৃদ্ধি পাইবে; এবং

যেহেতু পেনশন তহবিলের ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ, পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং এতদসংক্রান্ত অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদনের নিমিত্ত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়ােজনীয়;

সেহেতু, এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল: –

১। (১) সংক্ষিপ্ত শিরােনাম ও প্রবর্তন ও প্রয়ােগ।- এই আইন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০২২ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।।

২। সংজ্ঞাসমুহ।- (১) বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(ক) “অর্থ বৎসর” অর্থ জুলাই মাসের প্রথম দিবসে যে বৎসরের আরম্ভ; 

(খ) “গভর্নিং বাের্ড” অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত কোন বাের্ড; 

(গ) “কর্তৃপক্ষ” অর্থ ধারা ৩ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ; 

(ঘ) “নির্বাহী চেয়ারম্যান” অর্থ ধারা ৫ এর উপ-ধারা (২) এর অধীন নিযুক্ত জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান; 

(ঙ) “ব্যক্তি পেনশন হিসাব” অর্থ সর্বজনীন পেনশন সিস্টেমের শর্তাবলি অনুসরণে চুক্তি অনুযায়ী চালু একজন চাঁদাদাতার হিসাব; 

(চ) “সদস্য” অর্থ কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্য; 

(ছ) “পেনশন তহবিল” অর্থ ধারা ১৩ এ বর্ণিত তহবিলকে বুঝাবে; 

(জ) “তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটি” অর্থ ধারা ২০ এর উপধারা (১) অনুযায়ী গঠিত কমিটি; 

(ঝ) “পেনশনের সম্মুখ অফিস” অর্থ পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণকারী সদস্যগনের মাসিক চাঁদা সংগ্রহ এবং সংগৃহিত চাঁদা পেনশন তহবিলে জমা করণের কাজে নিয়ােজিত অফিস; 

(ঞ) “নির্ধারিত” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত, বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক লিখিত আদেশ দ্বারা নির্ধারিত; 

(ট) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীনে সরকারের অনুমােদনক্রমে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত প্রবিধান; 

(ঠ) “স্কিম” অর্থ এই আইনের অধীনে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমােদিত পেনশন স্কিম; 

(ড) “চাঁদাদাতা” বলিতে একজন ব্যক্তিকে বুঝাইবে যিনি পেনশন স্কীমে চাঁদা প্রদান করিবেন;

(ঢ) “তফসিলি ব্যাংক” অর্থ পেনশন তহবিল পরিচালনার জন্য দেশীয় মালিকানাধীন এক বা একাধিক তফসিলি ব্যাংক; 

(ণ) “দুস্থ চাঁদাদাতা” অর্থ পেনশন স্কীমে নিয়মিত চাঁদা প্রদানকারি যিনি দুর্ঘটনা বা শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে স্থায়ীভাবে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন; 

(ত) “সরকার” অর্থ এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগকে বুঝাইবে; 

(থ) “বিধিমালা” অর্থ এই আইনের অধীন সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধিমালা; এবং 

(দ) “বার্ষিক প্রতিবেদন” অর্থ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম প্রতিফলনপূর্বক বাৎসরিক ভিত্তিতে প্রকাশকৃত দলিল।

(২) যে সকল শব্দ এবং অভিব্যক্তি এই আইনে ব্যবহৃত হইয়াছে এবং সংজ্ঞায়িত হয়নি, অথচ নিম্নোক্ত আইনসমূহে সংজ্ঞায়িত আছে

(ক) বীমা আইন, ২০১০;

(খ) কোম্পানি আইন, ১৯৯৪; এবং

(গ) সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩, তাহা এই আইনের ক্ষেত্রেও সমভাবে ব্যবহৃত হইবে।

৩। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা।- (১) এই আইন কার্যকরের পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ নামে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করিবে।

(২) কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং উহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও সাধারণ সীলমােহর থাকিবে এবং এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর বা অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার বা হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা নিজ নাম ব্যবহারে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা ২০২৩

জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা ২০২৩

সূত্র দেখুন: ডাউনলোড

৪। কর্তৃপক্ষের কার্যালয়।- কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকিবে এবং কর্তৃপক্ষ প্রয়ােজনবােধে, সরকারের পূর্বানুমােদনক্রমে, দেশের যে কোন স্থানে উহার শাখা কার্যালয় স্থাপন করিতে পারিবে।

৫। কর্তৃপক্ষের গঠন, ইত্যাদি।- (১) একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য সমন্বয়ে কর্তৃপক্ষ গঠিত হইবে।

(২) নির্বাহী চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন এবং তাহাদের চাকরির মেয়াদ ও শর্ত সরকার কর্তৃক এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে। তবে বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত গেজেটে আদেশ জারীর মাধ্যমে সরকার নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(৩) কর্তৃপক্ষসহ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার সহিত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্যয় সরকার নির্বাহ করিবে।

৬। কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কার্যাবলী।- (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে কর্তৃপক্ষ এই আইনের বিধানাবলী অনুসরণপূর্বক প্রয়ােজনীয় সকল ক্ষমতা প্রয়ােগের মাধ্যমে নিম্নরূপ কার্যাবলী সম্পাদন করিবে, যথা:

(ক) সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালু, ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ;

(খ) সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতির আওতায় উহার চাঁদাদাতাগণের স্বার্থ সংরক্ষণ; 

(গ) সর্বজনীন পেনশন স্কিম গ্রহণ, স্কিমে প্রবেশ যােগ্যতা, শর্তসমূহ নির্ধারণ, অনুমােদন, স্কিম পরিচালনা, তত্ত্বাবধান এবং পেনশন তহবিলের পুঞ্জিভূত জমার বিনিয়ােগ ব্যবস্থাপনা; 

(ঘ) পেনশন স্কীমে চাঁদাদাতাগণের জমাকৃত অর্থের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ; 

(ঙ) চাঁদাদাতাগণের অভিযােগ নিষ্পত্তি ও প্রতিকার প্রদান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের অনুমােদন ক্রমে প্রয়ােজনীয় প্রবিধান প্রণয়ন; 

(চ) কর্তৃপক্ষ স্বয়ং অথবা অপর কোনাে কার্যালয় বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে কর্তৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা, বাস্তবায়ন বা উহার বিষয়ে কোন গবেষণার নিমিত্ত তথ্য সংগ্রহ বা গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা; 

(ছ) জনসাধারণের মধ্যে সর্বজনীন পেনশনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য, অবসরকালীন নিরাপত্তা ও পেনশন সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান ও বহুল প্রচারের মাধ্যমে পেনশন স্কীমে অংশগ্রহণ উৎসাহিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ; 

(ঝ) সর্বজনীন পেনশন স্কীমের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মচারীগণের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়ােজনীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ; 

(ঞ) সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ফি বা অন্যান্য চার্জ নির্ধারণ; 

(ট) নির্ধারিত স্থান এবং সময়ে, হিসাব সংরক্ষণ বই ও অন্যান্য দালিলিক কাগজপত্র প্রকাশ; এবং 

(ঠ) সর্বজনীন পেনশন বা পেনশন তহবিল বা উহার সহিত সংশ্লিষ্ট কোনাে বিষয়ে কোন অভিযােগ বা বিরােধ নিষ্পত্তির বা অনিয়ম সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণ।

(২) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ সরকারের অনুমােদনক্রমে নিজ নামে ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে।
(৩) সর্বজনীন পেনশন স্কিম বা এই স্কিমের আওতাধীন কোন কার্যক্রম, স্কিম অথবা প্রকল্পের সহিত সংশ্লিষ্ট কোনাে ব্যক্তি বা কর্মচারী এই আইনের কোনাে ধারা অথবা উহার অধীনে প্রণীত কোনাে বিধি বা প্রবিধানের কোনাে বিধান লঙ্ঘন করিলে আদালতের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি বা কর্মচারীর এক বা একাধিক ব্যাংক হিসাব ক্রোক করিতে পারিবে।

 

৭। গভর্নিং বাের্ড।- (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকার, প্রজ্ঞাপন দ্বারা অর্থমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করিয়া নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি পেনশন গভর্নিং বাের্ড গঠন করিবে, যথা: –
(১) গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক; 

(২) সচিব/সিনিয়র সচিব, অর্থ বিভাগ 

(৩) সচিব/সিনিয়র সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ 

(৪) চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বাের্ড; 

(৫) সচিব/সিনিয়র সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়; 

(৬) সচিব/সিনিয়র সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়;

(খ) সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতির আওতায় উহার চাঁদাদাতাগণের স্বার্থ সংরক্ষণ; 

(গ) সর্বজনীন পেনশন স্কিম গ্রহণ, স্কিমে প্রবেশ যােগ্যতা, শর্তসমূহ নির্ধারণ, অনুমােদন, স্কিম পরিচালনা, তত্ত্বাবধান এবং পেনশন তহবিলের পুঞ্জিভূত জমার বিনিয়ােগ ব্যবস্থাপনা; 

(ঘ) পেনশন স্কীমে চাঁদাদাতাগণের জমাকৃত অর্থের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ; 

(ঙ) চাঁদাদাতাগণের অভিযােগ নিষ্পত্তি ও প্রতিকার প্রদান নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের অনুমােদন ক্রমে প্রয়ােজনীয় প্রবিধান প্রণয়ন; 

(চ) কর্তৃপক্ষ স্বয়ং অথবা অপর কোনাে কার্যালয় বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে কর্তৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা, বাস্তবায়ন বা উহার বিষয়ে কোন গবেষণার নিমিত্ত তথ্য সংগ্রহ বা গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা; 

(ছ) জনসাধারণের মধ্যে সর্বজনীন পেনশনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য, অবসরকালীন নিরাপত্তা ও পেনশন সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান ও বহুল প্রচারের মাধ্যমে পেনশন স্কীমে অংশগ্রহণ উৎসাহিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ;

(ঝ) সর্বজনীন পেনশন স্কীমের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মচারীগণের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়ােজনীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ;

(ঞ) সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ফি বা অন্যান্য চার্জ নির্ধারণ; (ট) নির্ধারিত স্থান এবং সময়ে, হিসাব সংরক্ষণ বই ও অন্যান্য দালিলিক কাগজপত্র প্রকাশ; এবং

(ঠ) সর্বজনীন পেনশন বা পেনশন তহবিল বা উহার সহিত সংশ্লিষ্ট কোনাে বিষয়ে কোন অভিযােগ বা বিরােধ নিষ্পত্তির বা অনিয়ম সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণ।

(২) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ সরকারের অনুমােদনক্রমে নিজ নামে ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৩) সর্বজনীন পেনশন স্কিম বা এই স্কিমের আওতাধীন কোন কার্যক্রম, স্কিম অথবা প্রকল্পের সহিত সংশ্লিষ্ট কোনাে ব্যক্তি বা কর্মচারী এই আইনের কোনাে ধারা অথবা উহার অধীনে প্রণীত কোনাে বিধি বা প্রবিধানের কোনাে বিধান লঙ্ঘন করিলে আদালতের মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি বা কর্মচারীর এক বা একাধিক ব্যাংক হিসাব ক্রোক করিতে পারিবে।

৭। গভর্নিং বাের্ড।- (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকার, প্রজ্ঞাপন দ্বারা অর্থমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করিয়া নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে একটি পেনশন গভর্নিং বাের্ড গঠন করিবে, যথা: –

(১) গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক; 

(২) সচিব/সিনিয়র সচিব, অর্থ বিভাগ 

(৩) সচিব/সিনিয়র সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ 

(৪) চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বাের্ড; 

(৫) সচিব/সিনিয়র সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়; 

(৬) সচিব/সিনিয়র সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়;

(৭) সচিব/সিনিয়র সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; 

(৮) সচিব/সিনিয়র সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়; 

(৯) সচিব/সিনিয়র সচিব, ডাক ও টেলিযােগাযােগ বিভাগ; 

(১০) সচিব/সিনিয়র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় 

(১১) চেয়ারম্যান, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন; 

(১২) সভাপতি, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই); 

(১৩) সভাপতি, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন; 

(১৪) সভাপতি, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডব্লিউসিসিআই);

(১৫) নির্বাহী চেয়ারম্যান, যিনি ইহার সদস্য সচিবও হইবেন। (২) গভর্নিং বাের্ড, প্রয়ােজনে, যে কোনাে ব্যক্তিকে গভর্নিং বাের্ডের সদস্য হিসাবে কো-অপ্ট করিতে পারিবে বা সভায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে।

(৩) গভর্নিং বাের্ড বৎসরে অন্ন চারটি সভা অনুষ্ঠান করিবে।।

(4) নির্বাহী চেয়ারম্যান গভর্নিং বাের্ডের চেয়ারম্যানের সহিত পরামর্শক্রমে, গভর্নিং বাের্ডের সভা আহবান করিবেন এবং এইরূপ সভা গভর্নিং বাের্ডের চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও স্থানে অনুষ্ঠিত হইবে;

(৫) গভর্নিং বাের্ড সভার সংখ্যা, কোরাম, নােটিশ জারি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া, ইত্যাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

৮। গভর্নিং বাের্ডের কার্যাবলি।- (১) গভর্নিং বাের্ড, এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, এই আইনের অধীন প্রবিধান প্রণয়নসহ কর্তৃপক্ষের যে কোনাে নীতি বা কৌশল অথবা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উত্থাপিত কোনাে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অথবা কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ প্রদান করিবে।।

(২) গভর্নিং বাের্ড পেনশন তহবিলের অর্থ সরকারি সিকিউরিটি, কম ঝুঁকিপূর্ণ অন্যান্য সিকিউরিটিস, লাভজনক অবকাঠামাে ইত্যাদি খাতে বিনিয়ােগের জন্য নির্ধারিত গাইডলাইন অনুমােদন এবং সময়ে সময়ে প্রয়ােজনীয় পরামর্শ বা দিকনির্দেশনা প্রদান করিবে।।

(৩) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

৯। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ তহবিল।- (১) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ তহবিল নামে কর্তৃপক্ষের একটি তহবিল থাকিবে এবং উহাতে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে, যথা:

(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান; 

(খ) এই আইনের অধীন আদায়যােগ্য ফি ও চার্জ; 

(গ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সেবা বাবদ প্রাপ্ত অর্থ; 

(ঘ) সরকারের পূর্ব-অনুমােদনক্রমে গৃহীত ঋণ; এবং

(ঙ) অন্য কোন উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ।

(২) তহবিলের অর্থ কর্তৃপক্ষের নামে কোন তফসিলি ব্যাংকে জমা রাখা হইবে এবং কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে এই তহবিল হইতে অর্থ উঠানাে যাইবে।

(৩) এই তহবিলের অর্থ হইতে কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান, সদস্য এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের বেতনভাতা, পারিশ্রমিক, সম্মানী ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা হইবে।

১০। কর্তৃপক্ষের কর্মচারী নিয়ােগ, ইত্যাদি।- (১) কর্তৃপক্ষ, সরকারের পূর্বনুমােদনক্রমে, উহার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়ােজনীয় সংখ্যক কর্মচারী নিয়ােগ করিতে পারিবে; 

(২) কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের নিয়ােগ পদ্ধতি ও চাকুরীর শর্তাবলী প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

১১। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা।- এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, সরকার অবিলম্বে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নিম্নবর্ণিত বৈশিষ্টসম্বলিত বা শর্তে বা পদ্ধতিতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করিবে, যথা: –

(ক) জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরিয়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় ১৮ বৎসর বা তদূর্ধ্ব। বয়স হইতে ৫০ বৎসর বয়সী সকল বাংলাদেশী নাগরিক অংশগ্রহণ করিতে পারিবে; 

(খ) বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী কর্মীগণ এ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হইতে পারিবে; 

(গ) অন্য আইনে যাহাই থাকুক না কেন, সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত সরকারি ও আধা-সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীগণ সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার বাহিরে থাকিবে; 

(ঘ) সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে বাধ্যতামূলক করিয়া প্রজ্ঞাপন না করা পর্যন্ত, প্রাথমিকভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি স্বেচ্ছাধীন থাকিবে; 

(ঙ) সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তির পর একজন চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বৎসর চাঁদা প্রদান সাপেক্ষে মাসিক পেনশন পাওয়ার যােগ্যতা অর্জন করিবে এবং চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জিভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন প্রদান করা হইবে; 

(চ) প্রতিটি চাঁদাদাতার জন্য একটি পৃথক ও স্বতন্ত্র পেনশন হিসাব থাকিবে, যাহা এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধি পরিচালিত হইবে; 

(ছ) চাকরিরত চাঁদাদাতাগণ চাকরি পরিবর্তন করিলেও পূর্ববর্তী হিসাব নতুন কর্মস্থলের বিপরীতে স্থানান্তরিত হইবে, নতুনভাবে হিসাব খােলার প্রয়ােজন হইবে না; 

(জ) কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মাসিক সর্বনিম্ন চাঁদার হার নির্ধারিত হইবে। মাসিক এবং ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা প্রদান করিতে পারিবে এবং অগ্রীম ও কিস্তিতে জমা প্রদানের সুযােগ থাকিবে; 

(ঝ) মাসিক চাঁদা প্রদানে বিলম্ব হইলে, বিলম্ব ফি সহ বকেয়া চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে পেনশন হিসাব সচল রাখা যাইবে এবং উক্ত বিলম্ব ফি চাঁদাদাতার নিজ হিসাবে জমা হইবে; 

(ঞ) পেনশনারগণ আজীবন অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত পেনশন সুবিধা ভােগ করিবেন; 

(ট) পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করিলে পেনশনারের নমিনি অবশিষ্ট সময় কালের (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্য হইবেন;

(ঠ) কমপক্ষে ১০ বৎসর চাঁদা প্রদান করিবার পূর্বে চাঁদাদাতা মৃত্যুবরণ করিলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তাঁহার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হইবে; 

(ড) পেনশন তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোন পর্যায়ে এককালীন উত্তোলনের সুযােগ থাকিবে না। তবে চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমাকৃত অর্থের সৰ্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাইবে যাহা ধার্যকৃত ফি সহ পরিশােধ করিতে হইবে। ফি সহ পরিশােধিত অর্থ চাঁদাদাতার নিজ হিসাবেই জমা হইবে; 

(ঢ) পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়ােগ হিসেবে গণ্য করিয়া কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হইবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকিবে; 

(ণ) সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি অথবা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্বশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করিতে পারিবে। এক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হইবে; এবং 

(ত) সরকার কর্তৃক সময় সময় প্রজ্ঞাপন জারী হওয়া সাপেক্ষে, নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকগণের অথবা দুস্থ চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে প্রদান করিতে পারিবে। 

(২) প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াবলী এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

১২। পেনশন সহায়তাকারী অফিসসমূহ।- এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, কর্তৃপক্ষ, সরকারের সহিত পরামর্শক্রমে, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা পরিচালনা, পেনশন তহবিল ব্যবস্থাপনা, চাঁদাদাতার চাঁদা জমাকরণ, পেনশনের অর্থ প্রদান, ইত্যাদি প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়ােজনীয় সংখ্যক সম্মুখ অফিস বা পেনশন সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি অথবা নিযুক্ত করিতে পারিবে।

১৩। সর্বজনীন পেনশন তহবিল।- (১) এই আইনের আওতায় পেনশন বাবদ জমাকৃত অর্থ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সর্বজনীন পেনশন তহবিল গঠিত হইবে। সর্বজনীন পেনশন তহবিলে চাঁদাদাতার চাঁদা জমা, জমার হিসাব সংরক্ষণ, পুঞ্জিভূত অর্থের সুষ্ঠু ও নিরাপদ বিনিয়ােগ এবং পেনশন প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করিবে। 

(২) তহবিলে অর্থের উৎস হইবে নিম্নরূপ:

(অ) পেনশন ব্যবস্থায় নিবন্ধিত চাঁদাদাতার চাঁদা; 

(আ) প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশগ্রহণমূলক চাঁদা; 

(ই) বিনিয়ােগকৃত অর্থের পুঞ্জিভূত মুনাফা; 

(ঈ) নিম্ন আয়ের বা দুস্থ চাঁদাদাতাগণের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান; এবং

(উ) অন্যান্য সূত্র থেকে আয়, ইত্যাদি। 

১৪। কেন্দ্রীয় রেকর্ড সংরক্ষণ।- এই আইনের আওতায় পেনশন কার্যক্রমে রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য বিধিদ্বারা নির্ধারিত কেন্দ্রীয় রেকর্ড কিপিং ব্যবস্থা থাকিবে।

১৫। পেনশনের সম্মুখ অফিস।- এই আইনের আওতায় চাঁদাদাতার সহিত সরাসরি সংযােগ স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠানই হইবে পেনশনের সম্মুখ অফিস। তফসিলি ব্যাংক এবং ডাক অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়সমূহ এবং বিধিদ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পেনশনের সম্মুখ অফিস হিসেবে কাজ করিবে।

১৬। পেনশন ফান্ড ব্যবস্থাপনা।- এই আইনের আওতায় চাঁদার মাধ্যমে সংগৃহীত পেনশন তহবিল বিভিন্ন পাের্টফোলিওতে বিনিয়ােগের বিষয়টি বিধিদ্বারা নির্ধারিত হইবে।

১৭। জাতীয় পেনশন তহবিলের ব্যাংকার।- এই আইনের আওতায় বিধিদ্বারা নির্ধারিত এক বা একাধিক তফসিলি ব্যাংক জাতীয় পেনশন তহবিলের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করিবে।

১৮। অ্যানুইটি সার্ভিস প্রদান।- চাঁদাদাতা পেনশন বয়সে উপনীত হইলে এই আইনের আওতায় বিধিদ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কর্তৃপক্ষ অ্যানুইটি সার্ভিস প্রদান করিবে।।

১৯। পেনশন বিতরণ পরিকাঠামোে- কর্তৃপক্ষ ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার প্রক্রিয়ায় মাসিক পেনশন পেনশনারের নিকট নির্দিষ্ট সময়ে পৌছানাে নিশ্চিত করিবে। এ লক্ষ্যে একটি কেন্দ্রীভূত ও স্বয়ংক্রিয় পেনশন বিতরণ পরিকাঠামাে গঠন করা হইবে।

২০। তহবিল ব্যবস্থাপনা কমিটি।- (১) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের একজন সদস্যকে সভাপতি এবং এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সদস্য করিয়া পেনশন তহবিল ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কমিটি থাকিবে।

(২) এই কমিটির কাঠামাে এবং কার্যপরিধি এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

২১। নােটিশ সরকারি গেজেটে প্রকাশ।- এই আইনের অধীনে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনাে নােটিশ প্রদানের প্রয়ােজন হইলে, কর্তৃপক্ষ উক্ত নােটিশ ডাক বা ইলেকট্রনিক মেইল বা অন্য কোন স্বীকৃত মাধ্যমে প্রেরণ করিতে পারিবে, তবে প্রতিটি নােটিশ সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিতে হইবে, এবং সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইলে উক্ত নােটিশ সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি প্রাপ্ত হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।

২২। সর্বজনীন পেনশনের ক্ষেত্রে প্রযােজ্য আইন।- কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সর্বজনীন পেনশনের অর্থ বা অ্যানুইটি বাবদ প্রদেয় অর্থ পরিশােধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিবর্গের অধিকার এই আইনের অধীনে নির্ধারিত হইবে এবং উক্তরূপ বিষয়ে বাংলাদেশের আইন বা আইনসমূহ প্রযােজ্য হইবে।

২৩। কর্তৃপক্ষের বার্ষিক প্রতিবেদন।- (১) কর্তৃপক্ষ, ইহার অর্থ বৎসর সমাপ্তির অনধিক তিন মাসের মধ্যে, সরকারের নিকট তৎকর্তৃক পূর্ববর্তী অর্থ বৎসরে সম্পাদিত কার্যাবলী সম্পর্কে একটি বার্ষিক প্রতিবেদন দাখিল করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত প্রতিবেদনে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথা: –

(ক) কর্তৃপক্ষের কর্মকান্ডের সার্বিক পর্যালােচনা; 

(খ) সর্বজনীন পেনশন তহবিলের স্থিতি, বিনিয়ােগ এবং প্রাসঙ্গিক তথ্যসমূহ; 

(গ) কর্তৃপক্ষের যে সকল লক্ষ্য অর্জিত হইয়াছে উহার বিবরণ; 

(ঘ) কর্তৃপক্ষের যে সকল লক্ষ্য অর্জিত হয় নাই কারণসহ উহার সংক্ষিপ্ত বিবরণ;

২৪। বার্ষিক বাজেট বিবরণী।- কর্তৃপক্ষ প্রতি অর্থ বৎসর শুরুর অন্ন ছয় মাস পূর্বে পরবর্তী অর্থ বৎসরের বার্ষিক বাজেট বিবরণী সরকারের নিকট পেশ করিবে এবং উহাতে উক্ত অর্থ বৎসরে কর্তৃপক্ষের পরিচালনা ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকারের নিকট হইতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়ােজন হইবে উহার উল্লেখ থাকিবে।

২৫। হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা।- (১) কর্তৃপক্ষ, নির্ধারিত পদ্ধতিতে উহার হিসাবরক্ষণ এবং হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করিবে।

(২) বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, প্রতি বৎসর কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষা করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রতিবেদনের প্রয়ােজনীয় সংখ্যক অনুলিপি সরকার ও কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত নিরীক্ষা প্রতিবেদনের উপর কোন আপত্তি উত্থাপিত হইলে উহা নিষ্পত্তির জন্য কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

(৪) কর্তৃপক্ষের হিসাব নিরীক্ষার উদ্দেশ্যে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের সকল রেকর্ড, দলিলাদি, বার্ষিক ব্যালেন্স সিট, নগদ বা ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, জামানত, ভান্ডার বা অন্যবিধ সম্পত্তি, ইত্যাদি পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পারিবেন এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান, সদস্য বা কর্তৃপক্ষের যে কোন কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পরিবেন।

২৬। সরকারের নিকট রিপাের্ট, ইত্যাদি দাখিল।- কর্তৃপক্ষ সরকার কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত ও প্রদত্ত কোনাে ফরমে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত রিপোের্ট, রিটার্ন, বিবরণী ও অন্যান্য তথ্যাবলী সরকারের চাহিদামতে ও সময়ে দাখিল করিবে।।

২৭। সরকারি কর্মচারী।- কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান বা সদস্য বা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ এই আইন বা বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান অনুযায়ী কার্য করিবার সময়, তাহার পক্ষে বা তাহার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ (১৮৬০ সালের XLV নম্বর আইন) এর ধারা ২১ এ সংজ্ঞায়িত অর্থে সরকারি কর্মচারী বলিয়া গণ্য হইবেন।

২৮। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা।- এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে।

২৯। প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা।- কর্তৃপক্ষ, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকারের পূর্বানুমােদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।

৩০। জটিলতা নিরসনে সরকারের ক্ষমতা।- কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে এই আইনের বিধানে অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া, সরকারী গেজেটে আদেশ দ্বারা উক্ত বিধানের স্পষ্টীকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদান করতঃ কর্তৃপক্ষের করণীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিতে পারিবে।

৩১। আইনের প্রাধান্য।- আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইন বা উহার অধীন প্রণীত বিধিতে এই আইনের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানবলি প্রাধান্য পাইবে।

৩২। ইংরেজীতে অনুদিত পাঠ প্রকাশ।- (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজীতে অনূদিত একটি পাঠ প্রকাশ করিবে, যাহা এই আইনের নির্ভরযােগ্য ইংরেজী পাঠ (Authentic English Text) হইবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রকাশিত ইংরেজীতে অনুদিত পাঠ এবং এই বাংলা আইনের মধ্যে বিরােধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।

 

National Pension Authority Act, 2022 : ডাউনলোড

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

5 thoughts on “জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ আইন ২০২৩ । জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে

  • যাদের বয়স ব`তমানে ৬০ এর উ`ধে, কি ভাবে পেনশন পাওয়া যোগ্য হবে। মাসিক কত টাকা দিতে পারি। আমরা যে ক’জন আছি, জানার আগ্রহ রইলো।
    ধন্যবাদ।

  • না। মাসিক কিস্তি নির্ধারণ করবে কমিটি বা বোর্ড

  • সর্বজনিন পেনশন চাাঁদা দাতার জমাকৃত অর্থ এককালীন উত্তোলনের সুযোগ থাকা প্রয়োজন। তা না হলে চাাঁদা প্রদানকারী আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। শর্তসাপেক্ষে মূল টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেয়া যেতে পারে।

  • মনে হয় না এমন সুবিধা কর্তৃপক্ষ দিবে। এটি মূল্য কিছুটা বীমার মত নিশ্চয়তা দিলেও বীমার মত এককালীন উত্তোলনের সুযোগ দেয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *