ছুটির নিয়ম ২০২৩ । বিভিন্ন প্রকারের ছুটির মেয়াদ, কত দিন নেয়া যায়?
সরকারি কর্মচারী চাকরিকালীন তাঁর ছুটি সংক্রান্ত বিধি বিধান সম্পর্কে ধারনা রাখা অত্যাবশ্যক। নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা ১৯৫৯ অনুসারে, বিভিন্ন প্রকারের ছুটির মেয়াদের পরিমাণ ও বিশেষ তারতম্যসমূহ উল্লেখ করা হলো।
১। অর্জিত ছুটি
ক) ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে এককালীন ৪ মাস গড় বেতনে ছুটি ভোগ করতে পারেন।
খ) ছুটির মেয়াদ ৪ মাসের অধিক হলে, ৪ মাসের অতিরিক্ত সময় অর্ধগড় বেতনে ছুটি ভোগ করতে পারেন।
গ) একই বিধির আওতায় স্বাস্থ্যগত কারণে / তীর্থ যাত্রার কারণে / শিক্ষার কারণে / শ্রান্তি বিনোদনের উদ্দেশ্যে গড় বেতনে ৬ মাস পর্যন্ত ছুটি বর্ধিত / মঞ্জুর করা যায়।
ঘ) ৬ মাসের অধিক ছুটি প্রয়োজন হলে, তা অর্ধ গড় বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যায়।
২। অসাধারণ ছুটি
ক) স্থায়ী কর্মচারী ব্যতিত অন্যান্য কর্মচারীদের ক্ষেত্রে অসাধারণ ছুটির মেয়াদ এককালীন ৩ মাসের অধিক হবে না।
খ) তবে দীর্ঘ কালীন অসুস্থ্যতার জন্য মেডিক্যাল সার্টিফিকেট এর ভিত্তিতে অস্থায়ী সরকারি কর্মচারীকে ৬ মাস পর্যন্ত অসাধারণ ছুটির মঞ্জুর করা যায়।
গ) যক্ষা রোগে আক্রান্ত একজন অস্থায়ী সরকারি কর্মচারীকে এককালীন সর্বোচ্চ ১২ মাস পর্যন্ত অসাধারণ ছুটি মঞ্জুর করা যায়। তবে বিধান থাকে যে, দাখিলকৃত সার্টিফিকেটে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের যক্ষা বিশেষজ্ঞ বা সিভিল সার্জনের ছুটির মেয়াদ উল্লেখ পূর্বক সুপারিশ থাকলে অসাধারণ ছুটি মঞ্জুর করা যায়।
ঘ) স্থায়ী কর্মচারী নিয়োজিত কর্মচারীদের ক্ষেত্রে অসাধারণ ছুটির মেয়াদ সর্বোচ্চ ১ বছর ও মেডিক্যাল সার্টিফিকেট এর ভিত্তিতে স্থায়ী সরকারি কর্মচারীকে ২ বছর পর্যন্ত অসাধারণ ছুটি মঞ্জুর করা যায়।
ছুটির প্রকারবেধ ও যে সকল কারণে ছুটি নেয়া যায়? । কোন ছুটি কত দিন নেয়া যায়?
৩। অক্ষমতাজনিত ছুটি
ক) মেডিক্যাল বোর্ডের সার্টিফিকেট এর ভিত্তিতে স্থায়ী সরকারি কর্মচারীকে ২৪ মাস/ ২ বছর পর্যন্ত অক্ষমতাজণিত ছুটি মঞ্জুর করা যায়।
খ) মেডিক্যাল বোর্ডের সার্টিফিকেট ব্যতিত এ প্রকারের ছুটির মেয়াদ বাড়ানো যাবে না।
৪। অধ্যয়ন ছুটি
ক) সাধারণভাবে এ ছুটির মেয়াদ ১২ মাস, তবে বিশেষ কারণে সর্বোচ্চ ২৪ মাস পর্যন্ত ছুটি দেয়া যাবে।
খ) কোর্সের কারণে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হলে আরও ৪ মাস অর্জিত ছুটি ও ৩২ মাসের অসাধারণ ছুটি অর্থাৎ (২৪+৪+৩২) = ৬০ মাসের অধ্যয়ন ছুটি মঞ্জুর করা যায়।
৫। সংগনিরোধ ছুটি
ক) মেডিক্যাল সার্টিফিকেট এর ভিত্তিতে অফিস প্রধান সরকারি কর্মচারীকে সর্বাধিক ২১ দিন পর্যন্ত ও বিশেষ অবস্থায় ৩০ দিন পর্যন্ত সংগনিরোধ ছুটি মঞ্জুর করা যায়্
৬। প্রসূতি ছুটি
ক) ছুটি আরম্ভের তারিখ অথবা সন্তান প্রসবের উদ্দেশ্যে আতুর ঘরে আবদ্ধ হওয়ার তারিখ, ইহার মধ্যে যাহা আগে ঘটবে, ঐ তারিখ হতে ৬ মাসের প্রসূতি ছুটি মঞ্জুর করা যায়।
খ) একজন মহিলা সমগ্র চাকরিকালীন সময়ে প্রসূতি ছুটি ২ বারের অধিক প্রাপ্য হবে না।
গ) মঞ্জুরীকৃত মাতৃত্ব ছুুটি সরকারি কর্মচারীর ছুটির হিসাব হতে বাদ দেয়া যাবে না। এ সময়ে পূর্ণ হারে ছুটিকালীন বেতন পাওয়ার যোগ্য।
৭। চিকিৎসালয় ছুটি
ক) অন্য কোন ছুটির সাথে সংযুক্ত ভাবে সর্বমোট ছুটির মেয়াদ ২৮ মাসের অধিক হবে না।
খ) কর্তৃপক্ষ মনে করলে গড় বেতনে / অর্ধ গড় বেতনে এই প্রকার ছুটি মঞ্জুর করা যায়।
৮। বিশেষ অসুস্থ্যতাজনিত ছুটি
ক) নৌযানে কর্মরত অফিসার, পেটি অফিসার আঘাত প্রাপ্তিতে/ অসুস্থ্যতার জন্য হাসপাতালে/ নৌযানে অভ্যন্তরে নৌ-কমান্ডার ৬ সপ্তাহ পূর্ণ বেতনে বিশেষ অসুস্থ্যতাজনিত ছুটি মঞ্জুর করা যায়।
খ) মেডিক্যাল অফিসার প্রত্যয়ন করলে পূর্ণ গড় বেতনে ৩ মাস এ প্রকার ছুটি মঞ্জুর করা যায়।
৯। অবকাশ বিভাগের ছুটি
ক) অবকাশ বিভাগের সরকারি কর্মচারি ৩০ দিন গড় বেতনে অবকাশ বিভাগের ছুটি প্রাপ্য হবেন।
অর্জিত ছুটি ছুটির হিসাব হতে বিয়োগ হয়, অসাধারণ ছুটি নিতে কোন ছুটি জমা থাকতে হয় না, অক্ষমতাজনিত বা অধ্যয়ন জনিত ছুটি নিতে ছুটি জমা থাকলে ছুটির হিসাব হতে বিয়োগ হয়, না থাকলে বিনা বেতনে বা অসাধারণ ছুটি মঞ্জুর করা হয় , সংগনিরোধ ছুটি ও প্রসূতি ছুটি কোন ছুটির হিসাব হতে বিয়োগ হয় না, অবকাশ ছুটি শুধুমাত্র শিক্ষা বিভাগের জন্য প্রযোজ্য।
বিভিন্ন প্রকার ছুটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে আপনি নৈমিত্তিক । অর্জিত । মাতৃত্বকালীন ছুটি ক্যাটাগরি ভিজিট করুন।
বিভিন্ন প্রকারের ছুটির মেয়াদের পরিমাণ ও বিশেষ তারতম্যসমূহ: ডাউনলোড
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষক বিদেশে বিদ্যালয়ের কাজে হলে ছুটির প্রক্রিয়া কিরুপ
জিও জারি করতে হবে। সরকারি কাজে বিদেশ ভ্রমনের আদেশ জারি করতে হবে। বিদেশ ভ্রমণকালে বৈদেশিক মুদ্রায় ভ্রমণ ভাতা পাবেন কিনা তাও উল্লেখ থাকবে।
যদি কর্মকর্তা নৈমিত্তিক বা ঐচ্ছিক কোন ছুটি না দিতে চান, তাহলে আমি কিভাবে এই ছুটি নিতে পারি? বা তাকে বাধ্য করতে পারি?
না। কোন সুযোগ নেই। কারণ সরকারি কাজে ব্যাঘাত কোন ভাবেই ঘটানো যাবে না। কাজ ঠিক ঠাক রেখে ছুটি কাটাতে হবে।